মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ১৭৭-৬ (২০ ওভার)
গুজরাত টাইটান্স ১৭২-৫ (২০ ওভার)
মুম্বই: চলতি আইপিএলে (IPL 2022) ফের জয়ের দেখা পেল রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (Mumbai Indians)। বলা ভালো হার্দিক পান্ডিয়ার (Hardik Pandya) গুজরাত টাইটান্সের (Gujarat Titans) মুখের কাছ থেকে জয় কেড়ে নিল মুম্বই। ব্র্যাবোর্ন স্টেডিয়ামে রুদ্ধশ্বাস শেষ ওভারে বাজিমাত ৫ বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নদের। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা গুজরাত-মুম্বই ম্যাচে কখনও মনে হচ্ছিল শেষ হাসি ফুটবে টাইটান্স শিবিরে, তো কখনও মনে হচ্ছিল ওস্তাদের মার শেষ ওভারে… প্রমাণ করে দেবে মুম্বই। আর হলও তাই। টানটান শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৯ রান। ক্রিজে ছিলেন টাইটান্সদের দুই ম্যাচ উইনার। ডেভিড মিলার ও রাহুল তেওয়াটিয়া। কিন্তু শেষ ওভারে ড্যানিয়েল স্যামস যেমন আটকে দিলেন তেওয়াটিয়া ম্যাজিককে, তেমনই মিলারকে কিলার হয়ে উঠতেও দিলেন না। কাজে এল না জয়ের ভীত গড়ে দেওয়া ঋদ্ধি-শুভমনের লড়াই। একদিকে পরপর দুটো ম্যাচে হারলেন হার্দিকরা, অন্যদিকে পরপর দুটো ম্যাচে জিতলেন রোহিতরা।
WHAT. A. WIN! ? ?
What a thriller of a game we have had at the Brabourne Stadium-CCI and it's the @ImRo45-led @mipaltan who have sealed a 5⃣-run victory over #GT. ? ?
Scorecard ▶️ https://t.co/2bqbwTHMRS #TATAIPL | #GTvMI pic.twitter.com/F3UwVD7g5z
— IndianPremierLeague (@IPL) May 6, 2022
ব্র্যাবোর্নে টসে জিতে শুরুতে রোহিতদের ব্যাটিং করতে পাঠান হার্দিক। ঈশান কিষাণকে নিয়ে মুম্বইয়ের ইনিংসের শুরুটা ভালোই করেন রোহিত। মহম্মদ সামি-আলজারি জোসেফরা আজ পাওয়ার প্লে-তে কোনও উইকেট তুলতে পারেননি। উল্টে পাওয়ার প্লে-র মধ্যে স্কোরবোর্ডে ৬৩ রান তুলে ফেলেন রোহিত-ঈশান জুটি। উইকেটের খোঁজে থাকা গুজরাতকে প্রথম সাফল্য এনে দেন রশিদ খান। আট ওভারের মাথায় টাইটান্সদের রোহিতের উইকেট তুলে দেন আফগান তারকা স্পিনার। দুরন্ত ছন্দে ছিলেন হিটম্যান। ২৮ বলে ৪৩ রান করে গিয়েছেন তিনি। যার মধ্যে মেরেছেন ৫টি চার ও ২টি ছয়।
রোহিত ড্রেসিংরুমে ফিরলে ঈশানকে সঙ্গ দিতে আসেন সূর্যকুমার যাদব। এই জুটি বেশিক্ষণ টেকেনি। ১১তম ওভারে প্রদীপ সাঙ্গওয়ানের তৃতীয় বলে বড় শট নিতে গিয়ে উইকেট দিয়ে বসেন সূর্যকুমার যাদব (১৩)। বাউন্ডারি লাইনের সামনে সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করেন রশিদ। প্রায় এক মাস পর রানে ফিরেছিলেন ঈশান। আইপিএলে তাঁর গত ৫টি ইনিংসে নেই একটিও হাফসেঞ্চুরি। আর আজও হাফসেঞ্চুরির সামনে থেকে ফিরে গেলেন তিনি। স্কাই ফেরার পর বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি ঈশানও। গুজরাতের বিরুদ্ধে ২৯ বলে ঈশান করে গেলেন ৪৫ রান। ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ১টি ছয়। ১৫তম ওভারে পরপর চার ডট বল দেওয়ার পর কায়রন পোলার্ডের উইকেট তুলে নেন রশিদ। মাত্র ৪ রান করে ক্লিন বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন পোলার্ড। ক্যারিবিয়ান তারকা ফেরার পরই কোচ আশিষ নেহরার পরামর্শে বোলিংয়ে পরিবর্তন আনেন হার্দিক। বল তুলে দেওয়া হয় মহম্মদ সামির হাতে। তবে কাজ দেয়নি সামির স্পেল। ১৬ ওভারে টিম ডেভিড তোলেন ১৪ রান। তিলককে সঙ্গে নিয়ে ঝোড়ো ইনিংস খেলে যান সিঙ্গাপুরের টিম ডেভিড। ২১ বলে ৪৪ রানের অপরাজিত ইনিংস করার পথে ২টি চার ও ৪টি ছয় মেরে যান ডেভিড। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান তোলে রোহিতের মুম্বই।
রান তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন গুজরাতের ওপেনাররা। টাইটান্সদের ওপেনিং জুটিতেই ওঠে ১০৬ রান। শুভমন গিল ও ঋদ্ধিমান সাহা দু’জনই আজ চেনা ছন্দে ছিলেন। বুমরা-অশ্বিনরা পাওয়ার প্লে-র মধ্যে কোনও উইকেট পাননি। ১৩তম ওভারে এসে অবশেষে জোড়া উইকেট তুলে নেন মুরুগান অশ্বিন। ক্রিজে সেট হয়ে যাওয়া গিলকে (৫২) প্রথম বলে ফেরান তিনি। এবং শেষ বলে প্যাভিলিয়নে পাঠান ঋদ্ধিকে (৫৫)। ছন্দে থাকা দুই ওপেনার ফিরলে সাই সুদর্শনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন হার্দিক। তবে পুরনো দলের বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠেনি হার্দিকের ব্যাট। ১৬তম ওভারে হিট উইকেট হয়ে মাঠ ছাড়েন সাই (১৪)। এরপর ২৪ রান করে রান আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন গুজরাত অধিনায়ক হার্দিক। তারপরও বলা যাবে না ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছিল গুজরাতের হাত থেকে। কারণ এরপর ক্রিজে ছিলেন ডেভিড মিলার ও রাহুল তেওয়াটিয়া। টাইটান্সদের দুই ম্যাচ উইনার। কিন্তু আজ ভাগ্যদেবী প্রসন্ন ছিল না টাইটান্সদের ওপর। শেষ ওভারে রান আউট হয়ে সকলকে হতাশ করে যান রাহুল তেওয়াটিয়া (৩)। মিলারের (১৯*) ব্যাট আজ নিস্প্রভ। ফলে শেষ অবধি ৫ রানে ম্যাচ জিতে নিয়ে মাঠ ছাড়েন রোহিতরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: মুম্বই ১৭৭-৬ (ঈশান কিষাণ ৪৫, টিম ডেভিড ৪৪*, রোহিত শর্মা ৪৩, রশিদ খান ২-২৪, প্রদীপ সাঙ্গওয়ান ১-২৩)। গুজরাত ১৭২-৫ (ঋদ্ধিমান সাহা ৫৫, শুভমন গিল ৫২, হার্দিক পান্ডিয়া ২৪, মুরুগান অশ্বিন ২-২৯, কায়রন পোলার্ড ১-১৩)।