নয়াদিল্লি : ২২ গজে তো বটেই, মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni) ব্যবসায়িক জগতেও যথার্থই চ্যাম্পিয়ন। ক্রিকেট থেকে আয়ের পাশাপাশি ধোনি একাধিক ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে ধোনির মোট সম্পত্তির পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকারও বেশি। ২০২৩ সালের আইপিএলের (IPL 2023) আগে ধোনিকে রিটেইন করে রেখেছিল চেন্নাই সুপার কিংস (CSK)। এ বারের আইপিএল থেকে ব্যক্তিগতভাবে ধোনি পেয়েছেন ১২ কোটি টাকা। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ফলে ২০ কোটি টাকা পেয়েছে সিএসকে। দলগত আর্থিক পুরস্কার থেকেও একটা অংশ মাহির ঝুলিতে গিয়েছে। ক্রিকেটের জন্য ধোনি অর্থ উপার্জন করেন তা ঠিক। তার পাশাপাশি একাধিক ছোট-বড় স্টার্ট আপ কোম্পানিতেও ধোনি বিনিয়োগ করেন। পোশাক থেকে শুরু করে হোটেলেও ছড়িয়ে রয়েছে ধোনির সম্পত্তি। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
১) রিতি স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি
মহেন্দ্র সিং ধোনির রিতি স্পোর্টস নামে একটি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে অংশীদারিত্ব রয়েছে। এই স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি বিশ্বের অনেক বড় বড় ক্রিকেটারদের ম্যানেজমেন্টের কাজ পরিচালনা করে। প্রোটিয়া তারকা ক্রিকেটার ফাফ ডু’প্লেসি, ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং ভারতীয় সিনিয়র বোলার ভুবনেশ্বর কুমার রিতি স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টের ক্লায়েন্ট।
২) ধোনির পোশাক ও জুতোর ব্র্যান্ড
স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ছাড়াও, ধোনি ২০১৬ সালে তাঁর পোশাক এবং জুতোর ব্র্যান্ড সেভেন চালু করেছিল। এই কোম্পানিতে ধোনির সম্পূর্ণ মালিকানা রয়েছে। শুধু জুতোই নয়, এই কোম্পানির মাধ্যমে ধোনি খাবার ও পানীয়তেও বিনিয়োগ করেছেন। ধোনি ফুড অ্যান্ড বেভারেজ স্টার্ট-আপ 7 In Brews -তে বিনিয়োগ করেছেন। এ ছাড়াও, তিনি কপ্টার ৭ নামে একটি চকলেট ব্র্যান্ডও চালু করেছেন। ব্র্যান্ডটি তাঁর হেলিকপ্টার শট দ্বারা অনুপ্রাণিত।
৩) ধোনির ফিটনেস কোম্পানি
ধোনির ফিটনেস নিয়ে বিশ্বব্যাপী চর্চা চলে। এই কারণেই তিনি ফিটনেস প্রচারের জন্য একটি চেইন শুরু করেছিলেন। যার নাম ধোনি স্পোর্টসফিট। সারা দেশে মোট ২০০টিরও বেশি ফিটনেস চেইন রয়েছে।
৪) হকি দলের মালিক ধোনি
মাহির ভক্তরা সকলেই জানেন যে, তিনি ক্রিকেটের আগে ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এখনও ক্রিকেট ছাড়াও অন্যান্য খেলার প্রতিও তাঁর বেশ আগ্রহ রয়েছে। এই কারণেই তিনি হকি ও ফুটবল দলে বিনিয়োগ করেছেন। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ফুটবল দল চেন্নায়িন এফসির মালিক ধোনি। শুধু তাই নয়, হকি দল রাঁচি রে-এর অন্যতম কর্নধার।
৫) ধোনির ইন্টারন্যাশনাল স্কুল
মহেন্দ্র সিং ধোনি বেঙ্গালুরুতে একটি স্কুল চালু করেছেন। ধোনির স্কুলের নাম ‘এমএস ধোনি গ্লোবাল স্কুল ইংলিশ মিডিয়াম’। ধোনির স্কুলের সঙ্গে সফ্টওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফ্টের একটি চুক্তি রয়েছে, যার মাধ্যমে এই স্কুলের স্টুডেন্টরা প্রোগ্রামিংয়ের মতো জিনিস শিখতে পারে।
৬) ধোনির প্রোডাকশন হাউস
ধোনি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও পা রেখেছেন। ধোনি এন্টারটেইনমেন্ট নামে একটি প্রোডাকশন হাউস রয়েছে। এই প্রোডাকশন হাউসের প্রযোজিত সিনেমা ‘লেটস গেট ম্যারেজ’ এ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন মাহি। এটি একটি তামিল সিনেমা। সম্প্রতি এই সিনেমার পোস্টার লঞ্চ হয়েছে।
৭) খাদ্য কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন মাহি
ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি ‘শাকা হ্যারি’ নামে একটি স্টার্ট আপে বিনিয়োগ করেছেন। এই কোম্পানি উদ্ভিজ্জ প্রোটিন তৈরির কাজ করে।
৮) ড্রোন কোম্পানিতে ধোনি বিনিয়োগ করেছেন
ধোনি একটি প্রযুক্তি কোম্পানিতেও বিনিয়োগ করেছেন। এই কোম্পানির নাম Garuda Aerospace। ধোনি এই সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরও। এই কোম্পানির প্রধান কাজ ড্রোন তৈরি করা।
৯) ধোনি হোটেল কোম্পানির মালিক
মহেন্দ্র সিং ধোনিও হোটেল কোম্পানির মালিকও। ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিতে ‘মাহি রেসিডেন্সি’ নামে একটি হোটেলও রয়েছে। যদিও এটি মাহির কোনও হোটেল চেইন নয়। রাঁচিতে এটিই ধোনির একমাত্র হোটেল।
ধোনির মোট সম্পত্তির পরিমাণ কত
১০টিরও বেশি ব্যবসা এবং স্টার্টআপে বিনিয়োগ করেছেন ধোনি। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সমস্ত ব্যবসা থেকে ধোনির উপার্জন প্রায় ১০৩০ কোটির কাছাকাছি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের আইপিএলে রিটেন প্রাইস ১২ কোটির পাশাপাশি প্রতিটি ক্রিকেট ম্যাচের আলাদা টাকা পান ধোনি। পাশাপাশি এনডোর্সমেন্ট রয়েছে। ধোনি একটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের জন্য ৩.৫ কোটি থেকে ৬ কোটি টাকা নেন। সব মিলিয়ে মোট ৫৪টি আলাদা আলাদা কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত মাহি। এখানেই শেষ নয়। ধোনি ২০১১ সালে উত্তরাখণ্ডে একটি বিলাসবহুল বাড়িও কিনেছিলেন। যার দাম প্রায় ১৮ কোটি টাকা। একই সঙ্গে মাহির স্পোর্টস কার ও বাইকের সংগ্রহের শখও রয়েছে। বিপুল সম্পত্তির অধিকারী মাহি একাধিক ভারতীয় ক্রিকেটারের থেকে অনেক এগিয়ে।