কলকাতা: হকি ডার্বিকে কেন্দ্র রবিবার উত্তপ্ত হয় ময়দান। দুই প্রধানের কর্তা, সমর্থকদের হাতাহাতিতে সরগরম হয়ে ওঠে মহমেডান স্পোর্টিং মাঠ। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটলেও সেই রেশ এখনও কাটছে না। কথার লড়াই চলছেই। শনিবার আইএসএল ডার্বি। সেই উত্তাপের পারদ চড়তে শুরু করল এখন থেকেই। রবিবার বিকেলে দুই পক্ষের সমর্থকদের হাতাহাতির জেরে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। এরপর ম্যাচ শুরু হলেও ২ মিনিটের বেশি খেলা হয়নি। পর্যাপ্ত আলোর অভাবে ম্যাচ স্থগিত করে দেন হকি আম্পায়ার। খেলায় ১-০ এগিয়ে ছিল মোহনবাগান। যে ঘটনার পর মাঠে দাঁড়িয়ে মোহনবাগান ডার্বিতে দল না নামানোর হুমকি দিয়েছিল। বিস্তারিত TV9Bangla-য়।
হকি ডার্বির ২৪ ঘণ্টা পর হকি বেঙ্গলকে চিঠি মোহনবাগানের। দর্শক প্রবেশের জন্য পুলিশের অনুমতি না মিললে মোহনবাগান মাঠে ম্যাচ আয়োজনের ঝুঁকি নিতে চাইছে না মোহনবাগান। মঙ্গলবারই পঞ্জাব স্পোর্টসের বিরুদ্ধে নিজেদের মাঠে হকি লিগের ম্যাচ রয়েছে সবুজ-মেরুনের। মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘ম্যাচ আয়োজনের জন্য হকি বেঙ্গলের কাছে পুলিশের অনুমতির চিঠি চেয়েছি। এখানে ম্যাচ চলাকালীন কোনও গন্ডগোল হলে বা চেয়ার ভাঙচুর হলে তার দায় কে নেবে? পুলিশের অনুমতি না থাকলে এখানে ম্যাচ না করার আর্জি জানিয়েছি। তাতে আমাদের মাঠ বা গ্যালারির ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া ‘ একই সঙ্গে বাগান সচিব বলেন, ‘ডার্বির পুরো ঘটনাও আমরা হকি বেঙ্গলকে চিঠিতে জানিয়েছি। একই সঙ্গে জানতে চেয়েছি ম্যাচ ঠিক কী কারণে মাঝপথে থামিয়ে দেওয়া হয়।’ যদিও হকি ডার্বির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত লিগে খেলা চালিয়ে যাবে মোহনবাগান।
এরই সঙ্গে হকি বেঙ্গলকে কাঠগড়ায় তোলেন বাগান সচিব। কোন যুক্তিতে পুলিশ ছাড়া ডার্বি আয়োজন করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ২২ বছর পর হকি ডার্বি অনুষ্ঠিত হয়। তাতেও তৈরি হয় চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা।
এদিকে দুই প্রধানের কর্তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি চলছেই। বাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘আইএসএলে টানা সাতটা ডার্বি ইস্টবেঙ্গল হেরেছে। হকি ডার্বিতেও ০-১ পিছিয়ে পড়েছিল। টানা আটটা ডার্বি হারার আতঙ্কেই ইস্টবেঙ্গল কর্তারা মাঠে ঢুকে পড়ে এবং খেলা বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। ওদের লড়াইয়ের মানসিকতাও কমে গিয়েছে।’ এরই সঙ্গে বাগান সচিব বলেন, ‘আমি জানি না ইস্টবেঙ্গল কর্তারা প্রথম বার মাঠে গালাগালি শুনলেন কিনা! ওদের সমর্থকরা কি গালাগালি না দিয়ে সারাক্ষণ রামায়ণ পাঠ করে যায়? ওদের কর্তাদের খালি মাঠে ম্যাচ করার আবেদনও অযৌক্তিক মনে হয়েছে।’
যে প্রসঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার পাল্টা বলেন, ‘মোহনবাগান সচিবের কথা আমাকে অবাক করেছে। একজন দায়িত্বশীল কর্তা চেয়ারে বসে কী ভাবে বলতে পারেন, খেলার মাঠে এ রকম গালাগালি হবে না, মাঠে গন্ডগোল হবে না! মোহনবাগান সচিব উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলছেন। শান্তি, শৃঙ্খলা বজায় রেখে এগিয়ে চলাই বড় ক্লাবের লক্ষ্য। মাঠে যুদ্ধ হোক, মাঠের বাইরে নয়। ১৯৮০ সালের ১৬ অগস্ট ফিরে এলে কি মোহনবাগান সচিব দায় নিতেন?’
শনিবারের বড় ম্যাচের আগে দুই শিবিরের কর্তার বাকযুদ্ধে সরগরম ইস্ট-মোহন ডার্বি।