বিরাটরা দেশের পিচ চেনে তো?

sushovan mukherjee | Edited By: arunava roy

Feb 26, 2021 | 1:33 PM

শরদিন্দু মুখোপাধ্যায় ইংল্যান্ড ৫৭৮ ও ১৭৮ ভারত ৩৩৭ ও ১৯২ টার্নিং ট্র্যাক বানিয়ে আমরা কি নিজেরাই নিজেদের ফাঁদে পড়ছি? ৯ বছর আগে অ্যালেস্টার কুকের নেতৃত্বে খেলতে এসে এখানে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল ইংল্যান্ড। মন্টি পানেসার-গ্রেম সোয়ানদের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়ে গিয়েছিল ভারত। এবারও চিপকে প্রথম টেস্টে ফায়দা তুলল ডম বেস-জ্যাক লিচরা। আমার মনে হয়, ঘরোয়া ক্রিকেট না […]

বিরাটরা দেশের পিচ চেনে তো?

Follow Us

শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়

ইংল্যান্ড ৫৭৮ ও ১৭৮
ভারত ৩৩৭ ও ১৯২

টার্নিং ট্র্যাক বানিয়ে আমরা কি নিজেরাই নিজেদের ফাঁদে পড়ছি? ৯ বছর আগে অ্যালেস্টার কুকের নেতৃত্বে খেলতে এসে এখানে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল ইংল্যান্ড। মন্টি পানেসার-গ্রেম সোয়ানদের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়ে গিয়েছিল ভারত। এবারও চিপকে প্রথম টেস্টে ফায়দা তুলল ডম বেস-জ্যাক লিচরা। আমার মনে হয়, ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলার ফল এটা। ভারতের প্রথম সারির ক্রিকেটাররা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে না। দেশের মাঠের উইকেটে চারদিন বা পাঁচদিনের ম্যাচ না খেলার ফলেই স্পিন খেলতে অসুবিধে হচ্ছে। দেখতে হবে আমাদের টেকনিকে কোথাও ভুল হচ্ছে কিনা। ইংল্যান্ডের প্রথম সারির ক্রিকেটাররা কিন্তু কাউন্টি খেলে। আমাদের ক্রিকেটাররা অধিকাংশ সময় বাইরে খেলছে। তাই এখানকার টার্নিং ট্র্যাক বুমেরাং হয়ে যাচ্ছে।

গতকালই বলেছিলাম, ভারত যদি এই টেস্ট বাঁচিয়ে দেয় তাহলে অষ্টম আশ্চর্য দেখব। পূজারা কিংবা রাহানের মতো কাউকে আজ বড় ইনিংস খেলতে হত। দুজনেই অনেকটা টাইম নিয়ে খেলতে পারে। ক্রিজে অনেকটা সময় কাটাতে পারে। চিপকের এই উইকেটে পঞ্চম দিন টিকে থাকা অনেক মুশকিল ছিল। সিডনির ২২ গজ আর চিপকের ২২ গজ এক নয়। এখানে অসমান বাউন্স। বল অনেকটা টার্ন করছে। হয় রান করতে হত, না হলে টাইম নিয়ে খেলতে হত। পূজারা আর রাহানের মধ্যে কেউ সফল না হওয়ায় যা হওয়ার তাই হল।

আমি আবারও বলব জেমস অ্যান্ডারসনের কথা। ও যেন ৩৮ বছরের ‘তরুণ’। বয়স হয়েছে, বলের গতি কমেছে, তবু অভিজ্ঞতা ওকে শিখরে তুলে রেখেছে। একা হাতে ভারতের মিডল অর্ডারের মেরুদণ্ড ভেঙে দিল। একই ওভারে শুভমন গিল আর অজিঙ্ক রাহানাকে আউট করল। কিছুক্ষণ পরে ঋষভ পন্থকে প্যাভিলিয়নে ফেরাল। ৩ ক্রিকেটারই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দুরন্ত পারফর্ম করেছে। ফর্মে থাকা ৩টে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটই ইংল্যান্ডকে ম্যাচ জিততে সাহায্য করল। চিপকের এমন উইকেটে যেখানে পেস বোলাররা সাহায্য পাচ্ছিল না, সেখান থেকে ভারতের মিডল অর্ডার ভেঙে দিল। ওর ভূয়ষী প্রশংসা না করে থাকতে পারছি না।

তবে বিরাট কোহলিকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। আজ কিন্তু ও সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছে। ও নিজে অনেক বড় মাপের ক্রিকেটার। বাকিদের কাছ থেকেও সেই প্রত্যাশা রাখে। তাই হয়তো বাকি ক্রিকেটাররা একটু চাপে থাকে। সচিনেরও এ রকম ধারণা থাকত। কোহলির অধীনে ভারত একের পর এক ইতিহাস তৈরি করেছিল। আমি আশা করি, কোহলির এই ভারত ঠিক ঘুরে দাঁড়াবে।

আরও পড়ুন:সহজ জয় নাদাল-বার্টির, ছিটকে গেলেন আজারেঙ্কা

নিজেদের ব্যর্থতার থেকেও আমি ইংল্যান্ডের জয়ের কৃতিত্ব দেব। ওরা হোমওয়ার্ক করে এখানে খেলতে এসেছে। ভারত যখন অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জিতেছিল, বিশ্বের সবাই সাধুবাদ জানিয়েছিল। এখানেও আমি ইংল্যান্ডকে বাহবা দেব । প্রথম টেস্ট জেতায় ওদের আত্মবিশ্বাস অনেক গুণ বেড়়ে গেল। লর্ডসে ঐতিহাসিক বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে হলে ভারতকে আর হারলে চলবে না। চাপ রয়েছে ঠিকই। তবে আশা রাখি ভুল শুধরে ঠিক ঘুরে দাঁড়াবে টিম ইন্ডিয়া। আমি বলব, দ্বিতীয় টেস্টে শাহবাজ নাদিমের বদলে কুলদীপ যাদবকে খেলানো হোক। ইংল্যান্ডের কিন্তু রিস্ট স্পিনারদের খেলতে দুর্বলতা আছে। সে জন্য ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এতটা সফল শেন ওয়ার্ন। পেসারদের মধ্যে ইশান্ত শর্মার বদলে মহম্মদ সিরাজ খেলুক। তাহলেই হয়তো ভারতীয় দলে অনেকটা শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ১৯২ (কোহলি ৭২, শুভমন গিল ৫০, লিচ ৪/৭৬, অ্যান্ডারসন ৩/১৭)

Next Article