কলকাতা: আইপিএল অভিষেকে চ্যাম্পিয়ন, পরের বার রানার্স। হার্দিক পান্ডিয়ার ক্যাপ্টেন্সিতে আবির্ভাবেই অনবদ্য পারফর্ম করেছিল গুজরাট টাইটান্স। টানা দ্বিতীয় ট্রফি জেতারও সুযোগ ছিল তাদের কাছে। গত সংস্করণের আইপিএল ফাইনাল বৃষ্টিতে রিজার্ভ ডে-তে গড়ায়। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ শেষ বলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় চেন্নাই সুপার কিংস। এ বার হার্দিক পান্ডিয়াকে রিটেন করলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ছবিটা পাল্টে যায়। ট্রেডিংয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে যোগ দেন হার্দিক। এরপরই প্রশ্ন উঠছিল, টাইটান্সকে নেতৃত্ব কে দেবেন? দৌড়ে ছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিজ্ঞ অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তেমনই হার্দিকের অনুপস্থিতিতে অতীতে টাইটান্সকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রশিদ খানও। যদিও কোনও জল্পনা না রেখে তরুণ ওপেনার শুভমন গিলকে অধিনায়ক ঘোষণা করে দিয়েছে শুভমন গিল। এই সিদ্ধান্তে যেমন আশা রয়েছে, তেমনই আশঙ্কাও। বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
উইলিয়ামসন কিংবা রশিদ খানের মধ্যে কাউকে কেন ক্যাপ্টেন করা হল না? এক্ষেত্রে যুক্তিও রয়েছে। বিদেশি ক্রিকেটারদের ক্যাপ্টেন করলে একটা সমস্যা থাকেই। অনেক সময়ই পিচ এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী কম্বিনেশন বেছে নিতে হয়। কোন ম্যাচে কে কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে, সেই অনুযায়ী বিদেশি প্লেয়ারদের একাদশে রাখা হয়। কারণ, মাত্র চারজন বিদেশিকেই একাদশে খেলানো যাবে। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে বিদেশি ক্রিকেটারকে নামাতে হলে, প্রথম একাদশে রাখতে হবে তিনজন বিদেশি। ভারতীয় প্লেয়ারদের ক্ষেত্রে এই জটিল নিয়ম নেই।
কোনও ম্যাচে হতেই পারে, মন্থর পিচ, ইনিংস হোল্ড করার জন্য অভিজ্ঞ ব্যাটার প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে একাদশে তিন বিদেশি রেখে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নামানো যেতে পারে কেন উইলিয়ামসনকে। আবার কোনও বিদেশি বোলার প্রয়োজন হলে, তাঁকেও। ছ’জন বিদেশি প্লেয়ারকে রিটেন করেছে টাইটান্স। নিলামে আরও দুই বিদেশি প্লেয়ার সই করানোর সুযোগ রয়েছে। তাই সহজ করে বলা যায়, কেন উইলিয়ামসন কিংবা রশিদ খান প্রতি ম্যাচেই প্রথম একাদশে থাকবেনই, গ্যারান্টি নেই।
শুভমন গিলের ক্ষেত্রে এই আশঙ্কা নেই। ফিট থাকলে, একাদশে তাঁর জায়গা নিশ্চিত। টাইটান্সের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার শুভমন। গত মরসুমে টুর্নামেন্টের সর্বাধিক স্কোরার হিসেবে অরেঞ্জ ক্যাপও জিতেছেন। তিনটি সেঞ্চুরি করেছিলেন। প্রায় ৯০০ রান। তাঁকে বাদ দিয়ে একাদশ ভাবাই যায় না। আর নেতৃত্বের ক্ষেত্রে বলা যায়, ভবিষ্যতের জন্যই প্রস্তুত করা হচ্ছে শুভমনকে। গাইড করার জন্য দলে অনেক সিনিয়র প্লেয়ার রয়েছেন। ভুললে চলবে না মেন্টর আশিস নেহরার কথাও। দায়িত্ব এবং সময় পেলে শুভমন একজন সফল অধিনায়ক হয়ে উঠতেই পারেন।
তাহলে আশঙ্কা কিসের? বাড়তি দায়িত্ব অনেক সময় নেতিবাচক হয়েও দাঁড়ায়। নেতৃত্বের প্রভাব পড়ে ব্যাটিংয়ে। নেতৃত্ব এবং ব্যাটিং সমান্তরালে চালিয়ে যাওয়া অনেক তারকা ক্রিকেটারের ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। শুভমনের ক্ষেত্রেও এমন হবে না, সেই গ্যারান্টি দেওয়া যায় না! নেতৃত্বের চাপে তাঁর ব্যাটিংয়ে মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটবে না তো? এই প্রশ্নও কিন্তু থাকছে। আর মাঠের সিদ্ধান্ত যে তাঁকেই নিতে হবে! অতীতে দলীপ ট্রফি এবং দেওধর ট্রফিতে নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আইপিএলের মতো বড় টুর্নামেন্টে প্রথম বার নেতৃত্ব দেবেন। গুজরাট টাইটান্স ‘শুভ শুরুয়াত’ এর অপেক্ষায়।