রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ২০৭-৪ (২০ ওভারে)
লখনউ সুপার জায়ান্টস ১৯৩-৬ (২০ ওভারে)
কলকাতা: এ বারের আইপিএলের সব থেকে বড় চমক ছিল দুই নতুন দল। গুজরাত ও লখনউকে উত্তেজনায় বিন্দুমাত্র খামতি নেই। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে শেষ অবধি চলতি মরসুম মাতিয়ে রেখেছে এই দুই দল। তবে ইডেনে আজ, বুধবার আইপিএল-২০২২ (IPL 2022) এর এলিমিনেটরেই থেমে গেল লোকেশ রাহুলদের যাত্রা। রজত পাতিদারের (Rajat Patidar) শতরানে ভর করে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে (Lucknow Super Giants) ২০৮ রানের বড় টার্গেট দিয়েছিল আরসিবি। তবে সেই রানের পাহাড়ে উঠতে পারল না লোকেশ রাহুলের লখনউ। লড়াই করে গেলেন রাহুল-হুডারা। কিন্তু রজতের ইনিংসের মান রাখলেন হ্যাজেলউড-সিরাজরা। এর আগে প্রথম কোয়ালিফায়ারে রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পেয়ে গিয়েছে হার্দিক পান্ডিয়ার গুরজাত টাইটান্স। কিন্তু আমেদাবাদে যাওয়া হল না লখনউয়ের। লিগ টেবলের তিন নম্বরে থেকেই এ বারের মতো আইপিএল যাত্রা শেষ হল সুপার জায়ান্টসদের। ২৭ মে আমেদাবাদে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রাজস্থানকে হারাতে পারলেই এ বার ফাইনালে দেখা যাবে আইপিএলের নতুন দলের সঙ্গে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের (Royal Challengers Bangalore) লড়াই।
.@RCBTweets seal a spot in the #TATAIPL 2022 Qualifier 2! ? ?@faf1307 & Co. beat #LSG by 14 runs in the high-scoring Eliminator at the Eden Gardens, Kolkata. ? ?
Scorecard ▶️ https://t.co/cOuFDWIUmk #TATAIPL | #LSGvRCB pic.twitter.com/mOqY5xggUT
— IndianPremierLeague (@IPL) May 25, 2022
বৃষ্টির কারণে আজ নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ শুরু করা যায়নি। বৃষ্টি থামলে এরপর ৮টা ১০ মিনিটে শুরু হয় ম্যাচ। পুরো ২০ ওভার করেই খেলল দুই দল। টসে জিতে শুরুতে আরসিবিকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন লখনউয়ের অধিনায়ক কেএ রাহুল। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই আরসিবির নেতা ফাফ দু’প্লেসির উইকেট তুলে নিয়ে ধাক্কা দেন মৌসিন খান। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শূন্যে ফেরেন প্রোটিয়া তারকা ক্রিকেটার। এরপর রজতের সঙ্গে জুটি বাঁধেন বিরাট। ইডেনেই শেষ শতরান এসেছিল কোহলির ব্যাটে। আজ ইডেনের হাউসফুল গ্যালারি বিরাটের শতরানের অপেক্ষায় থাকলেও মাত্র ২৫ রান করেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন ভিকে। নবম ওভারে আবেশ খান তুলে নেন বিরাটের উইকেট। ম্যাক্সির ব্যাটও আজ ফিকে। ৯ রান করে ক্রুণাল পান্ডিয়াকে উইকেট দেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এরপর মহিপাল লোমরোরের সঙ্গে ছোট্ট জুটি বাঁধেন রজত। ৯ বলে ১৪ রান করে যান মহিপাল।
পঞ্চম উইকেটে রজত পাতিদারকে যোগ্য সঙ্গ দেন দীনেশ কার্তিক। রজত-দীনেশ জুটিতে ওঠে ৪১ বলে ৯২*। ২৮ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন রজত। এরপর ৪৯ বলে সেঞ্চুরি গুছিয়ে নেন রজত। অথচ এ বারের আইপিএলের মেগা নিলামে অবিক্রিত ছিলেন রজত। লুভনিথ সিসোদিয়ার চোট না লাগলে আইপিএলই খেলা হত না তাঁর। সেই রজত পাতিদারই কিনা ৫৪ বলে নট আউট ১১২ করে চমকে দিলেন। প্রথম আনক্যাপড প্লেয়ার হিসেবে প্লে-অফে সেঞ্চুরির রেকর্ডও করে ফেললেন। ইন্দোরের এই ছেলের কাছেই হারল রাহুলের লখনউ। পাশাপাশি ২৩ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন দীনেশ কার্তিক। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে উঠতে হলে লখনউকে তুলতে হত ২০৮ রান।
রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে আরসিবির মতোই প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় লখনউ। নতুন বল হাতে নিয়েই কুইন্টন ডি’ককের উইকেট তুলে নেন মহম্মদ সিরাজ। মাত্র ৬ রান করে যান ডি’কক। পঞ্চম ওভারে মনন ভোরাকে ড্রেসিংরুমে পাঠান জস হ্যাজেলউড। তৃতীয় উইকেটে দীপক হুডার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েন লোকেশ রাহুল। এই জুটিতে ওঠে ৯৬ রান। তবে ছন্দে থাকা হুডাকে ১৫তম ওভারে ফেরান ভানিন্দু হাসারঙ্গা। ২৬ বলে ৪৫ রান করে যান দীপক। এরপর স্টোইনিসের সঙ্গে বেশ কিছুটা রান তোলেন রাহুল। তবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে স্টোইনিসের ব্যাট কামাল দেখাতে পারল না। ১৮তম ওভারে শুরুটা ভালো না করলেও তৃতীয় বলে মার্কাস স্টোইনিসের উইকেট তুলে নেন হর্ষল প্যাটেল। মাত্র ৯ রান করে মাঠ ছাড়েন স্টোইনিস।
এরপর ১৯তম ওভারে লখনউকে জোড়া ধাক্কা দেন জস হ্যাজেলউড। প্রথমে লোকেশ রাহুলকে ফিরিয়ে কার্যত লখনউয়ের জয়ের আশা শেষ করে দেন জস। এরপরের বলেই ক্রুণালের উইকেট তুলে নেন তিনি। ৫৮ বলে ৭৯ রান করে যান রাহুল। তবে দলকে জেতাতে পারলেন না। শেষ অবধি ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানে থেমে যায় লখনউ। ১৪ রানে ম্যাচ জেতার পাশাপাশি আমেদাবাদের টিকিট পেয়ে গেলেন বিরাটরা। আর ইডেনেই আইপিএল-২০২২ এর সফর শেষ হল রাহুলের দলের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ২০৭-৪ (রজত পাতিদার ১১২*, দীনেশ কার্তিক ৩৭*, বিরাট কোহলি ২৫, মৌসিন খান ১-২৫, ক্রুণাল পান্ডিয়া ১-৩৯, আবেশ খান ১-৪৪)। লখনউ সুপার জায়ান্টস ১৯৩-৬ (লোকেশ রাহুল ৭৯, দীপক হুডা ৪৫, জস হ্যাজেলউড ৩-৪৩, হর্ষল প্যাটেল ১-২৫)।