দোহা: অবশেষে পর্দা উঠল বিতর্ক থেকে। বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে কম বিতর্কের মুখে পড়েনি কাতার (Qatar World Cup 2022) মরুভূমির দেশে বিপুল অর্থ খরচ করে নতুন সাতটা স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে। আর তা করতে গিয়ে তীব্র বিতর্কে পড়েছে ওই দেশ। বহির্বিশ্ব দাবি তুলেছিল, বিশ্বকাপের জন্য আধুনিক স্টেডিয়াম তৈরি করতে গিয়ে রক্তের নদী বইয়ে দিয়েছিল কাতার। তা এতদিন অস্বীকার করে গিয়েছে কাতার সরকার। কিন্তু চাপের মুখে এ বার নতিস্বীকার করতে বাধ্য হল তারা। মেনে নিল, তীব্র গরমে স্টেডিয়াম তৈরি করতে গিয়ে ৫০০-র বেশি শ্রমিক মারা গিয়েছেন। সংখ্যাটা কি ৫০০-ই হবে? নাকি তারও বেশি, তা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক মিটছে না। অনেকেই দাবি করছেন হাজারেরও বেশি শ্রমিক স্টেডিয়াম তৈরির সময় প্রাণ দিয়েছে। কিন্তু তাঁদের প্রাণহানীর কারণে ক্ষতিপূরণ দেয়নি কাতার। বিশ্বকাপের চিফ হাসান আল থাওয়াড়ির ইন্টারভিউ প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য পড়ে গিয়েছে। কী বলেছেন তিনি, তুলে ধরল TV9 Bangla।
টকটিভির পিয়ের্স মর্গ্যানকে দেওয়া ইন্টারভিউতে হাসান বলেছেন, ‘সংখ্যাটা ৪০০ হতে পারে। কিংবা ৪০০ থেকে ৫০০ হতে পারে। আমি সঠিক সংখ্যাটা জানি না।’ যতই মারা যাওয়া শ্রমিকদের সংখ্যা জানি না বলে এড়িয়ে যান হাসান, বিতর্ক কিন্তু তিনি বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিশ্বকাপের চিফকে যে এই অপ্রীতিকর প্রশ্নের মুখে পড়তেই হবে, তা খুব ভালো করেই জানতেন তিনি। গত ১২ বছরের বিশ্বকাপের আয়োজন করতে গিয়ে বিপুল অর্থ ব্যয় করেছে কাতার। এশিয়া থেকেই বেশি সংখ্যক শ্রমিক নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্টেডিয়াম বানানোর জন্য। মূলত কনস্ট্রাকশন্সের সঙ্গে জড়িত থাকা শ্রমিকদের বাড়তি অর্থও দেওয়া হয়েছিল দিনমজুরি হিসেবে। কিন্তু ৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে, এমনও বলা হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে কাতারের বিরুদ্ধে। বিশ্ববাসী কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে মরুদেশকে।
হাসান আবার বলেছেন, স্টেডিয়াম তৈরি করতে গিয়ে মারা গিয়েছেন মাত্র ৩ জন। বাকি শ্রমিকরা মারা গিয়েছেন পরিকাঠামোগত কাজ করতে গিয়ে। হাসানের কথায়, ‘একটা মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেকের যে মৃত্যু হয়, সেটা ভালোই বুঝি। কিন্তু যে সব সাইটে কাজ হত, তার স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ধীরে ধীরে বেড়েছিল। ফলে অপ্রীতিকর ঘটনা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।’
কাতার ঘিরে বিতর্কের অভাব নেই। এত কিছুর মধ্যে বিতর্ক ঝোড়ো হাওয়া যে আরও জোরালো হল, তা বলেই দেওয়া যায়।