সঙ্ঘমিত্রা চক্রবর্তী
কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে কাতার বিশ্বকাপের (Qatar World Cup 2022)। জুন-জুলাইয়ে নয়, ধারা বদলে এ বার বিশ্বকাপ হতে চলেছে শীতকাতুরে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে কাতারে ফুটবলের এই মেগা ইভেন্ট। আর যা নিয়ে আগ্রহ কম নেই আপামর ফুটবলপ্রেমীর। ২১ নভেম্বর কাতার বিশ্বকাপের মেগা রিলিজ। মোট ৮টা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে মহাযজ্ঞ। টুর্নামেন্টের ফাইনাল ১৮ ডিসেম্বর, এবং লুসেইল স্টেডিয়ামে হবে বিশ্বকাপের ফাইনাল। এই স্টেডিয়াম কেমন দেখতে? কী ভাবে তৈরি হল? এমন নানা চমকে দেওয়া গল্প নিয়ে TV9Bangla-তে আজ দ্বিতীয় কিস্তি।
কাতার বিশ্বকাপের আট স্টেডিয়ামের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তর স্টেডিয়াম লুসেইল। বিশ্বকাপের জন্য এই স্টেডিয়ামটি নতুন তৈরি হয়েছে। ২০১০ সালে এই স্টেডিয়ামের নকশার জন্য টেন্ডার প্রকাশ হয়েছিল। কোনও নকশাই আয়োজক কমিটির পছন্দ হচ্ছিল না। শেষ অবধি আয়োজক কমিটির পছন্দ হয় বাটি-আকৃতির এক নকশা। সেই নকশাই পরবর্তীকালে সুন্দর লুসেইল স্টেডিয়ামে পরিণত হয়েছে। ২০১৭ সালে এই স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। অবশেষে ২০২১ সালের নভেম্বরে এই স্টেডিয়ামের কাজ পূর্ণ হয়। কাতার বিশ্বকাপের এই স্টেডিয়াম লুসেইল আইকনিক স্টেডিয়াম নামেও পরিচিত। বিশ্বকাপের ফাইনাল এই স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা। যার ফলে লুসেইল নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনা দিন দিন বেড়ে চলেছে।
ব্রিটিশ সংস্থা ফস্টার + পার্টনার্স এবং পপুলাস (বিশ্বব্যাপী স্থাপত্য এবং নকশা তৈরির সংস্থা) তৈরি করেছে লুসেইল স্টেডিয়ামের নকশা। দোহার দক্ষিণ প্রান্ত থেকে ২৩ কিমি দূরে অবস্থিত এই স্টেডিয়াম।
পারস্য উপসাগরের উপকূলের কাছেই অবস্থিত এই লুসেইল স্টেডিয়াম। পুরনো জাহাজ এবং জাহাজের বিভিন্ন বস্তুর ওপর যে সুন্দর সাজসজ্জা থাকে তার সঙ্গে লুসেইল স্টেডিয়ামের নজরকাড়া নকশার মিল রয়েছে। কাতারের উচ্চাকাঙ্খা, আরব সংস্কৃতিকেও তুলে ধরে এই স্টেডিয়ামটি। আলো-ছায়ার বৈপরীত্য খেলার সুযোগ রয়েছে এই স্টেডিয়ামে। সোনালি রংয়ের এই স্টেডিয়াম রাতের আলোতে আরও উজ্জ্বল দেখায়।
লুসেইল স্টেডিয়ামের বেশিরভাগ অংশই নিজস্ব উৎপাদিত সৌরশক্তি দিয়ে পরিচালিত। এবং কাচের বিশিষ্ট আবরণে আবৃত এই স্টেডিয়ামটি। সৌরশক্তি সংগ্রহকারী ধাতব পদার্থ ব্যবহার করার ফলে এই স্টেডিয়ামটি ব্যবহার করার সময় বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। এরিনার ছাদটি বিশেষ উপাদান দিয়ে তৈরি। PTFE নামক অত্যাধুনিক এক উপাদান স্টেডিয়ামকে গরম বাতাস থেকে রক্ষা করবে। এই উপাদান স্টেডিয়ামকে ধুলোবালি থেকে দূরে রাখে এবং স্টেডিয়ামের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সাহায্য করে।
বিশ্বকাপের পরে, এই স্টেয়িডামটি ৪০,০০০ আসনের স্টেডিয়ামে পুনর্গঠিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অতিরিক্ত আসনও সেই সময় সরিয়ে ফেলা হবে। স্টেডিয়ামের অন্যান্য অংশগুলিতে দোকান, ক্যাফে, অ্যাথলেটিক্সের কেন্দ্রতে রূপান্তরিত করা হবে। পাশাপাশি শিক্ষার সুযোগসুবিধাও এখান থেকে প্রদান করা হতে পারে। লুসেইল স্টেডিয়ামে একটি স্বাস্থ্যক্লিনিক করার পরিকল্পনাও রয়েছে।