প্যারিস : আন্তর্জাতিক ফুটবলে নেইমারের ভবিষ্যৎ কোন পথে। এখনও নিশ্চিত নয়। কাতার বিশ্বকাপে হেক্সার স্বপ্ন নিয়ে পা রেখেছিলেন নেইমাররা। প্রথম ম্যাচেই গুরুতর চোট পান নেইমার। গ্রুপ পর্বে আর খেলতে পারেননি। শেষ ষোলোর ম্যাচে ফেরেন। দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেও হেক্সার স্বপ্ন ধাক্কা পায়। কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে বিদায় নেয় ব্রাজিল। বিশ্বকাপের আগেই ব্রাজিল তারকা নেইমার জানিয়েছিলেন, এটাই হয়তো তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পরও তিনি বলেছেন, ফের ব্রাজিল জার্সিতে খেলবেন কীনা নিশ্চিত নয়। কোয়ার্টার ফাইনালে ছিটকে যাওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ব্রাজিল শিবিরকে। তাদের তাগিদ, পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বেশ কিছু স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন নেইমার। সতীর্থদের সঙ্গে ম্যাচ নিয়ে কী কথা হয়েছে, এমন অনেক গোপন মেসেজই রয়েছে। ব্রাজিল শিবির কতটা দায়বদ্ধ ছিল তারই প্রমাণ দিতে কি এই সিদ্ধান্ত নেইমারের? ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে কী কী শেয়ার করেছেন নেইমার, তুলে ধরল TV9Bangla।
ইন্সটাগ্রাম স্টোরিতে নেইমার লিখেছেন, ‘সতীর্থদের অনুমতি ছাড়াই আমাদের কিছু কথাবার্তা শেয়ার করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা জিততে কতটা মরিয়া ছিলাম, সঙ্ঘবদ্ধ ছিলাম, এই মেসেজ থেকে হয়তো বোঝা যেতে পারে। আমাদের মধ্যে অনেক কথাই হয়েছে। তার কিছু মেসেজ এখানে দিলাম। আমরাও খুবই হতাশ, তবে আমাদের মানসিকভাবে শক্তিশালী থাকতে হবে। সামনের দিকেই তাকাতে হবে আমাদের। আমি নিশ্চিত, ব্রাজিলের সকলকে পাশে পাব এবং আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরব। আমি একজন গর্বিত ব্রাজিলিয়ান, সকলে আমাকে ভালোবাসে এটুকু জানি।’
ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে পেনাল্টি মিস করেন মার্কুইনোস। সেটি নির্ণায়ক স্পটকিক ছিল। তারপর নেইমার তাঁকে কী বার্তা দিয়েছিলেন, সেই স্ক্রিনশটও শেয়ার করেছেন। মার্কুইনোসকে নেইমার লিখেছেন, ‘তোমার প্রতি আমার যা ভাবনা, একটা পেনাল্টি মিসে তা বদলে যাবে না।’ মার্কুইনোস জবাবে নেইমারকে লিখেছেন, ‘আমি মন থেকে চেয়েছিলাম, সবকিছু ভালো দিকে এগোক। তোমাকেও বলব, মানসিকভাবে শক্তিশালী হও। দেখা যাক, আমাদের ভবিষ্যতে কী রয়েছে।’ পিএসজি সুপারস্টার নেইমার, জাতীয় দলের অধিনায়ক থিয়াগো সিলভাকেও মেসেজ করেছেন। নেইমার যে বার্তা পাঠিয়েছেন, ‘আমি মন থেকে চেয়েছিলাম তোমাকে বিশ্বকাপ দেওয়ার।’ থিয়াগো সিলভা তাঁকে রিপ্লাই দেন, ‘ভাই, আমি যতটা কল্পনা করেছিলাম, সবকিছু যেন তার চেয়েও ঘেঁটে গিয়েছে। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না, আমরা হেরে গিয়েছি। যতবার মনে পড়ছে, কাঁদতে ইচ্ছে করে।’
রিয়াল মাদ্রিদ স্ট্রাইকার রড্রিগোকেও সান্ত্বনা দিয়েছেন নেইমার। পেনাল্টি মিসের পর টিমের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন রড্রিগো। নেইমার তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে লেখেন, ‘যারা পেনাল্টি মারে, তাঁদেরটাই মিস হয়। এ ভাবে ক্ষমা চাইছ, তুমি কি উন্মাদ হয়ে গিয়েছো।’
ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে গোল করেছিলেন নেইমার। তাঁর গোলেই এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। ৭৭ গোলে কিংবদন্তি পেলেকে ছুঁয়েছেন নেইমার। যদিও ১১৭ মিনিটে গোল করেন পেতকোভিচ। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই মার্কুইনোস এবং রড্রিগোর পেনাল্টি মিস হয়। নেইমার টাইব্রেকারে পেনাল্টি নেননি। নেইমারকে কেন শেষ শটের জন্য রেখে দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন কোচ তিতে।