একজন তরুণ ক্রিকেটারের সম্পর্কে এমন বলা হয়তো খুবই কষ্টকর। কিন্তু প্রশ্নটা উঠে আসছেই। শুভমন গিলকে ভবিষ্যতের তারকা চিহ্নিত করা হয়েছে বারবার। বিরাট যেমন কিং কোহলি, তেমনই শুভমন হয়ে উঠেছেন প্রিন্স অফ ক্রিকেট। কিন্তু রাজকুমার দেশের মাটিতে বিধ্বংসী ব্যাটিং কিংবা বড় রানের ইনিংস খেললেও এশিয়ার বাইরে বাড়তি চাপে ভুগছেন (সম্ভবত)। হতে পারে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে নতুন ব্যাটিং পজিশন মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে! কারণ যাই হোক, পরিসংখ্যান চিন্তার। তেমনই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে কামব্যাকে নজর কাড়লেও ওয়েস্ট ইন্ডিজে টানা দু-ইনিংসের অজিঙ্ক রাহানের ভরসা দিতে না পারা ভাবাতে বাধ্য টিম ম্যানেজমেন্টকে। এমন মনে করার কারণ! বিস্তারিত রইল TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
এ বছর অনবদ্য ছন্দে রয়েছেন শুভমন গিল। টেস্ট, ওডিআই, টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি। জাতীয় দলের পাশাপাশি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও স্বপ্নের ফর্মে ছিলেন। আইপিএলের আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সেঞ্চুরি। আইপিএলে একাই তিনটি সেঞ্চুরি মেরেছেন শুভমন। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে তাঁর ওপর বাড়তি প্রত্যাশা ছিল। যে ফর্ম নিয়ে ওভালে পা রেখেছিলেন, সেই পা যেন ঠিকঠাক নড়লই না! ওভালের প্রথম ইনিংসে জাজমেন্ট দিয়ে বোল্ড হন। দ্বিতীয় ইনিংসেও ভরসা দিতে পারেননি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম ম্যাচে হতাশ করেছিলেন। পোর্ট অব স্পেনে প্রথম ইনিংসে দারুণ শুরু করেও অফস্টাম্পের ফাঁদে পা দিলেন। অনেকটা বাইরের বল, লাইনে না পৌঁছেই ড্রাইভ। কট বিহাইন্ড শুভমন। সিরিজ শুরুর আগের দিন অধিনায়ক রোহিত শর্মা জানিয়ে দেন, ওপেন করবেন যশস্বী। কোচকে নিজেই তিন নম্বরে খেলানোর অনুরোধ করেছিলেন শুভমন। দলে ব্যালান্সের কথা ভেবে এই ভাবনা একেবারে যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে। শুভমন নিজেও রাহুল দ্রাবিড়কে জানিয়েছিলেন, প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে কেরিয়ারের বেশির ভাগ সময় ৩-৪ ব্যাট করায়, তিন নম্বরে বেশি স্বচ্ছন্দ হবেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজে এখনও অবধি দু-ইনিংসে ব্যর্থতার কারণ হতে পারে নতুন ব্যাটিং পজিশন! কিন্তু এশিয়া বাইরে তাঁর পরিসংখ্যান অন্য কথাও বলছে।
একটা সময় ভারতীয় ক্রিকেট দলের জন্য পরিচিত কথা ছিল- ঘরে বাঘ, বিদেশে বিড়াল। সেই বিদ্রুপ বহু আগেই বিলুপ্ত হয়েছে। এশিয়ার বাইরে গত আট ইনিংসে (পোর্ট অব স্পেনের প্রথম ইনিংস সহ) শুভমনের স্কোর যথাক্রমে ৬, ১৮, ১৩, ৪, ১৭, ৮, ২৮ এবং ১০। তাঁর ক্ষেত্রেও এমন কিছু হবে না তো!
এ বার আসা যাক অজিঙ্ক রাহানে প্রসঙ্গে। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন রাহানে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে প্রত্যাবর্তন ম্যাচে অনবদ্য পারফর্ম করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তাঁকে ফের সহ অধিনায়ক করা হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথম দু-ইনিংসে ভরসা দিতে পারলেন না। ভারতের পরবর্তী টেস্ট সিরিজের বিশ্বকাপের পর। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাবে ভারত। সেই সিরিজে অন্যতম ভরসা মনে করা হচ্ছে রাহানেকে। কিন্তু ধারাবাহিকতা দেখাতে না পারলে, সেই ভরসা কি দীর্ঘস্থায়ী হওয়া সম্ভব?