ভারত ২২৩ ও ১৯৮
দক্ষিণ আফ্রিকা ২১০ ও ২১২-৩
(২-১ সিরিজ জয় দক্ষিণ আফ্রিকার)
কেপ টাউন: ডিআরএস নিয়ে যতই উষ্মা থাক, যতই বিতর্ক বাড়ুক, যতই ক্ষোভ প্রকাশ করুক বিরাট কোহলি (Virat Kohli) এবং তাঁর দলবল, স্বপ্নপূরণ হল না। দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) টেস্ট জয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল ভারতের (India)। বিশ্বের সব দেশে টেস্ট সিরিজ জেতার দুরন্ত রেকর্ড রয়েছে ভারতীয় টিমের। প্রোটিয়াদের দেশে জিতলে বৃত্ত সম্পূর্ণ হত। তা আর হল না। ডিন এলগারের টিমের কাছে ১-২ সিরিজ হেরে গেল বিরাটরা। ৭ উইকেটে কেপ টাউন টেস্ট জয় দক্ষিণ আফ্রিকার।
South Africa win! ?
Bavuma and van der Dussen take them over the line!
A terrific victory for a young team – what a performance! ?
Watch #SAvIND live on https://t.co/CPDKNxpgZ3 (in select regions)#WTC23 | https://t.co/Wbb1FE2mW1 pic.twitter.com/uirBesoYdp
— ICC (@ICC) January 14, 2022
২১২ রানের পুঁজি নিয়ে যে টেস্ট ম্যাচ জিততে গেলে বোলারদের দুরন্ত পারফরম্যান্স লাগে। জশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সামিরা বিদেশে এর আগেও চমত্কার পারফর্ম করেছেন। সিরিজের শুরু থেকেও ফর্মে ছিলেন তাঁরা। কিন্তু কেপ টাউনের চতুর্থ ইনিংসে তাঁরা থামাতে পারলেন না প্রতিপক্ষকে। কেরিয়ারের পঞ্চম টেস্ট খেলতে নামা কিগান পিটারসেনই জয় ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন। প্রথম ইনিংসে ৭২ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচ জেতার ৮২। যে পিচে ঋষভ পন্থ, বিরাট কোহলি ছাড়া ভারতের কোনও ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতেই পারেনি, সেখানে দুই ইনিংসেই টিমকে ভরসা দিলেন পিটারসেন।
২১২ রান তাড়া করতে নেমে তৃতীয় দিনের শেষেই ২ উইকেট হারিয়ে ১০১ রান তুলে ফেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। বুমরা এবং সামি মার্কর্যাম ও এলগারকে ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠালেও পিটারসেন-রসি ভ্যান ডার ডুসেনকে নড়াতে পারেননি। ডুসেন ৪১ করে নট আউট থেকে যান। তেম্বা বাভুমা করেছেন নট আউট ৩২। চতুর্থ দিন ভারত একটাই উইকেট ফেলতে পেরেছে প্রোটিয়াদের। পিটারসেনকে ফেরত পাঠান শার্দূল ঠাকুর। কিন্তু তাও যথেষ্ট ছিল না।
ক্রিকেট বলা হয়, এক-একটা ক্যাচই ম্যাচ জেতার কাছে নিয়ে যায় টিমকে। চেতেশ্বর পূজারার মতো সিনিয়র কি সেটা বুঝতে পারেননি? প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে ৫৯ রানের মাথায় লোপ্পা ক্যাচ ফেলেন পিটারসেনের। যদি তখনই ধাক্কা দেওয়া যেত প্রোটিয়াদের, তা হলে অন্য রকম হতে পারত পরিস্থিতি। সবচেয়ে বড় কথা যে পিটারসেন লেগ স্লিপে দুরন্ত ক্যাচ নিয়ে আউট করেছিলেন পূজারাকে, সেই পিটারসেনই জীবন পেলেন পূজারার হাতে।
সিরিজ শুরুর সময় ফেভারিট ধরা হয়েছিল ভারতকে। অভিজ্ঞতার প্রাচুর্যে, সাফল্যের নিরিখে। শুধু তাই নয়, টিমের গভীরতার দিক থেকেও অনেকই এগিয়ে ছিলেন বিরাটরা। ডিন এলগার সেই অর্থে তরুণ টিম নিয়ে নেমেছিলেন ভারতের মতো টিমের বিরুদ্ধে। বাস্তবে দেখা গেল প্রোটিয়া ক্রিকেট আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। কাগিসো রাবাডা, এনগিডি লুঙ্গি, বাভুমাকে বাদ দিলে পিটারসেন, ডুয়েন অলিভিয়ের, মার্কো জেনসেনদের মতো একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার স্বপ্ন দেখাতে শুরুক করেছেন।
তা হলে কী দাঁড়াল? সোজা কথা, বিরাটের টিমেরও পরিবর্তনের সময় এসে গিয়েছে। পূজারা-রাহানেদের পিছনে রেখে সামনে তাকাতে হবে রাহুল দ্রাবিড়কে। ক্রিকেটে যদি ফর্মই শেষ কথা হবে, তা হলে রাহানে-পূজারাদের বয়ে বেড়ানো হবে কেন? শ্রেয়স আইয়ার, সূর্যকুমার যাদব, হনুমা বিহারীদের উপর আর কবে আস্থা রাখবে টিম ম্যানেজমেন্ট?
সংক্ষিপ্ত স্কোর: দক্ষিণ আফ্রিকা ২১২-৩ (পিটারসেন ৮২, ডুসেন নট আউট ৪১, বাভুমা নট আউট ৩২, এলগার ৩০, শার্দূল ১-২২, সামি ১-৪১, বুমরা ১-৫৪)