রাজকোট : পিছিয়ে থেকে ঘুরে দাঁড়ানো। ভারতীয় দলই (Indian Cricket Team) শুধু নয়, দীনেশ কার্তিক (Dinesh Kartik) এবং হার্দিক পান্ডিয়ার (Hardik Pandya) ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়েছে। কয়েক মাস আগেও এই দুজন ভারতীয় দলের ভাবনায় ছিল না। আইপিএলে অনবদ্য পারফরম্যান্সের জেরে দুজনই জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ০-২ পিছিয়ে ছিল ভারত। বিশাখাপত্তনম, রাজকোটে জয়। সমতা ফিরিয়েছে। এবার নজর সিরিজ জয়ে। রাজকোটের জয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছেন দীনেশ কার্তিক ও হার্দিক পান্ডিয়া। ম্যাচ শেষে হার্দিক-কার্তিকের কথায় উঠে এল নানা কথা। কোন মাইন্ডসেট নিয়ে ব্যাট করেছেন কার্তিক? হার্দিকের প্রশ্নে কার্তিক বলছেন, ‘ভাইজাগ থেকে রাজকোটের বিমানে তোমার সঙ্গে কথা হয়েছিল, কীভাবে এই ধরনের পরিস্থিতিকে খেলা যায়। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে এই সচেতনতা থাকতে হবে, কার বোলিংয়ে আক্রমণ করা যায়, কার বোলিংয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তোমার সঙ্গে ব্যাটিং করায় আরও সুবিধা হয়েছে। শুরুতে আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলাম না। কিন্তু পরে যে বিষয় গুলো আমরা আলাচনা করেছি, মজা করেছি, বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেছি। আমাদের দুজনের জন্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। ২-১ পিছিয়ে ছিলাম সিরিজে, তারপর এভাবে দাপুটে ক্রিকেট খেলা। শুরুতে কিন্তু আমাদের চাপে ফেলে দিয়েছিল। সে কারণেই আমাদের জুটি গড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছিল। ওদের উপর পালটা চাপ দেওয়াই লক্ষ্য ছিল। আমরা যেভাবে ইনিংস এগিয়ে নিয়েছি সেটা জরুরি ছিল। আমরা খুব এনজয় করেছি।’
বর্তমান দীনেশ কার্তিকে লোকে যা দেখছে, আগের সঙ্গে কী পার্থক্য। কী পরিবর্তন করেছে দীনেশ কার্তিক। আমি নিজেও তোমাকে দেখেছি প্রচণ্ড পরিশ্রম করতে। নিজের মানসিকতায় কী বদল এনেছো? ‘আমি একটা জিনিস ভেবে নিয়েছি, এই বিশ্বকাপে খেলতেই হবে। সেটাকে পাখির চোখ করেই যাবতীয় প্রস্তুতি সেরেছি। এখনও সেটাই করে যাচ্ছি। দল থেকে বাদ পড়ার জ্বালা খুব ভালো বুঝি। দেশের হয়ে খেলা কতটা মূল্যবান সেটাও খুব ভালো ভাবে উপলব্ধি করেছি। আমি বিশেষ কিছু করতে চেয়েছিলাম। সৌভাগ্যক্রমে আরসিবি আমাকে সেই প্লাটফর্ম দিয়েছে। আমি এই ভূমিকা উপভোগ করছি। ফিনিশারের ভূমিকার জন্য নিয়মিত অনুশীলন করেছি, পরিশ্রম করেছি। জাতীয় দলেও কোচ, অধিনায়ক আমাকে সেই সুযোগ দিয়েছে৷ আমি সেই মানুষটা হতে চাই, যে দলের জয়ে অবদান রাখতে পারবে। পরিস্থিতি যাই হোক সেই অনুযায়ী বিশেষ কিছু করতে চাই। দীর্ঘদিন বাইরে থেকে দলটাকে দেখেছি। দলে জায়গা পাওয়া কতটা কঠিন, টের পেয়েছি। দলের মধ্যে এই যে সুস্থ প্রতিযোগিতা। এত্ত প্রতিভা দলের মধ্যে। দলের মধ্যে থাকা, প্লেয়ারদের সঙ্গে সময় কাটানো, তারুণ্যের স্ফূর্তি যেমন উপভোগ করছি, তেমনই ওদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার চেষ্টা করছি।’
এরপর হার্দিক বলেন, ‘এবার একটা সিরিয়াস কথা বলি, তুমি অনেক জুনিয়র ছেলেকে প্রেরণা দিয়েছো। আমার এখনও মনে পড়ে, তোমার সঙ্গে সেই আলোচনা। সে সময় ক্রিকেটের বাইরে তুমি। আইপিএল কিংবা জাতীয় দলের ভাবনাতেও ছিলে না। তুমি একটা জিনিস বারবার বলেছিলে, তোমার একমাত্র লক্ষ্য ফের দেশের হয়ে খেলা। তোমাকে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে দেখা আমার মতো অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা। সকলেই তোমার থেকে শিখতে পারছে।‘