দোহা: ২৪ বছর পর ফুটবল বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় বেলজিয়ামের। লুকাকু, হ্যাজার্ড, কেভিন ডি ব্রুইনরা পারলেন না রেড ডেভিলদের কাতার বিশ্বকাপের নকআউটে নিয়ে যেতে। ২০১৪ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলেছে বেলজিয়াম। বৃহস্পতিবারের ম্যাচে শর্ত ছিল, ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপ ‘এফ’ নিজেদের শেষ ম্যাচে জিততে হবে রেড ডেভিলদের। ড্র করলেও অবশ্য অপর ম্যাচে মরক্কোর বিরুদ্ধে কানাডার জয় প্রয়োজন ছিল। বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা দলটি নিজেদের ম্যাচটাই জিততে পারল না। ক্রোটদের সঙ্গে ০-০ ড্র। অন্যদিকে কানাডাকে ২-১ গোলে হারিয়ে মরক্কোর ইতিহাস। ৭ পয়েন্ট নিয়ে এফ গ্রুপের শীর্ষে থেকে নকআউটে পৌঁছে গেল তাঁরা। সব মিলিয়ে গ্রুপ পর্বেই শেষ হয়ে গিয়েছে বেলজিয়ামের বিদায়। ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্স হয়ে শেষ ষোলোয় লুকা মদ্রিচরা।
বিশ্বকাপে চমকে দিয়েছে আফ্রিকার দেশ মরক্কো। বেলজিয়াম সমর্থকদের হা হুতাশের দিন বাঁধভাঙা উদযাপন মরোক্কান শিবিরে। ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপের নকআউটে তারা। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে প্রথমবার নকআউটে পা রেখেছিল দেশটি। তারপর বিশ্বকাপের মঞ্চে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মধ্য প্রাচ্যের দেশ কাতারে ৩৬ বছরের আগল ভেঙে বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ের শিষ্যরা। গ্রুপ পর্বে বেলজিয়ামকে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়েছিল মরক্কো। সেদিন থেকেই পরের রাউন্ডে যাওয়ার স্বপ্ন বুনতে থাকেন হাকিম জিয়েচরা। স্বপ্ন পূরণ করতে হলে শেষ ম্যাচে কানাডাকে হারানো বা ড্র করলেই হত। সেই লক্ষ্যে ম্যাচের প্রথম থেকেই ঝড় তোলে তারা। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই কানাডার গোলরক্ষক মিলান বোরিয়ানের ভুলের সুযোগ নিয়ে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন হাকিম জিয়েশ। এরপর আশরাফ হাকিমির লম্বা পাস থেকে ২৩ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান ইউসেফ এন-নেসরি। তবে ৩৯ মিনিটে বড়সড় ভুল করে বসে তারা। নাইয়াফ অগুয়ার্ডের আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান কমায় কানাডা। কাতার বিশ্বকাপের প্রথম আত্মঘাতী গোলের সঙ্গে জড়িয়ে গেল মরক্কোর নাম। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম থেকেই কানাডা আক্রমণে ওঠে। ব্যবধান ধরে রাখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে মরক্কো। আতিবা হাচিনসনের হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ মিস করে কানাডা। শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত স্কোরলাইন বজায় ছিল মরক্কোর পক্ষে ২-১।
ম্যাচের প্রথম থেকেই আক্রমণ শানিয়েছে বেলজিয়াম। ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণে একের পর এক আক্রমণ আছড়ে পড়লেও গোল আর আসেনি। দ্বিতীয়ার্ধে কোচ রবার্তো মার্টিনেজ নামিয়ে দেন রোমেলু লুকাকুকে। ম্যাচের ৬০ মিনিটে গোলের সুযোগও তৈরি করেছিলেন লুকাকু। তাঁর জোরালো শট গোলপোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। ম্যাচের একদম শেষভাগে হ্যাজার্ডের ক্রস থেকে গোল করে দলকে জেতানোর সুবর্ণ সুযোগ ছিল লুকাকুর কাছে। সেই সুযোগও নষ্ট হয়। গোল না পাওয়ার বিশাল আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন লুকাকুরা। একইসঙ্গে বেজেছে বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের ঘণ্টা।