দীপঙ্কর ঘোষাল
নতুন তারকা কে? এই প্রশ্ন চার বছর অন্তত ঠিক ঘোরাফেরা করে মাথায়। বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে এ বারও আমরা বসব মেসি-রোনাল্ডো-নেইমারের পরবর্তী প্রজন্মের খোঁজে। বিশ্বকাপ এমনই। তার পথচলার প্রথম দিন থেকেই জন্ম দিয়ে চলেছে একের পর নায়ক। অসংখ্য ঘটনা। আর একদল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। সেই সব নায়ক আর না-ভোলা ঘটনা তুলে আনল টিভি নাইন। পর্ব-৪
ডেজান স্তাঙ্কোভিচ। হঠাৎ আলোচনায় কেন তিনি? অতি পরিচিত নাম নয়। কিন্তু তাঁর মতো কীর্তি আর কারও নেই। তিন তিনটি দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন এই মিডফিল্ডার। বেলগ্রেডে জন্ম। সে সময় যুগস্লাভিয়া ছিল। রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে বেশ কয়েকটি আলাদা দেশ হয়। স্তাঙ্কোভিচ প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন ১৯৯৮ সালে। ফ্রান্সে এই বিশ্বকাপে তিনি যুগস্লাভিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। এর পর ২০০৬ বিশ্বকাপে মন্টেনেগ্রো এবং ২০১০ বিশ্বকাপ খেল্বন সার্বিয়ার হয়ে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সব মিলিয়ে ১০৩ ম্যাচ খেলেছেন স্তাঙ্কোভিচ। গোল করেছেন ১৫টি।
সালটা ১৯৯৮। যুগোস্লাভিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয় অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ডেজান স্তাঙ্কোভিচের। সে বছরই বিশ্বকাপ খেলেন। ২০০৬ বিশ্বকাপের আগেই যুগস্লাভিয়া ভেঙে সার্বিয়া এবং মন্টেনেগ্রো তৈরি হয়ে যায়। ২০০৬ বিশ্বকাপে সার্বিয়া এবং মন্টেনেগ্রোর হয়ে খেলেন। ২০১০’র আগে সার্বিয়া আলাদা দেশ হয়। ২০১০ এ খেলেন সার্বিয়ার হয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপেই ইতিহাস তৈরি করেন ডেজান স্তাঙ্কোভিচ।
শুধু ইতিহাস তৈরির ক্ষেত্রেই নয়। মিডফিল্ডার হিসেবে বিশ্ব ফুটবলে সমাদৃত স্তাঙ্কোভিচ। ক্লাব স্তরেও দীর্ঘ কেরিয়ার। ১৯৯৫ সালে বেলগ্রেডের স্থানীয় ক্লাব রেড স্টারে অভিষেক হয়। চার মরসুমে ১১৩ ম্যাচে ৩৯ গোল করেছেন। তিন বার ট্রফিও জিতেছে তাঁর ক্লাব। তিন বছর পরই ইতালির ক্লাব লাজিওতে খেলার সুযোগ পান স্তাঙ্কোভিচ। ২৪ মিলিয়ন ইউরোতে লাজিওতে সই করেন। ‘দ্য ড্রাগন’ ডাক নাম সেখানেই পাওয়া। সই করলেও একাদশে সুযোগ পাওয়া সহজ ছিল না। মিডফিল্ডে তখন পাভেল নেদভেদ, দিয়োগো সিমিওনে, মাতিয়াস আলমেড়া, হুয়ান সেবাস্তিয়ান ভেরনের মতো ফুটবলার। স্তাঙ্কোভিচের খুব বেশি সময় লাগেনি জায়গা করে নিতে। সে সময় ইউরোপের অন্যতম সেরা মিডফিল্ড লাজিওর। অনবদ্য পারফরম্যান্সে নজরে পড়েন ইতালির বড় ক্লাব ইন্টার মিলান কর্তাদের। লাজিও থেকে ইন্টার মিলানে সই করেন স্তাঙ্কোভিচ। ৯ বছর খেলার পর ২০১৩-তে এই ক্লাব থেকেই অবসর নেন স্তাঙ্কোভিচ। ক্লাব ফুটবলে সব মিলিয়ে ৪৫৩ ম্যাচ।
খেলা থেকে অবসর নিলেও ফুটবলের সঙ্গেই যুক্ত রয়েছেন। ২০১৪-২০১৫ মরসুমে উদিনেসে সহকারি কোচ এবং ২০১৯ থেকে ছেলেবেলার ক্লাব রেড স্টার বেলগ্রেডে কোচিং করান স্তাঙ্কোভিচ। বিশ্ব ফুটবলে অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার, স্মরণীয় মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন ফুটবল অনুরাগীদের। বিশেষত, ইন্টার মিলান সমর্থকদের।