বুয়েনস আইরেস: ইন্দোনেশিয়ার ভয়াবহ স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেনি ফুটবল বিশ্ব। মালাং নিয়ে আলোচনাও চলছে। ফুটবল ম্যাচ (Football Match) চলাকালীন স্টেডিয়ামে দাঙ্গা লেগে যাওয়ায় ১৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা প্রায় চারগুণ। তার থেকেও বড় কথা হল, ওই ঘটনায় মারা গিয়েছে তিরিশেরও বেশি শিশু। এরই মধ্যে আবার এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সাক্ষী থাকল ফুটবল দুনিয়া। আর্জেন্টিনার (Argentina) ঘরোয়া ফুটবলে গ্যালারিতে দুই দল সমর্থকের মারামারিতে প্রাণ হারালেন ৫৭ বছরের এক ফুটবল সমর্থক। সান মার্টিন হসপিটালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। মাঠের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারত। পুলিশি তৎপরতায় তা অবশ্য হয়নি।
মেসির দেশে এর আগেও এই রকম ঘটনা ঘটেছে। এ বার ঘটল দিয়েগো মারাদোনার প্রাক্তন ক্লাব বোকা জুনিয়র্স ও গিমনেসিয়ার ম্যাচে। বুয়েনস আইরেস থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে লা প্লাতার কার্মেলো জেরিলো স্টেডিয়ামে ছিল খেলা। শুরু থেকেই উত্তেজনা ছড়াতে থাকে দুই টিমের সমর্থকদের মধ্যে। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে, ৯ মিনিটের মাথায় খেলা থামিয়ে দিতে হয়। দুই টিমের দর্শকদের মারামারিতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন এক সমর্থক। ঝামেলা গ্যালারিতে শুরু হয়ে তা দ্রুত ছড়িয়েও পড়ে। স্টেডিয়াম অচিরেই রণক্ষেত্র হয়ে যায়। প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই গ্যালারি থেকে মাঠে নেমে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। সেই সঙ্গে রাবার গুলিও চালানো হয়। পুলিশ যতই তৎপরতা দেখাক, আর্জেন্টিনার ঘটনাতেও কিন্তু তাদের দিকেই আঙুল উঠছে। এমন একটা উত্তেজক ম্যাচ যথেষ্ট পরিমাণে নিরাপত্তারাক্ষী ছিল না। তাই পরিস্থিতি শুরুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
ম্যাচের রেফারি হার্নান মাস্ত্রাঞ্জেলো বলেছেন, ‘ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই খেলা বাতিল করে দিতে হয়। নিরাপত্তা যথেষ্ট ছিল না বলেই এটা করতে হয়েছে। এতটাই জটিল হয়ে গিয়েছিল পরিস্থিতি যে, মাঠে দুই দলের ফুটবলার ও আমাদের মতো ম্যাচ পরিচালকরাও বিপদে পড়ে গিয়েছিলাম।’
গিমনেসিয়ার কাছে ঘরের মাঠে ট্রফি জেতার শেষ সুযোগ ছিল ওটাই। অন্য দিকে বোকা জুনিয়র্স অপরাজিত দৌড় ধরে রাখার জন্য মাঠে নেমেছিল। ফলে এই ম্যাচ ঘিরে প্রবল আগ্রহ ছিল সব মহলের। তার পরও কেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ম্যাচে পর্যাপ্ত রক্ষী কেন রাখা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বোকা জুনিয়র্সের কোচ হুগো ইবারা বলেছেন, ‘এই রকম পরিস্থিতি যে একটা ম্যা ঘিরে হতে পারে, না দেখলে বিশ্বাসই করা যেত না। আমরা সবাই মারাত্মক ভাবে আহত হতে পারতাম।’