কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়
চব্বিশ ঘণ্টা আগে বাংলার রঞ্জি (Ranji Trophy) টিমে ফেরানো হয়েছিল তাঁকে। চব্বিশ ঘণ্টা পর সেই তাঁকে নিয়েই তীব্র বিতর্ক। পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে, ঋদ্ধিমান সাহাকে (Wriddhiman Saha) হয়তো বাংলার হয়ে আর কখনও খেলতে দেখা যাবে না। তিনি যে বাংলা ছাড়তে চান, সিএবি (CAB) প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়াকে বলে দিয়েছেন। আইপিএল (IPL 2022) খেলে ফিরে নো-অবজেকশন লেটার নেবেন সিএবি থেকে, এও বলেছেন। আইপিএলে দুরন্ত খেললেও কেন ঋদ্ধি বাংলার হয়ে আর খেলতে চান না? ভারতীয় টিম থেকে বাদ পড়ার রঞ্জি থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। সে সময় বলেছিলেন, আপাতত তিনি বিরতি নিতে চান লাল বলের ক্রিকেট থেকে। ওই সময়ই সিএবির এক যুগ্ম সচিব প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন ঋদ্ধির দায়বদ্ধতা নিয়ে। তা এখনও ভোলেননি ‘অভিমানী’ উইকেটকিপার। সেই কারণেই বাংলা ছাড়তে চান শিলিগুড়ির পাপালি।
এই মুহূর্তে গুজরাত টাইটান্সের (Gujarat Titans) হয়ে আইপিএল খেলতে ব্যস্ত ঋদ্ধি। তাঁর স্ত্রী রোমি মিত্র পুরো ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর স্পষ্ট মন্তব্য, ‘সিএবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মঙ্গলবার সকালে কথা বলার সময়ই ঋদ্ধি পরিষ্কার নিজের মনোভাব জানিয়ে দিয়েছে। এতদিন বাংলার হয়ে খেলার পর দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, এটা ও মেনে নিতে পারছে না। কোনও অভিযোগ থেকে নয়, বরং বলা উচিত খানিকটা মন খারাপ নিয়েই ও বাংলা ছাড়তে চাইছে। ওর মনে হচ্ছে, নিজেকে আর মেলে ধরতে পারবে না বাংলার হয়ে। সেই কারণেই বাংলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত ও জানিয়ে দিয়েছে সিএবি প্রেসিডেন্টকে।’
পরিস্থিতি কি মেটানো সম্ভব নয়? রোমির বক্তব্য, ‘যে সময় সিএবির ওই কর্তা ঋদ্ধির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছিলেন, তখন সিএবি প্রেসিডেন্ট শহরে ছিলেন না। ফলে তখন এই ব্যাপারটা নিয়ে কথা হয়নি। তার পর ঋদ্ধি আইপিএল খেলতে চলে যায়। গতকাল ওকে নকআউট খেলার জন্য রঞ্জি টিমে নেওয়া হয়েছে। সেটা জানানোর সময়ই সিএবি প্রেসিডেন্টকে নিজের মনোভাব পরিষ্কার করে দিয়েছে। এতদিন ও নানা টিমের হয়ে খেলেছে। কেউ কখনও দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেনি কখনও। এটাই ওকে ভীষণ ভাবে আহত করেছে।’
ভারতীয় টিম থেকে বাদ পড়ার পর ঋদ্ধিমান নিজেকে প্রমাণ করেছেন আইপিএলে। গুজরাতের হয়ে ওপেন করতে নেমে বেশ কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন। শুধু তাই নয়, উইকেটের পিছনেও নির্ভরযোগ্য পারফর্ম করেছেন তিনি। টিমের মেন্টর গ্যারি কার্স্টেন ঋদ্ধিকে নিয়ে বলে দিয়েছেন, তিনি টিমের অন্যতম সম্পদ। সেই ঋদ্ধিমান যদি বাংলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত অনড় থাকে, সিএবির কাছে তা হবে বেশ চাপের ব্যাপার। সিএবির যুগ্মসচিব দায়বদ্ধতার নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরও কেন প্রেসিডেন্টন তা মেটানোর জন্য আসরে নামলেন না, এ নিয়ে কথা উঠতে শুরু করেছে ময়দানে। ঠান্ডা স্বভাবের এবং নীরব থেকে মন দিয়ে ক্রিকেট খেলে যাওয়া ঋদ্ধিকে খোদ নিজের রাজ্যের ক্রিকেট সংস্থা এই ‘পুরস্কার’ কেন দিল, তা নিয়ে পাল্টা বিতর্কের ঝড় উঠছে।
আরও পড়ুন: India vs South Africa: ভারতের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল ঘোষণা দক্ষিণ আফ্রিকার