পুনে: আদতে ছিলেন অ্যাথলিট। ২০১১ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে মহেন্দ্র সিং ধোনির (MS Dhoni) ম্যাচ জেতানো ছক্কাটা যদি না দেখতেন, তা হলে হয়তো তা-ই থাকতেন। মাহির ওই শটটা দেখার পরই আর ট্র্যাকে নামতে ইচ্ছে করেনি তাঁর। সোলাপুরের মেয়ের মনে হয়েছিল, যদি ওই রকম ছয়ই না মারতে পারেন, তা হলে আর খেলে কী লাভ! যা ভাবনা তাই কাজ। ১১ বছর পর সেই কিরণ নভগিরেই (Kiran Navgire) হয়ে উঠেছেন মেয়েদের ক্রিকেটের বিস্ফোরক ব্যাটার। ধোনির মতোই ছয় মারতে ওস্তাদ। মেয়েদের টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জার্সে হাফ সেঞ্চুরি করে হইচই ফেলে দিয়েছেন তিনি।
নাগাল্যান্ডের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেন কিরণ। মেয়েদের চ্যালেঞ্জার্সে ট্রেইলব্লেজার্সের হয়ে এটা ছিল তাঁর দ্বিতীয় ম্যাচ। তারই মধ্যে হইচই ফেলে দিয়েছেন। ভেলোসিটির বিরুদ্ধে তিন নম্বরে নামানো হয় তাঁকে। ৩৪ বলে ৬৯ রানের মারকুটে ইনিংস খেলেছেন কিরণ। যার মধ্যে রয়েছে ৫টা বিশাল ছয়। ভারতের হয়ে খেলা বোলার পুনম যাদব, সালমা খাতুন, রাজেশ্বরী গায়কোয়াড়দের বিরুদ্ধে সাবলীল ব্যাটিং করেছেন। মেয়েদের ক্রিকেটে আবির্ভাবেই এমন বিস্ফোরক ইনিংস খুব একটা দেখা যায়নি।
বিসিসিআই টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিরণ বলেছেন, ‘যখন ছয়গুলো মারি, তখন খুব ভালো লাগে। নেটে যখন প্র্যাক্টিস করি, তখনও ছয় মারার চেষ্টাই করি। আমি ধোনি স্যারের ক্রিকেট ফলো করি। বিশাল ছয় মেরে ওঁর মতোই ফিনিশার হওয়ার চেষ্টা করি।’
২০১১ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে ধোনির অপরাজিত ৯১ ভারতীয় ক্রিকেটের লোকগাথা হয়ে রয়েছে। অ্যাথলেটিক্সের পাশাপাশি খোখো, কবাডিও খেলতেন কিরণ। সোলাপুরের মীরা গ্রামে বাবাকে চাষআবাদেও সাহায্য করতেন। সেই তারই জীবন আচমকা পাল্টে গিয়েছে। কিরণ বলছেন, ‘২০১১ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে ধোনি স্যারের ওই ছয়টা দেখেছিলাম। ওটা আমার মাথায় গেঁথে গিয়েছিল। ওই ছয়টা আমাকে ভীষণ ভাবে অনুপ্রাণিত করে। তার পর থেকে আমার বারবার মনে হয়েছে, আমিও ওই রকম ছয় মারতে পারি।’
একই সঙ্গে কিরণ বলছেন, ‘আমি খুব বেশি ডট বল খেলা পছন্দ করি না। বল প্রতি রান করে টিমের জন্য একটা বড় রান তোলার চেষ্টা করি। ঘরোয়া ক্রিকেটে আমি লোয়ার অর্ডারেই বেশি ব্যাটিং করি। তবু মরসুমটা খারাপ যায়নি। ইনিংসের শুরুর দিকে আমি একটু টেনশনে ছিলাম। দ্রুত মানিয়ে নিতে পেরেছিলাম। ক্যাপ্টেন দীপ্তি শর্মা আর টিমমেটরা আমাকে প্রচুর ভরসা যুগিয়েছিল।’