দুবাই: ছিল রুমাল, হয়ে গেল জ্যাভলিন! কিংবা, ছিল জুতো, হয়ে গেল মোবাইল! মাঠে যদি এমন ম্যাজিক শো দেখা যায়? না, কষ্ট কল্পনা নয়, দক্ষিণ আফ্রিকান এক স্পিনার এমন প্রায়ই করে দেখান। শুধু উইকেট পাওয়ার অপেক্ষা। আর সেটা পেলেই সেলিব্রেশনে চমক। টি-টোয়েন্টিতে চলতি বছর দারুণ ফর্মে আছেন। দেশের হয়ে তিরিশের উপর উইকেট নিয়েছেন। শনিবার দুপুরে তাবরেজ শামসি নামের এক চায়নাম্যানের ম্যাজিক শো-র অপেক্ষায় বিশ্ব ক্রিকেট!
এতদিন শো-ই তো ছিল। বাইশ গজে গিয়ে দাঁড়ানো মানে ফুল এন্টারটেইনমেন্ট। বিনোদনের ফুলঝুরি ছুটত ব্যাট থেকে। এই চার তো এই ছয়। কাট, পুল, সুইপে ভরপুর। তিনি থাকা মানে দু-চারটে বল হারানোও আশ্চর্যের নয়। কিন্তু এখন যা ফর্ম, সব আশ্চর্যই লাগছে। ডেভিড ওয়ার্নার কি রানে ফিরবেন? তাবৎ অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞরা, ভক্তরা খুঁজছেন প্রশ্নের উত্তর। আইপিএলের সময় ক্যাপ্টেন্সি হারিয়েছিলেন। ফর্মের গেরোয় টিমের জায়গাটুকুও। ওয়ার্নার কি ফিরে পাবেন নিজের হারানো সাম্রাজ্য?
না, ফর্মের খাতায় চোখ বোলালে অস্ট্রেলিয়াকে দূরদূরান্ত পর্যন্ত রাখা যাবে দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) প্রতিপক্ষ হিসেবে। শেষ ১০টা ম্যাচের ৯টাতে জিতেছেন কুইন্টন ডি’কক, তেম্বা বাভুমারা। আর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, স্টিভ স্মিথের টিম? ১০ ম্যাচে জয় ৮টাতে। তার থেকেও বড় তথ্য হল, টিমের অধিকাংশ তারকাই দীর্ঘদিনে দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেননি। নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটার উঠে আসছে না। স্মিথদের যে প্রজন্মে আটকে আছে অস্ট্রেলিয়া (Australia), তাতেও ধারভার কমেছে।
ক্রিকেট কি শুধুই তথ্য নির্ভর? মোটেও না। ক্রিকেট আসলে চ্যাম্পিয়নদের খেলা। ম্যাচ উইনারদের দুনিয়া। হারিয়ে যেতে যেতে ফিরে আসার কত গল্পই তো শোনায়! ওয়ার্নার কিংবা স্মিথদের ব্যাটে সেই ঝলক থাকবে না? থাকতেই পারে। কিন্তু টিম হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা কিন্তু বেশ ভয়ঙ্কর। এই বিশ্বকাপের ফেভারিট বাছতে গিয়ে ভারত, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের নাম ভাসাচ্ছেন প্রাক্তনরা। কিন্তু কেউই প্রোটিয়াদের গুরুত্ব দিচ্ছে না। এটাই শাপে বর হয়ে যেতে পারে ডেভিড মিলার, কেশব মহারাজদের। এর আগে যতবারই দক্ষিণ আফ্রিকাকে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন ধরা হয়েছে, আশ্চর্যজনক ভাবে চাপের কাছেই হার মেনেছে তারা।
অস্ট্রেলিয়া অবশ্য আমিরশাহি থেকেই শুরুটা করতে চাইছে। অ্যারন ফিঞ্চের টিম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কখনওই চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। আগামী বছর তাদের ঘরের মাঠে কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপ। এই টুর্নামেন্টে যদি ভালো কিছু করতে পারে, তা হলে কিন্তু পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারে। তবে শনিবারের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া যদি পাঁচ বোলারে যায়, তা হলে কিন্তু স্মিথ, মার্কাস স্টোইনের মধ্যে কাউকে বসতে হতে পারে।
আবু ধাবির উইকেট অবশ্য ভ্যাবচ্যাকা নয়। বলও খুব একটা থমকে আসবে না। বরং রানের বন্যা বইতে পারে। এবং গত কয়েকটা ম্যাচের হিসেব ধরলে, রান তাড়া করবে যে টিম, তাদেরই জেতার সম্ভাবনা বেশি। তবে দুপুরের খেলায় আবু ধাবির তীব্র গরম কিন্তু ভাবাবে দুটো টিমকেই।
এই টুর্নামেন্ট শামসির হতেই পারে। এই বছর সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৩৭টা উইকেট নিয়েছেন চায়নাম্যান। এই বিশ্বকাপ হতে পারে ম্যাক্সিরও। আইপিএলের সময় দুরন্ত ফর্মে ছিলেন। চার নম্বরে নেমে বড় রান দিয়েছেন আরসিবিকে। এ বার হলুদ জার্সিতে মেলে ধরতে চাইবেন নিজেকে। তবে, ওয়ার্নার যদি ভালো শুরু দিতে না পারেন, তা হলে কিন্তু অস্ট্রেলিয়াকে চাপে পড়তে হবে।