করাচি: যেন বিতর্কের আগল খুলে দিয়েছেন তিনি। আর তা দিয়ে হুহু করে বেরিয়ে আসছে পাকিস্তান ক্রিকেটের (Pakistan Cricket) বহু পুরনো গল্প। যা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো। ওয়াসিম আক্রমের (Wasim Akram) বই ‘সুলতান: আ মিরর’ প্রকাশ্যে এনে ফেলেছে ধাপাচাপা দিয়ে রাখা নানা ঘটনা। অটোবায়োগ্রাফিতে আক্রম যা লিখেছেন, তা নিয়ে তীব্র আলোড়ন পড়ে গিয়েছে পাক ক্রিকেটে। সিনিয়র থেকে শুরু করে সতীর্থ ক্রিকেটারদের কার্যত মুখোশ খুলে দিয়েছেন কিংবদন্তি বাঁ হাতি পেসার। রামিজ রাজা থেকে সেলিম মালিক— অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন অনেকেই। এই দুই সতীর্থ সম্পর্কে নিজের বইয়ে কী লিখেছেন আক্রম? তুলে ধরল TV9 Bangla।
নিজের বইতে খুল্লামখুল্লা অনেক কিছুই লিখেছেন আক্রম। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, নেশায় ডুবে যাওয়া, হতাশা, প্রথম স্ত্রী হুমার মারা যাওয়া, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো, সাফল্য— সব কিছুই খোলামেলা ব্যাখ্যা করেছেন। ঠিক তেমনই তুলে ধরেছেন পাকিস্তান টিমের অন্ধকারময় দিকগুলোও। রামিজ রাজার সঙ্গে দীর্ঘদিন খেলেছেন আক্রম। ১৯৯২ সালে পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী টিমের সদস্যও ছিলেন এই দু’জন। সেই রামিজের সঙ্গে আক্রমের সম্পর্ক যে অত্যন্ত খারাপ ছিল, তার প্রমাণ মিলেছে একটি ঘটনার মধ্যে দিয়ে। রামিজের বাবা ছিলেন পুলিশ কমিশনার। পাকিস্তানের বিখ্যাত অ্যাটচিসন কলেজ থেকে পাস করেছিলেন রামিজ। সমাজের প্রভাবশালী মহলের অন্তর্গত হওয়ার দরুণ রামিজ যে কিছু বাড়তি সুবিধা টিমে পেতেন, তা খোলসা করে দিয়েছেন আক্রম। ব্যাপারটা কেমন?
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটা টেস্ট ম্যাচ তুলে ধরেছেন প্রাক্তন পাক পেসার। ‘দ্বিতীয় দিনের শুরুতে প্রথম ওভার বল করতে গিয়েছিল আসিফ ফরিদি। দ্বিতীয় বোলার হিসেবে নতুন বল পেয়েছিলাম। তখন নিউজিল্যান্ড ক্যাপ্টেন জন রাইট ক্রিজে। আমার বলে খোঁচা দিয়েছিল ও। দ্বিতীয় স্লিপে ক্য়াচ যায়। আর সেটা মিস করে রামিজ। ওর বাবা পুলিশ কমিশনার ছিল, অ্যাটচিসন কলেজে পড়ত, যে কারণে ও টিমে বাড়তি সুবিধা পেত। ও যা ক্যাচ ধরেছে, মিস করেছে তার থেকে অনেক বেশি।’
রামিজ বিতর্ক তাও ঠিক আছে, কিন্তু সেলিম মালিককে নিয়ে যা বলেছেন আক্রম, তাতে নতুন করে আগুন জ্বলেছে পাক ক্রিকেটে। আক্রমের দাবি, নিজের ক্যাপ্টেন্সির তিনটে বছর আক্রমদের মতো জুনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে জঘন্য ব্যবহার করতেন। আক্রম বলেছেন, ‘আমি টিমের জুনিয়র হওয়ার পূর্ণ সুযোগ তুলত সেলিম মালিক। নেতিবাচক, স্বার্থপর একটা লোক। চাকরের মতো ব্যবহার করত আমার সঙ্গে। ওর গা-হাত-পা টিপে দেওয়ার জন্য বাধ্য করত। জামাকাপড়, জুতো ধুয়ে দিতে হত।’