কলকাতা : ঘটা করে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেননি। বড়সড় বিদায়ী সম্ভাষণও লেখেননি। একগুচ্ছ ছবির কোলাজের ভিডিয়ো, যার ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে মুকেশের গান, ‘ম্যায় পল দো পল কা শায়র হুঁ’। ভিডিয়োর ক্যাপশনও মাত্র দু লাইনের। ঠিক এভাবেই ১৪ বছরের বর্ণময় ক্রিকেট জীবনের ইতি টেনেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। বরাবরের মুখচোরা। ট্রফি জয়ের পর ফোটোসেশনে সবার পিছনে দাঁড়াতেন। কখনও তাঁকে খুঁজে পাওয়াই যেত না। নিজের মর্জির মালিক। ব্যক্তিগত জীবনে যতটা আড়ম্বরহীন, তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ার ততটাই জাঁকজমকপূর্ণ। সবকটি আইসিসি ট্রফির মালিক। ভারত তো বটেই বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্যাপ্টেনদের মধ্যে একজন। সেই ধোনির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের তিন বছর পূর্তি। ২০২০ সালে স্বাধীনতা দিবসের এমনই এক সন্ধ্যায় ‘মাহি’হারা হয়েছিল জাতীয় ক্রিকেট দল। কোটি কোটি অনুরাগীর হৃদয় ভেঙেছিল। সেই যন্ত্রণার উপশম যে এখনও হয়নি তা মালুম হবে তিনবছরের পুরনো সেই রিটায়ারমেন্ট পোস্ট ঘাঁটলে।
উপশম হবেই বা কি করে। ধোনির সেই চমকে দেওয়া অবসরের পর তাঁর বিকল্প তো পাওয়া যায়নি। সেটা নেতৃত্ব হোক বা উইকেটকিপিং। মাহির নেতৃত্বে পরপর আইসিসি ট্রফি জয়ের যে ধারা শুরু হয়েছিল তা থমকে গিয়েছে এক দশক আগেই। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা ‘ধোনি’ হয়ে উঠতে পারেননি। ভারতের ঝুলিতে আসেনি আইসিসি ট্রফি। ২০১৯ সালে শেষবার জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেছিলেন ধোনি। ২০১৯ ওডিআই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। মার্টিন গাপ্টিলের ডিরেক্ট থ্রোয়ে রান আউট হয়ে ফিরেছিলেন। সেটাই ভাগ্য গড়ে দিয়েছিল ম্যাচের। তারপর একটা বছর বাইশ গজ থেকে দূরেই ছিলেন ধোনি। আবার একটা ওডিআই বিশ্বকাপ। এ বার ঘরের মাঠে। রোহিত শর্মারা বলছেন, ২০১১ সালের ওয়াংখেড়ের সেই রাত ফেরাতে চান। ধোনিকে ছাড়াই।
কী বলছেন মাহি অনুরাগীরা? ধোনির পুরনো রিটায়ারমেন্ট পোস্টে গিয়ে একজন লিখেছেন, “তিনবছর হল আপনার অবসরের। অনুরোধ করছি ফিরে আসুন।” আরও একজন লিখেছেন, “বিশ্বকাপ আসছে স্যার, আপনি ফিরুন।” এক ভক্তের আর্জি, “ভারতীয় দলের এখনও আপনাকে প্রয়োজন।” তাঁর প্রতি দেশবাসীর অগাধ প্রত্যাশা তিনি নিজেই বাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছেন। তাই তরুণ ক্রিকেটারদের ভিড়েও ৪১ বছরের ‘ওল্ড’ মাহিকেই খুঁজে ফেরে তাঁর ভক্তরা।