দোহা: তিনি শশরীরে নেই, তবুও তিনি আছেন। এটাই বিশ্বাস করেন আর্জেন্টিনাবাসী। যেন বুয়েন্স আইরসের হার্দিন ভেসা ভিস্তায় শুয়ে রয়েছেন তিনি…কাতারের অলি-গলির সব খবর রাখছেন। আর্জেন্টিনার ((Argentina) জয় হলেই কাতারে এসে চমকে দেবেন সকলকে। নিজেদের এমনটাই বোঝাচ্ছেন দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনার (Diego Armando Maradona) অনুরাগীরা। কারণ, তাঁরা মানতেই চান না ফুটবলের রাজপুত্র আর বেঁচে নেই। মারাদোনা হীন প্রথম বিশ্বকাপ। তবে কাতার বিশ্বকাপে তাঁর উপস্থিতি যেন সর্বত্র। নানা ভাবে, নানা রূপে। মারাদোনা অনুরাগীদের এই দিন অনেকটা কষ্ট, শূন্যতা, আবেগের। তবে ওই যে, তিনি আছেন। এই দিনের চিত্রটা কেমন? তুলে ধরল TV9 Bangla।
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর। গোটা বিশ্ব তখন করোনা নামক ভাইরাসের সঙ্গে লড়ছে। লড়াইয়ে কেউ জিতছে,কারও লড়াই আবার চিরদিনের জন্য শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই হারানোর লম্বা তালিকার মাঝেই ফুটবল বিশ্ব হারিয়েছিল তাঁর রাজপুত্রকে। আর বিশ্ব হারায় এক বিপ্লবীকে। যিনি তাঁর পায়ের জাদুতে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিলেন প্রথম বিশ্বের দেশ গুলির অহংবোধকে। মস্তিস্কে ব্লাড ক্লট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও কার্ডিয়াক অ্যারেস্টেই ময়দান ছাড়েন। তাঁর মৃত্যু নিয়েও অনেক বিতর্ক রয়েছে। চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগ। যাই হোক, এই প্রথম মারোদোনা-হীন বিশ্বকাপ দেখছে মেসির দেশ। কিছু সত্য মেনে নেওয়া কঠিন। কাতারের রাস্তা, ময়দান, ড্রেসিংরুম সব জায়গাতেই মারাদোনার উপস্থিতি অনুভব করছেন তাঁরা। আর্জেন্টিনার ফুটবলার লিজান্দ্রো মার্টিনেজ বলছেন,”তিনি আছেন! আমাদের সঙ্গেই আছেন, আমাদের উৎসাহ দিচ্ছেন, সমর্থন করছেন।” মারাদোনার ছবি, ফ্লেক্স, কাট-আউটে ভরে গিয়েছে কাতারের অলিগলি। তিনি যে নেই তা বিশ্বাস করাটা সম্ভবও নয়। যে দিকেই চোখ যাচ্ছে সে দিক থেকেই যেন অভিভাবক নির্দেশ দিচ্ছেন।
তাঁর অনুগামীরা বলছেন,”ভগবান (মারাদোনা) সর্বত্রই বিরাজমান, তাঁকে মিস করব কেন! তিনি তো আমাদের মধ্যেই আছেন।” প্রাণের চেয়ে প্রিয় রাজপুত্রের উপস্থিতি অনুভব করছেন প্রত্যেক মুহূর্তে। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে তাঁর সতীর্থদের মধ্যে অনেকেই কাতারে রয়েছেন এই মুহূর্তে। তাঁরাও মানেন, তিনি সব দেখছেন। মেসির হাতে বিশ্বকাপ দেখার আশায় রয়েছেন। আর তা ঘটলেই এসে চমকে দেবেন সক্কলকে।
সত্যিই তো। শিল্পীর কি মৃত্যু হয়? তাঁর শিল্পের মাধ্যমে অমর হয়ে থাকেন তিন। ফুটবলের শিল্পী মারাদোনাও বেঁচে রয়েছেন, তাঁর শিল্পের মধ্যেই।