ভারতের প্রত্যাবর্তন, শ্রীলঙ্কার ভরাডুবি! যে দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখুন, দুর্দান্ত ম্যাচ। বোর্ডে মাত্র ১৩৭ রানের পুঁজি। নিয়মিত বোলাররা মরিয়া চেষ্টা করেন। সূর্যকুমার যাদব শেষ মুহূর্তে সিলেবাসের বাইরের প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন শ্রীলঙ্কাকে। আর তার কোনও জবাব নেই। অবিশ্বাস্য বললেও কম। কোনও ভাষাই কম। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম বার বোলিং করলেন। তাঁরাই ম্যাচ নিয়ে গেলেন সুপার ওভারে! ব্যাট হাতে হতাশ করেছিলেন রিঙ্কু সিং। সেই তিনিই কিনা ১৯তম ওভারে জোড়া উইকেট নিলেন। শেষ ওভারে ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার যাদব বোলিংয়ে! তিনিও নিলেন ২ উইকেট। শেষ বলে শ্রীলঙ্কার টার্গেট দাঁড়ায় ৩ রান। অথচ একটা সময় তাদের প্রয়োজন ছিল ৩০ বলে ৩০ রান। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।
১৬তম ওভারে প্রথমে সিরাজের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল সূর্যকুমার যাদবের। বিষ্ণোইকে আক্রমণে আনেন। দ্বিতীয় ডেলিভারিতে কুশল মেন্ডিসের বিরুদ্ধে লেগ বিফোরের আবেদন। কার্যত চিৎকার করতে থাকেন বিষ্ণোই। অন ফিল্ড আম্পায়ার শেষ অবধি আউটও দেন। রিভিউ নেন কুশল মেন্ডিস। তাতে অবশ্য লাভ হয়নি। অবশেষে কুশল জুটি ভাঙেন রবি বিষ্ণোই। মনে হচ্ছিল, এখান থেকে ম্যাচ ঘুরতে পারে। কারণ, প্রথম দু-ম্যাচেও দেখা গিয়েছে শ্রীলঙ্কা ব্যাটিংয়ে ধস নামতে শুরু করলে, সেটা নেতিবাচক দিকেই যায়।
ক্যাপ্টেন চরিত আসালঙ্কা নিজে না নেমে ওয়ানিন্দু হাসারঙ্গাকে নামান। যা নিয়ে প্রবল সমালোচনা হয়। ম্যাচ যখন নিয়ন্ত্রণে, ক্য়াপ্টেন কেন দায়িত্ব নেবেন না! ক্রিজে কুশল পেরেরা থাকায় রানের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে পারছিল না ভারত। শেষ চার ওভারে শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৩। ওয়াশিংটনকে ১৭তম ওভারে আনেন সূর্য। সুন্দরের তৃতীয় ডেলিভারিতে হাসারঙ্গাকে দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরান রবি বিষ্ণোই। পরের বলেই গোল্ডেন ডাক ক্যাপ্টেন। জোড়া ক্যাচ ফসকানো সঞ্জু স্যামসনই দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরান। হ্যাটট্রিকের সামনে ওয়াশিংটন সুন্দর। ভারতীয় শিবিরে আশা, আরও একটা বিপর্যয়ের।
শেষ তিন ওভারে ২১ রান প্রয়োজন ছিল শ্রীলঙ্কার। খলিলের ২ এবং সিরাজের ১ ওভার বাকি। ১৮তম ওভারে খলিলকে আক্রমণে আনেন সূর্য। পাঁচটি ওয়াইড বলে শ্রীলঙ্কার চাপ কমান খলিল! পঞ্চম ওয়াইডের পরই খলিলের কাছে দৌড়ে আসেন সিনিয়র পার্টনার মহম্মদ সিরাজ। তাঁকে পরামর্শ দেন। শেষ ২ ওভারে শ্রীলঙ্কার টার্গেট দাঁড়ায় মাত্র ৯ রান। ১৯ তম ওভারে রিঙ্কু সিংকে বোলিংয়ে আনেন সূর্যকুমার যাদব!
দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ান ডে আন্তর্জাতিকে বোলিং করিয়েছিলেন সূর্য। উইকেট নিয়েছিলেন রিঙ্কু। ১৯তম ওভারে দ্বিতীয় বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে কুশল পেরেরাকে ফেরান রিঙ্কু সিং! সেট ব্যাটার কুশল পেরেরার উইকেট। গম্ভীর মুখে চওড়া হাসি। পঞ্চম বলে ফের উইকেট। বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ নেন শুভমন গিল। ওভারে ৩ রান দিয়ে ২ উইকেট! অবিশ্বাস্য রিঙ্কু সিং। শেষ ওভারে ৬ রান প্রয়োজন ছিল শ্রীলঙ্কার। বোলিংয়ে আসেন ক্যাপ্টেন স্কাই নিজেই। প্রথম বার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বোলিংয়ে স্কাই। দ্বিতীয় বলেই উইকেট। রিভার্স সুইপ মেরেছিলেন কামিন্দু মেন্ডিস। সোজা রিঙ্কু সিংয়ের হাতে। পরের বলেই কট বিহাইন্ডের আবেদন। অন ফিল্ড আম্পায়ার আউট না দেওয়ায় রিভিউ নেয় ভারত। পরপর উইকেট স্কাইয়ের। পাঁচ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন স্কাই।