কলকাতা: পাহাড় প্রমাণ চাপের মধ্যেও শান্ত। তুখোড় ক্রিকেট মস্তিষ্ক। আর পরিস্থিতি অনুযায়ী ক্রিকেটারদের ব্যবহার করার ক্ষমতা। এই কয়েকটি গুণেই মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni) বাকি অধিনায়কদের থেকে আলাদা। যা তাঁকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অধিনায়কদের তালিকায় স্থান দিয়েছে। ২০০৭ সালে ক্রিকেটের (Cricket) ক্ষুদ্রতম ফরম্যাটে বিশ্বকাপ হবে বলে ঘোষণা করে দিয়েছিল আইসিসি (ICC)। কোনও প্রত্যাশা ছাড়াই সেই দলের ক্যাপ্টেন্সির দায়িত্ব পেয়েছিলেন ধোনি। তারপরের ইতিহাস সবার জানা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রাঁচি-জাত ক্রিকেটারের ঝুলিতে যে সাফল্য রয়েছে, দেশ বিদেশের নামী অধিনায়করা পুরো কেরিয়ারজুড়েও সেই স্বাদ পাননি।
আজকের দিনে এই ধোনি-কাহিনীর অবশ্য কারণ আছে। ভারতীয় ক্রিকেটে ২৩ জুন দিনটির গুরুত্ব অন্যরকম। বলা বাহুল্য, মহেন্দ্র সিং ধোনির জীবনে দিনটির মাহাত্ম্য আলাদা। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আজকের দিনে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (ICC Champions Trophy) ঘরে তুলেছিল ভারত। দেশের দ্বিতীয় আইসিসি ট্রফি (ICC trophy)। যা মিনি বিশ্বকাপ নামেও পরিচিত। বৃষ্টি বিঘ্নিত ফাইনালে ২০ ওভারে ৭ উইকেট খুইয়ে ১২৯ রান তোলে ভারত। মোক্ষম সময়ে দলের ‘সম্পদ’দের সঠিক ব্যবহার লো স্কোরিং ম্যাচ ৫ রানে জিতিয়ে দেয় ভারতকে। জাদেজা, অশ্বিন এবং ইশান্ত শর্মা দুটি করে উইকেট নিয়েছিলেন। যাই হোক সেটি ছিল ধোনির নেতৃত্বে ভারতের তৃতীয় আইসিসি ট্রফি। মাত্র সাতবছরের মধ্যে দেশকে তিনটি আইসিসি ট্রফি উপহার দেওয়া প্রথম ক্যাপ্টেনে পরিণত হন রাঁচির রাজপুত্র। তার আগেই মাহি ম্যাজিকে ২০০৭ সালে টি-২০ ও ২০১১তে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ জেতে টিম ইন্ডিয়া। রিকি পন্টিং, গ্রেম স্মিথ বা মাহেলা জয়বর্ধনেরও এই রেকর্ড নেই।
২০১৩ আইসিসি ট্রফি ৫০ ওভারের হলেও এজবাস্টনে বৃষ্টির কারণে ফাইনাল ম্যাচ ২০-২০ ওভারে এসে দাঁড়ায়। ইংরেজ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। মাত্র ১২৯ রানে আটকে যাওয়া ভারতের হয়ে সর্বাধিক ৪৩ রান করেন বিরাট কোহলি। স্বল্প রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্রুত ৪ উইকেট হারায় প্রতিপক্ষ। ইয়ন মরগ্যান এবং রবি বোপারা ম্যাচ প্রায় পকেটে পুরেই ফেলছিলেন। বেগতিক দেখে ১৮তম ওভারে ইশান্ত শর্মার হাতে বল তুলে দেন ধোনি। ক্যাপ্টেন কুলের এই সিদ্ধান্ত হতবাক করে দিয়েছিল ক্রিকেট অনুরাগীদের। কারণ আগের ওভারগুলিতে জলের মতো রান দেন ইশান্ত। যে যাই ভাবুক দিল্লী পেসারের উপর ভরসা রেখেছিলেন ক্যাপ্টেন। তার প্রতিদানও দিয়েছিলেন ইশান্ত। ওই ওভারের পরপর দুই বলে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা দুই ইংরেজ ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান। প্রায় হেরে যাওয়া বাজি জিতে ফেরে মেন ইন ব্লু। ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় খোদাই হয়ে যায় মহেন্দ্র সিং ধোনির নাম।