ভারত ২২৫-৭ (২০ ওভার)
আয়ারল্যান্ড ২২১-৫ (২০ ওভার)
ডাবলিন : ভারতের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক টি ২০-তে শতরান দীপক হুডার (Deepak Hooda)। সঞ্জু স্যামসনের অনবদ্য প্রত্যাবর্তন। এই জুটির সৌজন্যে মাউন্ট এভারেস্টের মতো রান তাড়ায় নামতে হয়েছিল আইরিশ ব্যাটারদের। অনবদ্য পারফরম্যান্স তাদের। বোলারদের দুঃস্বপ্নের দিন। প্রথমে ব্যাট করে ভারত বোর্ডে তোলে ২২৫! আন্তর্জাতিক টি ২০ তে চতুর্থ সর্বাধিক স্কোর। রান তাড়ায় ভারতকে চাপে ফেলেন আইরিশরা। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক খেলতে নামা উমরান ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে। ডট বল দিয়ে শুরু। এরপরই নো বল। ফ্রি হিটে বাউন্ডারি। অঙ্ক দাঁড়ায় ৪ বলে ১২! পরের বলেও বাউন্ডারি। শেষ বলে ৬ মারলে জয়। নায়ক হয়েই মাঠ ছাড়লেন উমরান মালিক (Umran Malik)। মাত্র ৪ রানে জয় ভারতের। সিরিজ জয় ২-০ ব্যবধানে।
প্রথমে ব্যাট করে ভারত। মাত্র ৫৫ বলে শতরান দীপক হুডার। এর আগে রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল এবং সুরেশ রায়না দেশের জার্সিতে টি ২০ শতরান করেছেন। রোহিতের চারটি আন্তর্জাতিক টি ২০ শতরান রয়েছে। প্রথম ম্যাচে দীপক ছিলেন ‘অ্যাক্সিডেন্টাল ওপেনার।‘ ঋতুরাজের চোটের কারণে ইনিংস শুরু করেছিলেন। এদিন ঈশানের সঙ্গে সঞ্জু স্যামসনকে পাঠানো হয়। তিনে ব্যাট করে সুযোগ কাজে লাগালেন দীপক। ঈশান দ্রুত আউট হলেও সঞ্জুর সঙ্গে ৮৭ বলে ১৭৬ রান যোগ করেন। টি ২০ তে এটিই ভারতের সর্বাধিক রানের জুটি।
১৬ ওভারে ১৮৩! কে বোলিং করতে চাইবেন এমন পরিস্থিতিতে! অভিজ্ঞ পেসার মার্ক অ্যাডায়ার প্রথম ২ ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ১৬ রান। ১৭ তম ওভারে রাউন্ড দ্য উইকেট। প্রথম ডেলিভারি লেগ সাইডে ফুলটস। থার্ডম্যান বাউন্ডারিতে ছয় মারেন সঞ্জু। দ্বিতীয় বলেই স্লো ইয়র্কারে সঞ্জুকে বোল্ড করেন মার্ক। ৪২ বলে ৭৭ সঞ্জুর। ভারতকে বড় রান তুলতে সহযোগিতা করল আয়ারল্যান্ডের স্নায়ুর চাপও। সহজ ক্যাচ, ফিল্ডিং মিস হল। ১৮ তম ওভারের শেষ বলে ফিরলেন দীপক। মাত্র ৫৭ বলে ১০৪ রান। প্রায় ১৮৩ স্ট্রাইক রেট। মূল্যবান ইনিংস। একসময় মনে হয়েছিল ২৫০-র গণ্ডি পেরোবে ভারত। স্লগ ওভারে একের পর এক উইকেট হারাল ভারত। ১৮৯-১ (১৬.১ ওভার) থেকে ২০ ওভারে ২২৫-৭।
ভুবনেশ্বরের প্রথম ওভারে ১৮ রান তুললেন পল স্টার্লিং। বলবির্নির ব্যাটে বলে হতে কিছুটা সময় লাগল। মাত্র ২৪ বলে ৫০ রানের জুটি। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে ৭৭ রানের জুটি ভাঙলেন লেগস্পিনার রবি বিষ্ণোই। মাত্র ১৮ বলে ৪০ রানে ফেরেন পল স্টার্লিং। পাওয়ার প্লে-তে ৭৩-১। ভালো জায়গাতেই ছিল আয়ারল্যান্ড। এরপরই উমরান মালিক আক্রমণে। গ্যালারি থেকে বাড়তি চিৎকার ভেসে এল। এই ওভারেই সরাসরি থ্রো-তে গ্যারেথ ডেলানিকে রান আউট করেন হার্দিক। ক্রিজে প্রবেশ গত ম্যাচের নায়ক হ্যারি টেক্টরের। বলবির্নিকে করা ঈশান কিষানের স্টাম্পিং ব্যর্থ হয় রবি বিষ্ণোইয়ের নো বলে। উমরান মালিকের দ্রুতগতিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক। ৩৪ বলে অর্ধশতরান করেন অধিনায়ক অ্যান্ডি বলবির্নি। অবশেষে হর্ষলের ওভারে ৩৭ বলে ৬০ রানে ফেরেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক।
চতুর্দশ ওভারে বড় মুহূর্ত উমরান মালিকের। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে প্রথম উইকেট নিলেন। স্পেলের তৃতীয় ওভারে ফেরান লোরকান টাকারকে। লঙ অনে অনবদ্য ক্যাচ নেন পরিবর্ত ফিল্ডার যুজবেন্দ্র চাহাল। প্রথম স্পেলে ২ ওবারে ২৯ রান দিয়েছিলেন ভুবি। ১৬ তম ওভারে নতুন স্পেল। আয়ারল্যান্ড ১৫ ওভারে ১৬৪-৪। শেষ ৪ ওভারে ৫২ রান প্রয়োজন ছিল আয়ারল্যান্ডের। ক্রিজে তখনও হ্যারি টেক্টর। ভুবিই ফেরালেন হ্যারিকে। ৪ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে ১ উইকেট ভুবির। ৪ ওভারে ৫৪ রান দিয়ে ১ উইকেট হর্ষলের। লক্ষ্যের কাছে পৌঁছেও পারল না আয়ারল্যান্ড। অঘটন বাঁচাল ভারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : ভারত ২২৫-৭ (দীপক হুডা ১০৪, সঞ্জু স্যামসন ৭৭, মার্ক অ্যাডায়ার ৩-৪৪, ক্রেগ ইয়ং ২-৩৫)। আয়ারল্যান্ড ২২১-৫ (অ্যান্ডি বলবির্নি ৬০, পল স্টার্লিং ৪০, রবি বিষ্ণোই ১-৪১, উমরান মালিক ১-৪২)।