ইংল্যান্ড- ১ (লুক শ ২’)
ইতালি – ১ (বোনুচ্চি ৬৭’)
টাইব্রেকার-
ইতালি ৩ : ইংল্যান্ড ২
লন্ডনঃসকাল থেকে দিনটা সবসময় বোঝা যায়না। ইউরো ফাইনাল যেন অক্ষরে অক্ষরে তা দেখিয়ে দিল। ম্যাচের মাত্র ২ মিনিটের গোলে ইংল্যান্ড এগিয়ে যাওয়ার পর গোটা ওয়েম্বলি ভাবতে বসেছিল ট্রফি এবার ‘ইটস কামিং টু হোম’। আর ম্যাচের ফাইনাল বাঁশি বাজার পর ফের ইউরো না ছোঁয়ার হতাশা নিয়ে বাড়িমুখো হলেন ইংল্যান্ড সমর্থকরা। ৫৩ বছর পর ফের ইউরো চ্যাম্পিয়ন হল ইতালি। নির্ধারিত সময় খেলার ফল ১-১ থাকার পর টাইব্রেকারে ৩-২ ফলে জিতে চ্যাম্পিয়ন চিয়েল্লিনিরা।
এদিন লুক শয়ের গোলে মাত্র ২ মিনিটে ম্যাচে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ইউরোয় হল নতুন রেকর্ড। তৎকালীন সোভিয়েত ইউউনিয়নের বিরুদ্ধে ৫ মিনিট ৪ সেকেন্ডে গোল করে দ্রুততম গোলের রেকর্ড গড়েছিলেন স্পেনের পেরেদা।সেই রেকর্ড ভাঙলেন লুক শ। শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার পর ইংল্যান্ডের আধিপত্য ছিল চোখে পড়ার মত। প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময় থেকে ইতালি ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করলেও সমতায় ফিরতে পারেননি বোনুচ্চিরা। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন চিয়েসা। প্রথমার্ধের ইতালির এই ফুটবলারের পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া।
দ্বিতীয়ার্ধেই বদলে গেল ইতালি। শুরু থেকেই ঘরের মাঠে কোনঠাসা হতে শুরু করে ইংল্যান্ড। মানচিনির দুটি পরিবর্তনই বদলে দিয়েছিল ইতালিকে। এক ইমমোবিলেকে তুলে বেরার্ডি। দুই , বারেল্লাকে তুলে ক্রিস্টান্টে। ইতালি যেন আরও আক্রমণাত্মক হতে শুরু করল। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে ইনসিনিয়ের কর্নার থেকে ভেরাত্তির হেড। সেখান থেকে গোল করে ইতালিকে এগিয়ে দেন বোনুচ্চি। সমতায় ফেরার পর আরও ভয়ঙ্কর ইতালি। তবে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় মরিয়া ছিল স্টার্লিংরাও। দ্বিতীয়ার্ধে লড়াই ছিল জমজমাট। নির্ধারিত সময় ১-১ থাকার পর ম্যাচ গড়ায় একস্ট্রা টাইমে।
একস্ট্রা টাইমেও ইউরোপের দুই সেরার লড়াই জমে উঠলেও, গোলের মুখ খুলতে পারেনি কেউই। একস্ট্রা টাইমের একেবারে শেষ মুহূর্তে টাইব্রেকারের কথা মাথায় রেখে দুটি পরিবর্তন ইংল্যান্ডে। মাঠে নামলেন স্যাঞ্চো ও রাশফোর্ড। তবে এই সিদ্ধান্ত বুমেরাং হয়ে যাবে স্বপ্নেও ভাবেননি সাউথ গেট। একস্ট্রা টাইমেও ম্যাচের ফল না হওয়ায় ইউরো ফাইনাল পৌঁছয় টাইব্রেকারে।
পেনাল্টি শ্যুটআউটে ইতালির বেলোত্তির শট মিস হতেই ফের স্বপ্ন দেখা শুরু ইংল্যান্ডের। এরপরে রাশফোর্ড ও স্যাঞ্চোর শট সেভ করে ইংল্যান্ডকে বিপাকে ফেলে দেয় ইতালি গোলকিপার ডোনারাম্মা। শে, পেনাল্টি শটে জর্জিনহোর শট পিকফোর্ড সেভ করার পরেই ইতালির প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডের শেষ শট সেভ। তবেই ৫৩ বছর পর ফের আসবে ইউরো জয়ের স্বাদ। সাকার শট ডোনারাম্মা সেভ করতেই স্বপ্ন শেষ ইংল্যান্ডের।
২০১৮ বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। আর ২০২১ ইউরোতে স্বপ্নের দৌড় ছিল ইতালির। মানচিনির কোচিংয়ে বদলে যাওয়া আজুরিবাহিনী শুরু থেকেই টুর্নামেন্টে নজর কাড়ছিলেন। বদলে গিয়েছে ইতালির খেলার চিরাচরিত স্টাইলও। আর চ্যাম্পিয়ন হয়ে বোনুচ্চিরা সদর্পে ঘোষণা করল, ‘ইটস কামিং টু রোম’।