লুসেইল : হেক্সা। ষষ্ঠ বিশ্বকাপ। এই স্বপ্ন নিয়েই বিশ্বকাপ (Qatar World Cup 2022) অভিযান শুরু করছে ব্রাজিল। তবে ব্রাজিলের ১০ নম্বর জার্সির কাছে এই বিশ্বকাপ আরও অনেক কিছু। ক্লাব ফুটবল হোক বা দেশের জার্সিতে। অনেক ট্রফিই জিতেছেন। ব্রাজিলের সোনালী অতীতের কান্ডারিদের সঙ্গে তুলনায় আনা হয় ১০ নম্বর জার্সির নেইমার জুনিয়রকে। তাঁর কেরিয়ারে একটা জিনিসেরই অভাব। যা কোনও মূল্যেই কেনা যাবে না। সতীর্থদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সেটা পাওয়ার জন্য লড়াই করতে হবে। পাওয়া নয় বরং আরও নির্দিষ্ট করে বলতে, সেটি অর্জন করতে হবে। তাঁর এই পথ অনেকে কাঁটায় ভরা। বিশেষ করে জার্মানির বিরুদ্ধে ৭-১’র লজ্জা। সেই ম্যাচে ছিলেন না নেইমার (Neymar)। গুরুতর চোট ছিল তাঁর। ব্রাজিলের ফুটবলার হিসেবে তাঁরও মাথা হেট হয়েছিল। ব্রাজিলের মুকুটে পাঁচটি তারা রয়েছে। কেরিয়ারের একমাত্র এবং দেশের হয়ে ষষ্ঠ তারার খোঁজে নেইমার। বিস্তারিত TV9Bangla-য়।
ব্রাজিল এবং ফুটবল। উন্মাদনা, আকর্ষণ, ভালোবাসা যে বিশেষণই দেওয়া হোক, কম পড়বে। সাধারণ মানুষ হোন কিংবা ব্রাজিল ফুটবলার। এই বিশ্বকাপ তাঁদের কাছে নেইমারের মঞ্চ। নেইমারকে কেন্দ্র করেই বাকি ফুটবলাররা প্রদক্ষিণ করবেন। দলে এমন অনেক তরুণ ফুটবলার রয়েছেন, যাঁরা ইউরোপীয় ফুটবলে দ্যুতি ছড়াচ্ছেন। বিভিন্ন ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। এ বার পালা দেশের জার্সিতে। কাতারের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম লুসেইলে আজ যাত্রা শুরু করছেন নেইমাররা। প্রতিপক্ষ সার্বিয়া। প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখেনি ব্রাজিল শিবির। আরও ভালো করে বললে, ‘এখনও অবধি সেরা প্রস্তুতি’ নিয়ে নামছে ব্রাজিল।
ক্লাব এবং দেশের হয়ে সব মিলিয়ে ২৯টি খেতাব জিতেছেন নেইমার। ব্যক্তিগত ভাবে প্রচুর ম্যাচের সেরা, টুর্নামেন্ট সেরা এবং সর্বাধিক গোল দাতা হয়েছেন। কিন্তু তাঁর কেরিয়ারে যে একটি বিশ্বকাপের তারা নেই! সেটা ছাড়া শ্রেষ্টত্ব প্রমাণ কার্যত অসম্ভব। ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপেও অনেকটা কাছে পৌঁছেছিল ব্রাজিল। সেমিফাইনালে বেলজিয়ামের কাছে হার। স্বপ্নভঙ্গ হয় ব্রাজিলের। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে তাঁর গুরুতর চোট দলকে বিপদে ফেলেছিল। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপেও সেরা প্রস্তুতি নিয়ে আসতে পারেননি। ক্লাবের হয়ে খেলতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন। এ বার পরিস্থিতি অনেক অনেক ভালো। মরসুমের মাঝে বিশ্বকাপ। এ মরসুমে ইতিমধ্যেই ২০ ম্যাচে ২৬ গোলে অবদান রয়েছে তাঁর। গোল করেছেন ১৫টি এবং ১১টি অ্যাসিস্ট। দুই বিশ্বকাপের মাঝে দেশের জার্সিতে তাঁর এবং ব্রাজিলের পারফরম্যান্সও চোখ ধাঁধানো। ৩১টি ম্যাচের মধ্যে ২৫টি জয়। হার মাত্র দু’টি ম্যাচে। এই বৃত্তে ব্রাজিল গোল খেয়েছে এক ডজন। গোল করেছে ৬৮ গোল। তবুও এই সফরকে নিখুঁত বলা যাবে না। ২০১৯ কোপা আমেরিকায় চোট পেয়েছিলেন নেইমার।
কাতার বিশ্বকাপে অভিযান শুরুর আগে নেইমারের প্রস্তুতি নিয়ে দলের ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা বলছেন, ‘খুবই ভালো প্রস্তুতি সেরেছে নেইমার। অন্যান্য বিশ্বকাপের তুলনায় মানসিক এবং শারীরিকভাবে এ বার সেরা পরিস্থিতিতে রয়েছে ও। ২০১৪ বিশ্বকাপে ও নির্ণায়ক ভূমিকা নিচ্ছিল। সে সময়ও মারাত্মক চোট। গত বিশ্বকাপেও চোট সারিয়ে ফিরেছিল। এ বার কোনও চোট আতঙ্ক নেই। সবচেয়ে বড় দিক, ও তারকা হলেও, নতুনদের সঙ্গে যেভাবে মানিয়ে নিয়েছে এবং তরুণ ফুটবলাররাও ওর সঙ্গে এতটাই মিশে গিয়েছে, সে কারণেই বলা হচ্ছে সেরা প্রস্তুতি হয়েছে।’
তারার খোঁজে নেইমাররা যাতে দিশেহারা না হয়ে পড়েন, ব্রাজিল এখনই তারই প্রার্থনায়…।