ঠিক যেন অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন ক্যাপ্টেন টিম পেইনের মতোই ভুল। যদিও ভারতীয় শিবিরের সেই বেন স্টোকস হয়ে উঠতে পারলেন না সুন্দর। তাঁকে দোষ দেওয়া নয়। বরং, অ্যাসেজ সিরিজের সেই ম্যাচটির মতোই যেন হতে পারত। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাসেজ সিরিজ। হেডিংলির সেই টেস্টে বেন স্টোকসের মহাকাব্যিক ইনিংসে মাত্র ১ উইকেটে জিতেছিল ইংল্যান্ড। সেই ঘটনা মনে পড়ে? তা হলে আরও একটা ঘটনা মনে করিয়ে দেওয়া যাক। সেটিও সেই ম্যাচেরই।
হেডিংলি টেস্টে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ১৭৯ রানে অলআউট করেছিল ইংল্যান্ড। জবাবে নিজেরা অলআউট ৬৭ রানে! ফলে সেই মুহূর্তে পুরোপুরি ব্যাকফুটে ছিল ইংল্যান্ড। তবে ‘খেলা হয়’ সেকেন্ড ইনিংসে। অস্ট্রেলিয়াকে ২৪৬ রানে গুটিয়ে দেয় ইংল্যান্ড। তাদের টার্গেট দাঁড়ায় ৩৫৯ রান! টেস্ট ক্রিকেটের চতুর্থ ইনিংসে এত বড় টার্গেট পূরণ সহজ নয়। সম্ভব করেছিলেন বেন স্টোকস। শুরুতেই দুই ওপেনারের উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। তৎকালীন ক্যাপ্টেন জো রুট, মিডল অর্ডার ব্যাটার জো ডেনলি হাফসেঞ্চুরি করেন। তা যথেষ্ট ছিল না। তার উপর বেয়ারস্টো আউট হতেই একদিকে ভাঙন শুরু হয়। উল্টো প্রান্তে একা কুম্ভ বেন স্টোকস।
অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে ২৫ রানের জুটি গড়েন জোফ্রা আর্চার। তিনি ফিরতেই ফের ধাক্কা। ২ বল খেলে আউট স্টুয়ার্ট ব্রড। অজি শিবির জয়ের গন্ধে বুঁদ। ক্রিজে স্টোকসের সঙ্গে যোগ দেন জ্যাক লিচ। শেষ উইকেট জুটি। লিচ কোনও রকমে টিকে থাকার চেষ্টা করেন। একটি সহজ রান আউট মিস করেন নাথান লিয়ঁ। থ্রো ধরতে পারেননি। এর মাঝেই বাকি থাকা একটি ডিআরএসও খরচ করে ফেলেন অজি অধিনায়ক টিম পেইন। যে কেউ খালি চোখেও বলতে পারবে, নটআউট। অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন, এটা না ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। তাই হয়েছিল।
অল্প সময়ের ব্যবধান। অনফিল্ড আম্পায়ার একটি আউট দেননি। পরে জায়ান্ট স্ক্রিনে রিপ্লে-তে দেখা যায় রিভিউ নিলে আউট হত। অস্ট্রেলিয়া জিততে পারত। শেষ অবধি জ্যাক লিচকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন স্টোকস। ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের সঙ্গে এর যোগ কোথায়? ১৪৭ রানের টার্গেট তাড়ায় ভারত যখন খাদের কিনারায়, সেসময় কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছিলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। সঙ্গী অশ্বিন। এই জুটি টিকে থাকলে ভারতের সম্ভাবনা থাকত। ২৬ তম ওভারের শেষ ডেলিভারিতে টিম পেইনের মতোই ভুল করেন কিউয়ি অধিনায়ক টম ল্যাথাম।
বোলিং করছিলেন এজাজ প্যাটেল। অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের ডেলিভারি। কোনও টার্ন হয়নি। অশ্বিন প্যাডে আটকান। কোনও শট না খেলায়, বল ট্র্যাকারে শুধু দেখা হত উইকেটে লাগছে কিনা। তা হলেই আউট। নিউজিল্যান্ড শিবিরও নিশ্চিত ছিল আউট নয়। বল টার্ন হলে তবু একটা সম্ভাবনা ছিল। এরপরও শেষ রিভিউটা নিয়েই ফেলেন টম ল্যাথাম। প্রত্যাশা মতোই নটআউট। ম্যাচ জিতলে হয়তো এটাও একটা টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়াত! বেন স্টোকসের মতো ইতিহাসের পাতায় থাকতেন ওয়াশিংটন সুন্দরও!