কলকাতা: ১৮ অগস্ট, ২০২৪ — এই দিনটা কলকাতার তিন প্রধানের অনুরাগীদের জন্য বিশেষ। ইতিহাসের পাতায় তোলা রইল এই দিন। কিন্তু কেন? এই দিন ছিল ডুরান্ড কাপের ডার্বি। যুবভারতীতে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের বড় ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে তা বাতিল ঘোষণা হয়। এই বড় ম্যাচের দিন দুই প্রধানের সমর্থকরা আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার জন্য সুবিচার চাইবেন বলে ঠিক করেছিলেন। ডার্বি বাতিল হলেও, তাঁদের প্রতিবাদ বাতিল হয়নি। একে ডার্বি বাতিলের জন্য ইস্ট-মোহন সমর্থকরা হতাশ ছিলেন। তার উপর তাঁদের ক্ষোভ ছিল আরজি কর কাণ্ড নিয়ে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তিন প্রধানের সমর্থকরা যুবভারতীয় সামনে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। পুলিশ ফুটবলপ্রেমীদের লাঠি চার্জ করে। অনেক ফুটবলার আরজি কর কাণ্ডে বিচার চেয়ে সরব হয়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। বাগান নেতা শুভাশিস বোস রবিবারের প্রতিবাদ মিছিলে হাজির ছিলেন। কিন্তু সেখানে উপস্থিত থাকতে পারেননি মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনী মেহতাব হোসেন (Mehtab Hossain)। যে কারণে দুঃখ প্রকাশ করে একটি ফেসবুক পোস্ট করেছেন তিনি।
মেহতাব হোসেন নিজের ফেসবুকে এক ভিডিয়োতে বলেন, ‘কালকে সল্টলেক স্টেডিয়ামের বাইরে যে ঘটনাটা ঘটেছে, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহামেডানের সমর্থকরা যে ভাবে সাপোর্ট করেছে এই আন্দোলনকে, আমি তাঁদের সাধুবাদ জানাই। এই ঐক্যবদ্ধতা দরকার পশ্চিমবঙ্গে। সেটা ফিরে এসেছে, আছে, থাকবে। এটাকে আমি সমর্থনও করি। আর যা হয়েছে, তা আমি একেবারেই সমর্থন করি না। আমি কাল চেন্নাইয়ে এসেছি। সেখানে ম্যাচ আছে। সফর করছিলাম। আমি কলকাতায় তাই যেতে পারিনি। আমি দুঃখিত। তবে আমি এই বোনের পাশে আছি। সব সময় থাকব। এই আন্দোলন যেন বন্ধ না হয়।’
সেই ভিডিয়োর ক্যাপশনে মেহতাব লেখেন, ‘অনেকেই কাল দেখলাম যুবভারতীর সামনে নির্মম লাঠি চার্জকে কেন্দ্র করে আমার প্রতিক্রিয়া খুঁজছিলেন। দুঃখিত, আমি ট্রাভেল করছিলাম এবং অফিস লীগ খেলার জন্য কলকাতার বাইরে ছিলাম বলে আর তোমাদের ভিড়ে নিজেকে মেলাবার সৌভাগ্য হয়নি। আমার তিন চির প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের সমর্থকরা পুলিশের হাত থেকে ন্যায়ের দাবিতে বুক দিয়ে আগলাচ্ছেন এক অপরকে। এর চেয়ে সুখের মুহূর্ত হয়তো আসেনি এই বাংলায়।’
বাংলার ফুটবল নিয়ে ছিনিমিনি মেনে নিতে পারেননি মেহতাব। সেই প্রসঙ্গে লেখেন,’খেলা হবে দিবসের দুদিন পর ঘোষণা হলো খেলা হবে না। কিন্তু এটা তো শুধু ফুটবল নয় এতে প্রেম আছে, আবেগ আছে, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীতা আছে আর প্রতিবাদের আগুন। আপনি চাইলে রুখে দেবেন? বাংলার ফুটবল নিয়ে ছিনিমিনি নয়। যা গতি দেখছি গোল তো হবেই এবার কিন্তু জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে যাবে রোষের আগুন। আজ যারা লড়লেন সবাইকে সেলাম। লড়াকু অভিনন্দন। লড়াই থামানো যাবে না। বাংলার মানুষের ঐক্য বেঁচে থাকুক, ময়দানি ঐক্য বেঁচে থাকুক! অবিরাম ভালোবাসা সব লড়াকু সহযোদ্ধাদের। #justiceformoumita #justiceforRGKar’