মহারাজ, প্রিন্স অব ক্যালকাটা, অফসাইডের ভগবান। ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্যাপ্টেন। লর্ডসের সেই রাজকীয় অভিষেক না হলে, এত কিছু ঘটত? প্রশ্ন থাকেই। হয়তো হত, কিছুটা অপেক্ষা বাড়ত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আত্মপ্রকাশ হয়েছিল অনেক অনেক আগেই। ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় বেনসন অ্যান্ড হেজেস ওয়ার্ল্ড সিরিজে প্রথম বার জাতীয় দলে সুযোগ সৌরভের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ক্রিকেট দিয়ে অভিষেক। যদিও সেই টুর্নামেন্টে নজর কাড়তে ব্যর্থ সৌরভ। দল থেকে বাদ পড়েন। জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন হয়েছিল ৪ বছর পর। বাকিটা ইতিহাস। কিন্তু টেস্ট অভিষেকের আগে আরও গল্প রয়েছে!
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের টেস্ট অভিষেকের নেপথ্যে রয়েছেন নভজ্যোৎ সিং সিধু! তবে সেটা প্রত্যক্ষ ভাবে বলা যায় না। ইংল্যান্ডে প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো খেলছিলেন সৌরভ। টেস্ট স্কোয়াডে জায়গা পেলেও একাদশে সুযোগ পাওয়া কঠিন ছিল সৌরভের। দলে একঝাঁক প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার। ফলে সৌরভের মতো বেশ কয়েকজন ওয়েটিং লিস্টেই ছিলেন। এরপরই একটি ঘটনা দরজা খোলে সৌরভের জন্য।
সে সময় ভারতীয় দলের অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিন। অন্য দিকে, দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য নভজ্যোৎ সিং সিন্ধু। তবে টিম ম্যানেজেন্ট এবং দলের অন্দরের কিছু ঘটনায় ক্যাপ্টেন আজহারউদ্দিনের সঙ্গে ব্যাপক মনোমালিন্য হয় সিধুর। পরস্থিতি কার্যত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এর ফল, সফরের মাঝপথেই দল ছেড়ে ভারতে ফিরে আসেন নভজ্যোৎ সিং সিধু। আর এটিই শাপে বর হয়ে দাঁড়ায়।
বার্মিংহ্যামে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৮ উইকেটে হেরেছিল ভারত। ঘুরে দাঁড়াতে দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে একাধিক পরিবর্তন করে টিম ম্যানেজমেন্ট। মহম্মদ আজহারউদ্দিন পরিকল্পনা বদলাতে বাধ্য হন। লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টে অভিষেক হয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং রাহুল দ্রাবিড়ের। লর্ডসে টেস্ট অভিষেকেই সেঞ্চুরির ইনিংস সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। আর এক অভিষেককারী রাহুল দ্রাবিড় ৯৫ রান করেন।
ট্রেন্টব্রিজে সিরিজের তৃতীয় তথা সৌরভের দ্বিতীয় টেস্টেও সেঞ্চুরি করেন। সঙ্গে তিন উইকেটও নেন। ম্যাচের সেরার পুরস্কারও জেতেন সৌরভ। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। কেরিয়ার এগতে থাকে মসৃণ ভাবেই। এর জন্য নভজ্যোৎ সিং সিধুর কাছে কৃতজ্ঞ থাকতেই পারেন সৌরভ!