কলকাতা: চব্বিশ ঘণ্টা পর ঠিক হয়ে যাবে, টেস্ট অভিষেক হচ্ছে কিনা তাঁর। তার আগে পর্যন্ত কিন্তু ট্রেন্ডিংয়েই থাকছেন সরফরাজ খান। রজত পাতিদার নাকি তিনি, এ নিয়ে চলছে আলোচনা। তার মধ্যেই ভারতীয় টিমের নেটে নেমে পড়েছেন মুম্বইয়ের ২৬ বছরের ছেলে। অন্ধকার গলি থেকে রাজপথে উঠে আসার গল্প যেমন বলা যেতে পারে, তেমনই বলতে হবে ভারতীয় ক্রিকেটে তিনি এক প্রতিবাদী চরিত্র। রঞ্জি ট্রফিতে দিনের পর দিন ব্যাট হাতে পাল্টা লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। এত দিনে সুযোগ পেয়েছেন টেস্ট টিমে। সেই সরফরাজ প্রথম ইন্টারভিউতে নিজের সঙ্গে জাভেদ মিয়াঁদাদের তুলনা করে বসলেন কেন?
বিরাট কোহলি থেকে এবি ডে ভিলিয়ার্স— দেখে শেখার চেষ্টা করেছেন এই তারকাদের। তাঁদের মতোই স্বপ্ন দেখেছেন সাফল্যের। সরফরাজের কথায়, ‘বিরাট কোহলি, এবিডির খেলা দেখতে ভালো লাগে। ভিভিয়ান রিচার্ডসেরও খেলা দেখি অনেক সময়। আর দেখি জাভেদ মিয়াঁদাদের। মিয়াঁদাদ কেন, কারণ আমার বাবা বলেন, আমি নাকি ওঁর মতোই খেলি। জো রুটের ব্যাটিংও ভালো লাগে। যেই সাফল্য পায়, আমি তাকে দেখে শেখার চেষ্টা, কী ভাবে সাফল্য় পেল। তার ব্যাটিংয়ের ধারা কেমন। সেটাই আমি আমার খেলায় নিয়ে আসার চেষ্টা করি। রঞ্জি ট্রফিতে এটা করেছি। আগামী দিনে ভারতের হয়ে খেলার সময়ও তাই করব।’
কঠিন পরিশ্রম করতে করতে এই জায়গায় এসে পৌঁছেছেন সরফরাজ। তাঁর প্র্যাক্টিস রুটিনও যে কারণে সারা দিনের। জিও টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সরফরাজ বলেও দিচ্ছেন, ‘আমি সহজে তৃপ্ত হই না। রোজ ৫০০-৬০০ বল খেলি। ম্য়াচে যদি ২০০-৩০০ বল না খেলি, মনে হয় কিছু করিনি। এটাই এখন অভ্যেসে বদলে গিয়েছে। রোজ সকাল, দুপুর, বিকেলে ট্রেনিং করি। শুধু একটা জিনিসেই ফোকাস করি, ব্যাট হাতে যত বেশি বল খেলা যায়। টেস্ট খেলতে হলে ধৈর্য ধরতে হবে আর রোজ প্র্যাক্টিস করতে হবে।’
ক্রিকেট জীবনে বাবার অবদান ভোলার নয়। সরফরাজ বলছেন, ‘বাবাই আমাকে ক্রিকেটে নিয়ে এসেছেন। শুরুর দিকে মনে হত, আমি ক্রিকেটে কেন এলাম! আমি অ্যাটাকিং ব্যাটার। কিন্তু তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যেতাম। দেখতাম, অন্যরা অনেকক্ষণ ব্যাট করছে, রান করছে, সাফল্য পাচ্ছে। খুব খারাপ লাগত। কিন্তু ধীরে ধীরে আমাকে পাল্টেছেন। আমি মুম্বই ছেড়ে যখন উত্তরপ্রদেশের হয়ে রঞ্জি খেলতে চলে গেলাম, তখনও বাবা আমার কাছে চলে যেত। বল করত, যাতে প্র্যাক্টিস করতে পারি। বাবা কতটা পরিশ্রম করতেন, এখন বুঝতে পারি।’
উত্তরপ্রদেশ ছেড়ে আবার মুম্বইয়ে ফেরার পরও ভয়ে থাকতেন নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে। কিন্তু সব কিছু পিছনে ফেলে টেস্ট টিমে ঢুকে পড়েছেন।