মুম্বই : ঐতিহাসিক মুহূর্ত। শুধুমাত্র ভারতে মেয়েদের ক্রিকেট নিয়েই নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের আঙ্গিকেও। কয়েক ঘণ্টা পরই উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগের বোধন। উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হতে চলেছে গুজরাট জায়ান্টস ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। এর আগে ভারতে তিন দলের মেয়েদের টুর্নামেন্ট হয়েছে। সেটাকে মিনি আইপিএলও বলা হত। যদিও হাতে গোনা কয়েক ম্যাচের টুর্নামেন্টে খুব বেশি একটা লাভ হয়নি। ভারতীয় বোর্ড অনেক দিন ধরেই মেয়েদের আইপিএলের পরিকল্পনা গড়ছিল। অবশেষে এ বার সেই পরিকল্পনা বাস্তব হতে চলেছে। যদিও আইপিএলের মতো এ বারই বিভিন্ন শহরে দেখা যাবে না টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলি। ভিন্ন শহর এবং রাজ্য থেকে টিম থাকলেও ম্যাচগুলি হবে দুটি ভেনুতেই। উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগে কিছু প্রশ্নও রয়েছে। হয়তো খুব সাধারণ প্রশ্ন! অনেকেরই হয়তো জানতে ইচ্ছে করছে উত্তরগুলো! রইল বিস্তারিত TV9Bangla-য়।
এ বারও কি এই টুর্নামেন্টকে ‘মেয়েদের আইপিএল’ বলা হবে?
একেবারেই নয়। মেয়েদের ক্রিকেট, আলাদা লিগ, আলাদা নাম। আর এই টুর্নামেন্টের নাম ঠিক হয়েছে উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগ। সংক্ষেপে WPL
কতগুলি দল খেলছে টুর্নামেন্টে?
উদ্বোধনী মরসুমে পাঁচ দলের টুর্নামেন্ট হচ্ছে। যার প্রথম ম্যাচ আজই। মুম্বইয়ের দুটি ভেনু ব্রেবোর্ন স্টেডিয়াম এবং ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে হবে সব মিলিয়ে ২২টি ম্যাচ। উদ্বোধনী ম্যাচ হবে ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে। মুখোমুখি গুজরাট জায়ান্টস ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। আইপিএলের মতো ডাবল হেডারও থাকছে।
টুর্নামেন্টের ফরম্যাট কী?
খুবই জরুরি প্রশ্ন। এ বার আর হাতে গোনা ম্যাচ নয়। ক্রিকেটারদের কাছে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণের প্রচুর সুযোগ থাকছে। পাঁচটি দল পরস্পরের বিরুদ্ধে দু-বার মুখোমুখি হবে। অর্থাৎ গ্রুপ পর্বে প্রতিটি দল ৮টি করে ম্যাচ খেলবে। লিগ পর্বে সব মিলিয়ে ২০টি ম্যাচ। ফাইনাল এবং একটি কোয়ালিফায়ার/এলিমিনেটর ম্য়াচ। সব মিলিয়ে ২২টি। ফাইনাল ২৬ মার্চ।
এখানেও কি আইপিএলের মতো প্লে-অফ সিস্টেম?
পুরোপুরি নয়, তবে অনেকটা মিল রয়েছে। পাঁচ দলের মধ্য়ে গ্রুপের খেলা শেষে একেবারে শীর্ষে থাকা দল সরাসরি ফাইনালে যোগ্য়তা অর্জন করবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা দলের মধ্যে আর একটি ম্যাচ হবে। জয়ী দল ফাইনালে যাবে।
যদি শীর্ষ তিন দলের পয়েন্ট সমান হয়! সেক্ষেত্রে কী হবে?
আরও একটা জরুরি প্রশ্ন। এ ক্ষেত্রে গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জেতা দল শীর্ষস্থান দখল করবে। সেখানেও যদি টাই হয়, দেখা হবে নেট রানরেট। নেট রানরেটও একই হলে! যে দল সবচেয়ে বেশি উইকেটে নেবে লিগ পর্বে (রানআউট বাদ দিয়ে) সেই অনুযায়ী টপ থ্রি ঠিক হবে।
যদি কোনও ম্যাচ টাই হয়?
ভয় নেই, এখানে কে বেশি বাউন্ডারি মেরেছে, তা দিয়ে উইনার ঠিক হবে না (২০১৯ ওডিআই বিশ্বকাপ ফাইনালে এ ভাবেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্য়ান্ড)। যে কোনও ম্যাচে দু-দলের স্কোর সমান হলে সুপার ওভার হবে। যতক্ষণ না ফল বেরোচ্ছে সুপার ওভার চলবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য়ে সুপার ওভারেও ফল না বেরোলে দু-দলের মধ্যে পয়েন্ট ভাগ হবে। ফাইনাল কিংবা এলিমিনেটর/কোয়ার্টার ফাইনালে সুপার ওভারে ফয়সালা না হলে, লিগ পর্বে যে দল শীর্ষস্থানে শেষ করেছিল, তারা চ্য়াম্পিয়ন।
আইপিএলে একাদশে চারজন বিদেশি খেলানো যায়। উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগে একাদশে ক-জন বিদেশি খেলানো যাবে?
এখানে একটা জটিল অথচ সহজ অঙ্ক রয়েছে। আইপিএলের মতোই চারজন বিদেশি থাকবে একাদশে। ব্য়তিক্রম, কোনও স্কোয়াডে যদি আইসিসি সহযোগী দলের প্লেয়ার থাকে, সেই দল বাড়তি একজন বিদেশি অর্থাৎ আইসিসি সহযোগী দেশের ক্রিকেটারকে খেলাতে পারবে। সব মিলিয়ে পাঁচ বিদেশি খেলানোর ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র দিল্লি ক্য়াপিটালসের। কেন না, উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগে সহযোগী দেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তারা নরিস। এই বাঁ হাতি পেসারকে নিয়েছে দিল্লি ক্য়াপিটালস। একমাত্র দিল্লিই পারবে পাঁচ বিদেশি নিয়ে একাদশ গড়তে।
আশা করা যায় হবে না, তবু যদি বৃষ্টি হয়?
সেক্ষেত্রে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ম্য়াচের ফয়সালা হবে। এর জন্য় অবশ্য় পাঁচ ওভারের ম্যাচ সম্পূর্ণ হওয়া বাধ্য়তামূলক। না হলে, পয়েন্ট ভাগাভাগি।