কলকাতা: ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের মুকুটে কোহিনুরের মতো জ্বলজ্বল করছে আইপিএল (IPL 2023)। বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ বলে কথা! আয়ও চমকে দেওয়ার মতো। শুধু এই আইপিএল বেচে বোর্ডের অ্যাকাউন্ট উপচে পড়ছে। এমন লাভজনক টুর্নামেন্ট যখন, তখন এত দায়সারা মনোভাব কেন? এই প্রশ্নের মুখে পড়ে বারবার অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে বিসিসিআইয়ের (BCCI)। বিজ্ঞাপনী বাজারে আইপিএল সুপার-ডুপার হিট ঠিকই, কিন্তু বিতর্কও কম নেই। অন্তত হালফিলে তো বটেই। যে নিয়মে ভর করে খেলা হচ্ছে আইপিএল, যাঁরা পরিচালনা করছেন এই নিয়ম, তাঁরাই যদি অযাচিত ভাবে বাড়িয়ে দেন বিতর্ক, তা হলে তো বিতর্ক বাড়বেই। এমনিতে আইপিএলে আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক কম নেই। কোভিডকালীন পরিস্থিতিতে খারাপ আম্পায়ারিং নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছিল। তাতেও যে বোর্ডের হুঁশ হয়নি, আইপিএলে এই সংস্করণেও পদে পদে বোঝা যাচ্ছে। মাঠের আম্পায়ার এবং টিভি আম্পায়ারদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ধরা পড়ছে। যা বাড়িয়ে দিচ্ছে বিতর্ক। অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছে বিসিসিআইকে। নতুন আবার কী ঘটল? বিস্তারিত TV9 Bangla Sports–এ।
ঘটনা বুধবার রাতের ম্যাচে। ১৯তম ওভার আইপিএলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওভার। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শেষ ওভারে নিষ্পত্তি হয় ম্যাচের। আর ওই শেষ ওভারেই বারবার তৈরি হচ্ছে বিতর্ক। পঞ্জাব-দিল্লি ম্যাচও যে বিতর্কের আঁচ থেকে বাঁচল না। বিতর্কের কেন্দ্রে সেই নো-বল আর আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত। দিল্লি ২১৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল পঞ্জাবকে। রান তাড়া করতে নেমে লিয়াম লিভিংস্টোন বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন। ১৯তম ওভারে ম্যাচ জেতার জন্য দরকার ছিল ৩৩ রান। ইশান্ত শর্মার প্রথম ৩ বলে একটা ছয় ও একটা চার মেরে ম্যাচ জেতানোর স্বপ্নও দেখাতে শুরু করেন লিভিংস্টোন। এই পরিস্থিতিতে চতুর্থ বল ফুলটস করেন ইশান্ত। যা কোমরের উপরে থাকার কারণে নো-বলের নির্দেশ দেন মাঠের আম্পায়ার। ওই বলে ছয় মারেন লিভিংস্টোন। সেখান থেকেই বিবাদ শুরু। ইশান্ত ছুটে যান আম্পায়ারের কাছে। দিল্লির ক্য়াপ্টেন ডেভিড ওয়ার্নার সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন। টিভি আম্পায়ারও মাঠের আম্পায়ারের নো-বলের সিদ্ধান্তকেই বহাল রাখেন। ফ্রি-হিট পায় পঞ্জাব। ম্যাচ হয়তো দিল্লিই জিতেছে, কিন্তু বিতর্ক তাতে কমছে না। প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে, ম্যাচ বদলালে কি নিয়মও বদলে যায়?
কয়েক ম্যাচ আগেই এই নো-বল বিতর্ক চরম আকার নিয়েছিল। লখনউ-হায়দরাবাদ ম্যাচের ১৯তম ওভারেও এই রকম নো-বলই করেন আবেশ খান। আব্দুল সামাদ যাতে বড় শট মারতে পারেননি। মাঠের আম্পায়ার সেই বলকে নো-বল দেন। কিন্তু রিভিউয়ের সময় মাঠের আম্পায়ারের ওই সিদ্ধান্ত পাল্টে দেন টিভি আম্পায়ার। নো-বল বাতিল করে ফেয়ার ডেলিভারির নির্দেশ দেন তিনি। এ থেকেই বিতর্ক চরমে উঠেছিল। দুই আম্পায়ারের মধ্যে কেন সমন্বয় নেই? কোন নিয়ম নো-বল দেওয়া উচিত, তা কি জানেন না আম্পায়াররা? দিল্লি-পঞ্জাব ম্যাচ আবার সেই বিতর্ককে খুঁচিয়ে দিচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, কয়েক ম্যাচ আগেই যদি আবেশ কোমরের উপর বল করা সত্ত্বেও তা নো-বল না দিয়ে ফেয়ার ডেলিভারি বলা হয়ে থাকে, তা হলে এ ক্ষেত্রে কেন ইশান্তের ক্ষেত্রে হবে না কেন?
আইপিএল এমনই। চার-ছক্কার জোয়ারে, বিউগলের সুরে কখন যে কী হবে, কে বলতে পারে?