IPL 2024 Auction: দু’হাতে করতে পারেন বল, IPL নিলামে চমক হবেন বাংলার কৌশিক!

Dec 17, 2023 | 7:29 PM

IPL 2024 Auction Bengal Player Kaushik Maity: জীবন হোক বা কেরিয়ার, শর্টকাট পছন্দ নয় কৌশিক মাইতির। ক্রিকেটে আসাটা অবশ্য শখে। এখন সেটাই হয়ে গিয়েছে প্যাশন। কৌশিকের দাদা ক্রিকেট খেলতেন। বাড়ির কাছাকাছি দাদার প্র্যাক্টিস দেখতে যেত ছোট্ট কৌশিকও। মা-বাবাকে একদিন বলেই ফেলে, 'দাদা ক্রিকেট প্র্যাক্টিস করছে, আমিও করব।' সেই শুরু। হঠাৎই কৌশিক নজরে পড়েন বাংলার রঞ্জি জয়ী একমাত্র অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

IPL 2024 Auction: দুহাতে করতে পারেন বল, IPL নিলামে চমক হবেন বাংলার কৌশিক!
Image Credit source: TV9 Bangla Graphics

Follow Us

কলকাতা: অলরাউন্ডার কাকে বলে? ব্যাটের পাশাপাশি যিনি অবদান রাখেন বলেও। স্রেফ বোলিং করেন যিনি, তাঁকে যদি অলরাউন্ডার বলি? হাসবেন না পাঠক, হয়তো আপনার পাশের বাড়ির ছেলেই এমন বিরল প্রতিভার অধিকারী। তাতেও বিস্ময় কাটছে না? তা হলে খুলেই বলি। হাওড়ার কৌশিক মাইতি এখন বাংলার ক্রিকেটের সব্যসাচী! কোচ-ক্যাপ্টেন চাইলে কৌশিককে দিয়ে বাঁ হাতে বল করাতে পারেন। যদি প্রয়োজন পড়ে, ডান হাতেও বল করেন কৌশিক। ডান হাত হোক আর বাঁ হাত, কৌশিকের স্পিনে কিন্তু মোচড় আছে। বাংলার সিনিয়র টিমে না হলে জায়গা পাবেন কেন? এই কৌশিকই মঙ্গলবারের আইপিএল নিলামে চমক হতে চলেছেন। কুড়ি-বিশের সেরা লিগে স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য। এক ফ্রেমে যদি দুই স্পিনার পাওয়া যায়, তাঁর জন্য দড়ি টানাটানি হবে না, তা হয় নাকি! বিস্তারিত রইল TV9Bangla Sports– এর এই প্রতিবেদনে।

জীবন হোক বা কেরিয়ার, শর্টকাট পছন্দ নয় কৌশিক মাইতির। ক্রিকেটে আসাটা অবশ্য শখে। এখন সেটাই হয়ে গিয়েছে প্যাশন। কৌশিকের দাদা ক্রিকেট খেলতেন। বাড়ির কাছাকাছি দাদার প্র্যাক্টিস দেখতে যেত ছোট্ট কৌশিকও। মা-বাবাকে একদিন বলেই ফেলে, ‘দাদা ক্রিকেট প্র্যাক্টিস করছে, আমিও করব।’ সেই শুরু। হঠাৎই কৌশিক নজরে পড়েন বাংলার রঞ্জি জয়ী একমাত্র অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁকে ঘষে মেজে গড়ে তোলার দায়িত্ব নেন। কৌশিক অনূর্ধ্ব ১৪ স্তরে ক্যাপ্টেন্সিও সামলেছে। ধীরে ধীরে সুযোগ আসে বাংলা অনূর্ধ্ব ১৬, অনূর্ধ্ব ১৯ ও অনূর্ধ্ব ২৩ দলে।

অনূর্ধ্ব ১৯ দলে পেয়েছেন বাংলার কিংবদন্তি কোচ প্রণব নন্দীকে। ময়দানে যিনি বটবৃক্ষ। ময়দানের প্রিয় টুলটুল দা, জুনিয়রদের কাছে টুলটুল স্যার। আর বাংলা সিনিয়র দলে কোচ হিসেবে পেয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে। কেরিয়ারের মোড়ও ঘুরে যায়। শর্টকাট নয়, প্রত্যেকটা ধাপ পেরিয়ে বাংলা সিনিয়র দলে জায়গা করে নেওয়া। যদিও জাতীয় দলে সুযোগ হয়নি কোনওদিন। বয়সভিত্তিক দলের কোনও টুর্নামেন্টের আগে ভালো পারফর্ম করলেও ততদিনে তাঁর বয়স পেরিয়ে গিয়েছে। তাতে অবশ্য আক্ষেপ নেই কৌশিকের। টিভি নাইন বাংলাকে সরাসরি বললেন, ‘জাতীয় দলে জুনিয়র স্তরে জায়গা পাইনি তো কী হয়েছে, ভালো পারফর্ম করলে কোনওদিন সিনিয়র দলে সুযোগ পেতেই পারি।’

