বেঙ্গালুরু: অভিজ্ঞতার বাড়তি দাম এখানেই। বিপর্যয়ের পর বাংলাকে (Bengal) কিছুটা লড়াইয়ে রাখলেন মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwary)। সঙ্গ দিলেন শাহবাজ আহমেদ (Shahbaz Ahmed)। প্রথম দিনের মতোই ভুলে ভরা আরেকটা দিন। রঞ্জি ট্রফি (Ranji Trophy) কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা বাংলার সঙ্গে কিছুতেই মেলানো যাচ্ছে না। প্রথম দিনের শেষে ২৭১-৬ ছিল মধ্যপ্রদেশ। তাদের প্রথম ইনিংস শেষ হল ৩৪১ এ। রাতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার নির্ধারিত সময়ে দিনের খেলা শুরু হয়নি। পেসাররা ভালো বোলিং করলেও বাংলাকে সমস্যায় ফেলেন হিমাংশু মন্ত্রী। শেষ অবধি অষ্টম উইকেট হিসেবে দলীয় ৩৩৩ রানে ফেরেন তিনি। এরপর আর দীর্ঘ হয়নি মধ্যপ্রদেশ ইনিংস। কিন্ত বাংলার শুরু আরও হতাশার। বাঁ হাতি স্পিনার কুমার কার্তিকেয় বোলিং ওপেন করেন। তৃতীয় বলেই অভিষেক রামনের উইকেট পড়ে। টার্ন বুঝতে পারেননি রামন। প্লেড অন হন। ওভারের শেষ বলে আউট তিনে নামা সু্দীপ ঘরামিও। ব্যাক ফুট, ফ্রন্ট ফুট কোথায় খেলবেন বুঝে ওঠার আগেই বোল্ড সুদীপ।
খাতা খোলার আগেই জোড়া ধাক্কা। সেখানেই ইতি হয়নি। অফস্পিনার সারাংশ জৈনের বলে স্লিপে ক্যাচ। দলের আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের উইকেট হারিয়ে চাপ বাড়ে বাংলার। তা থেকে কিছুতেই বেরোনো যাচ্ছিল না। ৪৩ বল খেলে অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণকে সেট মনে হচ্ছিল। উল্টো দিকে মনোজ তিওয়ারি। অভিজ্ঞ জুটির হাত ধরে প্রাথমিক ধাক্কা কাটানোর সম্ভাবনা ছিল। পেসার পুনীত দাতের অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে কট বিহান্ড অভিমন্যু। ২২ রানে ফেরেন বাংলা অধিনায়ক। মধ্যপ্রদেশ ভালো বোলিং করেছে। পাশাপাশি এটাও বলতে হয়, বাংলার ব্যাটাররা শট বাছাইয়ে সিদ্ধান্তহীনতার ফলেই ভুগেছে। মনোজের সঙ্গ দেওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল। তরুণ উইকেট রক্ষক ব্যাটার অভিষেক পোড়েল দুটি বাউন্ডারি মারেন। কাউন্টার অ্যাটাক দীর্ঘস্থায়ী হল না। আরও একটা বাউন্ডারির চেষ্টায় স্কোয়ার লেগে ক্যাচ। ৫৪ রানে ৫ উইকেট।
বাংলাকে বিপদ থেকে রক্ষা করলেন মনোজ তিওয়ারি। সঙ্গে পেলেন শাহবাজ আহমেদকে। রক্ষণ, আক্রমণের সংমিশ্রণে অনবদ্য জুটি। শাহবাজের ব্যাকফুট পাঞ্চ, সুইপ। মনোজের রিভার্স সুইপে বাউন্ডারি। একটা সময় সবই ছিল বিলাসিতা। এই জুটি কিছুটা সময় ক্রিজে জমতেই ইনিংস দীর্ঘ এবং শক্তিশালী হল। দুজনের ব্যাটেই অর্ধশতরান। অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেন মনোজ-শাহবাজ। দিনের শেষে বাংলার স্কোর ১৯৭-৫। এই জুটি ১৪৩ রান যোগ করে। বাংলা এখনও পিছিয়ে ১৪৪ রানে। তাতে অবশ্য আশা হারাচ্ছে না বাংলা শিবির। মনোজ ৮৪ রানে ক্রিজে রয়েছেন। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শতরান থেকে ১৬ রান দূরে। শাহবাজ খেলছেন ৭২ রানে।
বাংলার প্রধান কোচ অরুণ লাল বলছেন, ‘দুজনই দুর্দান্ত ক্রিকেটার। মনোজ কিংবদন্তি। বাংলার হয়ে ওর চেয়ে বেশি রান কেউ করেনি। এদিনও রানের খিদে একই দেখা গেল। চাপের পরিস্থিতি কীভাবে সামলাতে হয়, সেটাই করে দেখাল।‘