দুবাই: বরুণ চক্রবর্তীর ক্যারম বল। লকি ফার্গুসনের গতি। শুভমন গিল স্কিল আর আন্দ্রে রাসেলের ঝড়। বৃহস্পতিবার যদি আমিরশাহিতে পয়েন্ট ফলাতে হয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে, তা হলে কেকেআরের এই চার ক্রিকেটারকে থামাতে হবে। পারবে মাহেলা জয়বর্ধনের টিম? তার থেকেও বড় প্রশ্ন, ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা ও হার্দিক পান্ডিয়া কি ফিট?
বিরাট কোহলির আরসিবিকে উড়িয়ে ৯২ রানে দিয়ে আইপিএলের (IPL) দ্বিতীয় পর্ব শুরু করেছে ইওন মর্গ্যানের টিম। শুধু জয় নয়, শুভমন গিলের ফর্মে ফেরাটাও স্বস্তি দিচ্ছে তাঁকে। সেই সঙ্গে ভেঙ্কটেশ আইয়ার নামক এক বাঁ হাতি ওপেনারের হঠাৎ উত্থান বেগুনি জার্সিকে ছন্দ ফিরিয়ে দিয়েছে। দুই ওপেনারের জোরেই ১০ ওভারে ম্যাচ জিতে গিয়েছিল কেকেআর। শুধু তাই নয়, নাইটদের বোলিং ইউনিটও দারুণ পারফর্ম করছে।
জয়ের হিসেবে চোখ রাখলে দেখা যাবে, ৮ ম্যাচে মাত্র ৪টে জিতেছে মুম্বই। কেকেআর সেখানে ৩টে জিতেছে। আগের পর্ব কী হয়েছে, তা নিয়ে কেউই মাথা ঘামাচ্ছেন না। আমিরশাহির এই পর্ব থেকেই যেন খেলার গতিপ্রকৃতি পাল্টাতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার রাতে যেমন লোকেশ রাহুলের পঞ্জাবকে শেষ ওভারে হারিয়ে হঠাৎ করে হিসেবে ফিরেছে সঞ্জু স্যামসনের রাজস্থান। কেকেআর ঠিক তেমনই। যদি মুম্বইকে হারাতে পারে মর্গ্যানের টিম, তা হলে কিন্তু পুরো ছবিটাই পাল্টে যাবে। প্লে-অফে যাওয়ার অঙ্ক সাজাতে পারবেন কার্তিকরা। সেই তাগিদ নিয়েই মুম্বই ম্যাচে নামছেন নাইটরা।
পাঁচবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন মুম্বই কিন্তু এ বার কিছুটা হলেও কোণঠাসা। সেই প্রত্যাশিত ফর্ম দেখা যায়নি কারওরই খেলায়। তার থেকেও বড় কথা হল, প্রথম সারির ব্যাটসম্যানরা কেউই তেমন ছন্দে নেই। তার উপর রোহিত না থাকায় চাপ বাড়ছে। রোহিত যদি নাইট ম্যাচে ফেরেন, তা হলে কিন্তু অন্য রকমও হতে পারে। হার্দিকের উপর কিন্তু চাপ বাড়ছে। শুধু ফিরলেই হবে না, নিজেকে প্রমাণও করতে হবে।
শুধু ব্যাটিং নয়, মুম্বইয়ের সবচেয়ে বড় চাপ বোলারদের ফর্ম। টি-টোয়েন্টিতে এমনিতেই বোলাররা যে কোনও মুহূর্তে চার-ছয়ের শিকার হন। ভালো বলও বড় রানে পাল্টে যায়। সেই পরিস্থিতিতে বুমরাদের মতো বোলাররা যদি পাল্টা চাপ না দেন, তা হলে বিপদে পড়ে টিম। মুম্বইয়ের ক্ষেত্রেও তা-ই হচ্ছে। ট্রেন্ট বোল্ট, অ্যাডাম মিলনে, বুমরারা ডেথের চাপ নিতে পারছেন না। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে সেটাই দেখা গিয়েছে। ঋতুরাজ গায়কোয়াড় একাই সামলে দিয়েছিলেন মুম্বইয়ের বোলারদের। সেই সঙ্গে রাহুল চাহার, ক্রুণাল পান্ডিয়াদের মতো স্পিনাররাও ছন্দে নেই।
আইপিএলের এটাই মজা, কে যে কখন কার মুখের গ্রাস কেড়ে নেবে, কেউ জানে না। ধোনির চেন্নাই হয়তো মুম্বইকে হারিয়ে চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে রোহিতদের। কে বলতে পারে, কেকেআর ম্যাচই তাদের প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ হবে না। কোনও সন্দেহ নেই, কলকাতা বনাম মুম্বই বরাবরের মতো আরও একটা সেরা ম্যাচ হতে চলেছে।