কৌশিক মাইতি মূলত বাঁ হাতি স্পিনার। ব্যাটের হাতও ভালো। মিডল অর্ডারে ব্যাট করেন। ফলে সেই সুযোগটা খুব কমই আসে। কৌশিকের পছন্দ বোলিং। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বোলিং করতে তার কোনও ক্লান্তি নেই। বাঁ হাতি স্পিনার থেকে হঠাৎ সব্যসাচী হয়ে ওঠা কী ভাবে? কৌশিক বলছেন, ‘আমি প্রথম যেখানে ক্রিকেট শিখি, দেবাংশু (মুখোপাধ্যায়) স্যারই বলেন-তোর তো দু-হাতই চলে, ডান হাতেও ট্রাই করতে পারিস। সম্বরণ স্যারও প্রেরণা দিয়েছিলেন-এটা কর, বেটার হতে পারে। সেই থেকেই দু-হাতে বোলিং। ডান হাতে অফস্পিন করি। তবে অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলায় খেলার সময় টুলটুল স্যার পরামর্শ দিয়েছিলেন এক দিকেই ফোকাস করতে। নিজেও আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না কেমন করব। ক্লাব ক্রিকেটে করার পর সাহস এল।’

তাহলে কি সব্যাসাচী থেকে শুধুই বাঁ হাতি স্পিনার? একেবারেই না। কৌশিকই জানালেন সে কথা। ‘বাংলা সিনিয়র দলে লক্ষ্মী দাও (বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লা) বলেন দু-হাতে বোলিং করার কথা। সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি ট্রফিতে তিনটে ম্যাচ খেলেছিলাম। সেখান প্রয়োজন অনুযায়ী দু-হাতেই বোলিং করেছি। বিজয় হাজারেতেও দু-হাতে বল করেছি। প্রথম উইকেট নেহাল ওয়াধেরা’, কৌশিক এটুকু বলার পর থামাতে হল। নেহাল গত আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অন্যতম সেরা পারফর্মার ছিল। বিজয় হাজারে ট্রফিতে ১ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে নেহাল সহ তিন উইকেট নেন সব্যসাচী কৌশিক। বাঁ হাতি ব্যাটার নেহালের উইকেট নিয়েছিলেন ডান হাতে অফস্পিন করেই। বাকি দুটি উইকেট বাঁ হাতি স্পিনে। মুস্তাক আলিতে তিন ম্যাচে ইকোনমিকাল বোলিং করলেও মাত্র একটিই উইকেট নিয়েছিলেন কৌশিক।

আইপিএলে হঠাৎ রেজিস্ট্রেশন কেন? কৌশিক হেসে বলেন, ‘প্রত্যেক বারই একটা ফর্ম আসতো। ফিলাপ করতাম। গত বারও করেছিলাম। অনূর্ধ্ব ২৫ দলের হয়ে খেলছিলাম। তবে সিনিয়র দলে যতটা নজরে আসা যায়, সেটা আসেনি। ভাবিনি এ বার নিলামের তালিকায় নাম থাকবে।’ কোনও দল কি যোগাযোগ করেছে? দিল্লি ক্যাপিটালস ও রাজস্থান রয়্যালস ট্রায়ালে ডেকেছিল। দিল্লি ক্যাম্পে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রিকি পন্টিংয়ের মতো কিংবদন্তিরা কৌশিকের বোলিং দেখেছেন। রাজস্থান রয়্যালসে শেন বন্ড ছিলেন।

নিলামে নাম রয়েছে মানেই টিম পাবেন, নিশ্চিত নন। তার জন্যও মানসিক ভাবে প্রস্তুত। বলছেন, ‘কারও পছন্দ না হলে আনসোল্ডও থাকতে পারি। আমার খেলা দেখে যদি কারও পছন্দ হয়ে থাকে, সুযোগ পাব।’ ব্যাটিং করতে গেলে বাউন্সার তো সামলাতেই হবে। তেমনই একটা বাউন্সার দেওয়া হয়েছিল। আচ্ছা, আপনাকে যদি টিম বেছে নিতে বলা হয়, কোন টিমে খেলতে পছন্দ করবেন? কৌশিক বিন্দুমাত্র সময় নিলেন না ভাবতে। হেসে বলছেন, ‘অবশ্যই চেন্নাই। এখন দেখা যাক কী হয়। যে টিমই নিক, পারফর্ম করাটা আমার কাজ। ভালো পারফর্ম করলে এগতে পারব।’

Next Article