মেলবোর্ন: পেশোয়ারের মাজুল্লা খান ক্রিকেট অ্যাকাডেমি। একদল মাঝবয়সী লোক অধীর আগ্রহে চোখ রেখেছেন টেলিভিশনের পর্দায়। ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্ততি নিচ্ছেন এক তরুণ ক্রিকেটার। টিভির পর্দায় যাঁরা চোখ রেখেছেন, তাঁদের একজন পারভেজ খান। আর যে তরুণ ক্রিজে ব্যাট হাতে প্রস্তুত, তিনি মহম্মদ হ্যারিস (Mohammad Haris)। পাকিস্তান (Pakistan) দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দিয়েছিলেন একজন রিজার্ভ প্লেয়ার হিসেবে। বিশ্বকাপের (T20 World Cup 2022) শেষ পর্বে তিনিই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠবেন, কেই বা জানতো! মহম্মদ হ্যারিসের ছেলেবেলার কোচ পারভেজ খান। ছাত্রকে তাঁর চেয়ে ভাল কেই বা চিনবে! টিভিতে খেলা দেখার সময়, প্রতিটি বলের আগেই বাকিদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, কী হতে চলেছে। মহম্মদ হ্য়ারিসকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন TV9Bangla-র।
মহম্মদ হারিসের শৈশবের কোচ বর্ণনা করেছিলেন যে কীভাবে তাঁর ছাত্রকে সবচেয়ে বড় মঞ্চে বিশ্বের দ্রুততম বোলারদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেখেছিলেন। প্রথম শটের পর পারভেজ খান বন্ধুদের বলেছিলেন, “ওকে ভালো ফর্মে দেখাচ্ছে। পায়ের মুভমেন্টও ভালো।” হঠাৎই একজন জিজ্ঞেস করেন, “ছক্কা কাব আয়েগা, স্যার?” পারভেজ খান কিছু উত্তর দেওয়ার আগেই ওয়েন পার্নেলের ডেলিভারি হ্যারিসের হেলমেটে লাগে। বাধ্যতামূলক কনকাশন পরীক্ষা হয়। নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে অধিনায়ক বাবর আজমের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি। ভাষ্যকাররাও ভয় পাচ্ছিলেন, বড় চোট লাগেনি তো! আগের দিন পর্যন্ত ছিলেন রিজার্ভ প্লেয়ার। তাঁর হেলমেটে বল লাগা আতঙ্ক বাড়ানোই স্বাভাবিক। টিভিতে চোখ রেখে পারভেজ দৃঢ়ভাবে বলেন: “এখন ছক্কা মারবে)।”
কাগিসো রাবাডার পরের ডেলিভারিতেই ছয়। মহম্মদ হ্যারিসের মধ্যে অনেকে পাকিস্তানের অন্যতম সেরা ব্যাটার মহম্মদ ইউসুফের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন। স্ট্রোক প্লে-তে সাবলীল। জাতীয় দল অবধি পথ খুব মসৃণ ছিল না হ্যারিসের। তাঁকে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে পাঠাতে একপ্রকার নারাজ ছিলেন। ভরসা রেখেছিলেন বাবা। হ্যারিস মাকে কথা দিয়েছিলেন যে, সে কোন কিছুর সঙ্গে আপোষ করবেন না। জাতীয় দলে যোগদানের পর তাঁর আরও নতুন নামকরণ হয়। ‘মিস্টার গুগল’। সতীর্থদের দাবি, হ্যারিসের সব প্রশ্নের উত্তর রেডি থাকে! সব সমস্যার সমাধানও প্রস্তুত। সেই কারণেই হ্যারিস ‘মিস্টার গুগল’। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর উপরও অনেক প্রত্যাশার চাপ থাকবে পাকিস্তান সমর্থকদের।