মিউনিখ : প্রতিপক্ষের আক্রমণ আটকাতে ডিফেন্ডারকে মাঠে বেশীরভাগ সময়ই আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা যায়। তবে মাঠের বাইরেও কি তিনি একইরকম হন? হয়তো নয়। সমাজের আর দশটা মানুষের মতো তিনিও দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। তাঁরও অন্য একটা রূপ দেখা যায়। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকে। একজন ডিফেন্ডারের মানবিকতা বা সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার ছবি খানিক অন্য রকম, তা আর একবার প্রমাণ করে দিলেন জার্মানির (Germany) ডিফেন্ডার আন্তোনিও রুডিগার (Antonio Rudiger)। ক্লাব ফুটবলে রিয়াল মাদ্রিদে খেলেন তিনি। মাতৃভূমি সিয়েরা লিয়োনে এই মুহূর্তে বিশ্বকাপের জন্য অনুশীলন করছেন রুডিগার। বিশ্বকাপ (Qatar 2022) থেকে তিনি যে অর্থ উপার্জন করবেন, তার জন্য পরিকল্পনা গড়ে রেখেছেন রুডিগার। সেই কাহিনিই তুলে ধরল TV9Bangla।
বিশ্বকাপ থেকে যে অর্থ তিনি উপার্জন করতে পারেন, সেই পরিমাণ অর্থ দান করেছেন আন্তোনিও রুডিগার। সিয়েরা লিয়োনের ১১ জন অসুস্থ বাচ্চার ভবিষ্যতের জন্যই এমন ভাবনা রুডিগারের। খেলার মাঠে ডিফেন্ডারের ভূমিকা অজানা নয়। প্রতিপক্ষকে আটকাতে মাঠে তাঁকে কড়া হতে হয়। ডিফেন্ডারের ট্যাকলে প্রতিপক্ষের পা ভেঙে যাওয়ার ঘটনাও ফুটবল ইতিহাসে নতুন নয়। তবে রুডিগারের গল্পটা একেবারেই আলাদা। আসন্ন বিশ্বকাপে জার্মানির হয়ে মাঠে নামতে চলেছেন এই ২৯ বছরের ডিফেন্ডার। আর তার আগেই হৃদয় জিতলেন। বিশ্বকাপ থেকে উপার্জিত অর্থ তাঁর মাতৃভূমি সিয়েরা লিয়োনের ১১ জন অসুস্থ বাচ্চার জন্য দান করেছেন।
সিয়েরা লিয়োন ওয়েস্ট আফ্রিকার একটি দেশ। এ খানে প্রচুর বাচ্চারই পায়ের পাতা বাঁকা। হাঁটতে সমস্যা হয় তাদের। ওরা কনজেন্টিয়াল ক্লাব ফুটে রোগে আক্রান্ত। তাদের অস্ত্রোপচার এবং সুন্দর ভবিষতের জন্য এই অর্থ দিয়েছেন রুডিগার। সিয়েরা লিয়োনে এই রোগে বহু শিশু আক্রান্ত। সমাজে, স্কুলে বিভিন্ন জায়গাতে বঞ্চনার শিকার হন এই শিশুরা। এই আক্রান্ত শিশুদের জন্য সমব্যাথী রুডিগার। তাই অন্তত কয়েকজনের দায়িত্ব নিতে পেরে খুশি রুডিগার।
২০০০–০১ মরসুমে, মাত্র ৭ বছর বয়সে, জার্মান ফুটবল ক্লাব স্পারবার এনকোলনের যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে ফুটবল জগতে প্রবেশ করেন রুডিগার। পরবর্তীতে তাসমানিয়া বার্লিন, এনকোলনার স্পোর্টফ্রয়ন্ডে, হের্তা জেলেন্ডর্ফ, বরুসিয়া ডর্টমুন্ড এবং ভিএফবি স্টুটগার্টের যুব দলের হয়ে খেলার মাধ্যমেই ফুটবলে বিকশিত হয়েছে তাঁর কেরিয়ার। শুধুমাত্র সিয়েরা লিয়োনেই নয়, লন্ডনের বিভিন্ন এনজিওর সঙ্গেও কাজ করেন তিনি। অসুস্থ বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে, তাদের কিছুক্ষণের জন্য অন্তত খুশি করতে পেরে নিজেও মানসিক শান্তি পান বলে জানান সংবাদমাধ্যমকে।
আগ্রাসনটা মাঠেই, বাস্তব জীবনে একজন ডিফেন্ডারের মানবিকতা বোধ ঠিক কতটা দৃঢ় হতে পারে তা আবারও প্রমাণ করে দিলেন রুডিগার।