মিস্টার বিন (Mr Bean) কে? একশো শতাংশ লোক বিন্দুমাত্র না ভেবে উত্তর দেবেন, কেন রোয়ান অ্যাটকিনসন! এই উত্তরই গুলিয়ে দেবে সব কিছু। তা হলে আর পাকিস্তান-জিম্বাবোয়ে (Pakistan vs Zimbabwe) ম্যাচের টুইটার যুদ্ধ মালুম হবে না। ঠিক যেমন বোঝা যাবে না, কেন এই বিশ্বকাপের বাইশ গজের লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়লেন খোদ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট। যত কাণ্ড ‘নকল’ মিস্টার বিনকে নিয়ে! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাবর আজমের পাকিস্তানকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে জিম্বাবোয়ে (Zimbabwe)। এত দিনের নিরুত্তাপ একটা ম্যাচ কেন আগুনে হয়ে উঠল পারথে? এটা বুঝতে হলে খুঁজতে হবে সেই মিস্টার বিনকে। ম্য়াচের আগেই থেকে যাঁকে নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিলেন জিম্বাবোয়ের সমর্থকরা। ম্যাচ জেতার পর টুইটারে যা নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছেন তাঁরা। পুরো ঘটনা তুলে ধরল TV9 Bangla।
নকল মিস্টার বিন আজকের নয়, ৬ বছর আগের এক ঘটনা। জিম্বাবোয়ের হারারেতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন পাকিস্তান কমিডিয়ান আসিফ মহম্মদ। যাঁকে মিস্টার পাক বিন বলে ডাকা হয়। অনেকটা আসল মিস্টার বিন অর্থাৎ রোয়ান অ্যাটকিনসনের মতোই দেখতে। সেখানে গিয়ে তিনি যে অনুষ্ঠান করেন, তা অনেকেরই নিম্ন রুচির মনে হয়েছিল। যা অনেকেই আজও ভুলতে পারেননি। টুইটারেই এনগুগি চাসুরা নামের এক জিম্বাবোয়ান লিখেছেন, ‘একটা কৃষিভিত্তিক অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই পাকিস্তান থেকে পাঠানো হয়েছিল পাক বিনকে। ওই স্থানীয় অনুষ্ঠানে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন তিনি যে, পরিবারের সামনে আমরা বিব্রত হয়ে পড়েছিলাম।’
সেই নকল মিস্টার বিনই এ বার ঢুকে পড়েছিলেন পাকিস্তান-জিম্বাবোয়ে ম্যাচে। পাকিস্তানের প্রতি এতদিনে যেন সব রাগ উগরে দিয়েছে জিম্বাবোয়ে। ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে পাকিস্তানের টুইটার হ্যান্ডল থেকে টিমের প্র্যাক্টিসের একটা ছবি পোস্ট করা হয়। তারই রিপ্লাইয়ে চাসুরা পাল্টা লিখেছেন, ‘আমরা জিম্বাবোয়েনরা তোমাদের কোনওদিন ক্ষমা করব না। আসলের বদলে নকল মিস্টান বিন দিয়েছিলে। যাবতীয় ক্ষোভ মিটিয়ে নেব এ বার। শুধু প্রার্থনা করছি, বৃষ্টি যেন তোমাদের বাঁচিয়ে না দেয়।’ জিম্বাবোয়ে জেতার পর এই পোস্টই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে টুইটারে। এতেই শেষ নয়, এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছেন দুই দেশের দুই রাষ্ট্রপ্রধানও।
জিম্বাবোয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন এমনানগাগওয়া টুইটারে লিখেছেন, ‘দুরন্ত জয় পেল জিম্বাবোয়ে। টিমকে অভিনন্দন। পরের বার আসল মিস্টার বিনকে পাঠানো হোক।’ এতে যে পাকিস্তান অত্যন্ত অস্বস্তিতে পড়ে যায়, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ টুইটারে লেখেন, ‘হয়তো আমাদের আসল মিস্টার বিন নেই। কিন্তু আমাদের ক্রিকেট স্পিরিটরা রয়েছে। আর সেই সঙ্গে, আমাদের পাকিস্তানিদের প্রত্যাবর্তন করার বদ অভ্যেস রয়েছে।’
নকল মিস্টার বিনকে আবার ভালো করে চেনেন সইদ আফ্রিদির মতো প্রাক্তন ক্রিকেটারও। বৃহস্পতিবারের ম্যাচে পাকিস্তানের একটি চ্যানেলে তিনি ছিলেন প্যানেলিস্ট। আসিফ মহম্মদের সঙ্গে একটা বিজ্ঞাপন করেছিলেন তিনি। আফ্রিদি টিভি শোয়ে বলেছেন, ‘আমি ওঁকে চিনতাম। প্রায় মিস্টার বিনের মতো দেখতে। প্রথম বার দেখে তো আমি চমকে গিয়েছিলাম। ওঁর সঙ্গে একটা অ্যাডও করেছিলাম। আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছি না, উনি যদি ওঁর মতো কোথাও অনুষ্ঠান করে অর্থ রোজগার করেন, তাতে সমস্যা কোথায়?’
সমস্যা কোথাও নেই। কিন্তু টুইটারে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়া জিম্বাবোয়ের লোকজন এখনও ভুলতে পারেননি সেই মিস্টার বিনকে। পাকিস্তানকে হারিয়ে এতদিনে যে বদলা নিলেন তাঁরা!