দোহা: হিজাব বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে এখনও অশান্ত ইরান (Iran)। সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে প্রতিদিন হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে, সঙ্গে পুলিশি ধরপাকড় তো আছেই। এই পরিস্থিতির মধ্যেই কাতার বিশ্বকাপ (FIFA World Cup 2022) খেলতে এসেছিল ইরান ফুটবল দল। সরকার বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন করে ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপের মঞ্চে জাতীয় সঙ্গীত না গাওয়ায় ইরানের ফুটবলারদের নানা হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। মঙ্গলবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (USMNT) বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভাবে উত্তপ্ত ম্যাচে মাঠে নামার আগেই বেশ চাপে পড়েছেন ইরানের ফুটবলাররা। তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। শনিবার টাইলার অ্যাডামসের দলের কাছে পরাজিত হয়ে বিশ্বকাপের স্বপ্নে ইতি ঘটেছে ইরানের। এ বার দেশে ফেরার পালা। কিন্তু দেশে ফিরে কী অপেক্ষা করছে তাঁদের জন্য? তুলে ধরল TV9 Bangla।
২১ নভেম্বর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে দেশের জাতীয় সঙ্গীত গলা না মিলিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন ইরানের ফুটবলাররা। ‘সঠিক উপায়ে’ হিজাব না পরায় ইরানি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মাসা আমিনি। পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন প্রথমে মারাত্মক আহত ও মারা যাওয়ার পর দেশটির মানুষ বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। ৪০০র বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন এই বিক্ষোভে। সরকার বিরোধী এই আন্দেলনকে সমর্থন জানাতে কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জাতীয় সঙ্গীতে সঙ্গে গলা মেলাননি ইরানের ফুটবলাররা। এর পরই শুরু হয় দ্বন্দ্ব। ইরানের সরকার ফুটবলারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ওয়েলসের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচে ওই চাপের কাছেই নতিস্বীকার করেই জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলাতে দেখা যায় তাঁদের।
দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সঙ্গী করেই বিশ্বকাপে অংশগ্রহন করেছে ইরান। একের পর এক হুমকি এসেছে তাসমান সাগরের ওপার অর্থাৎ তাঁদের দেশ থেকেই। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগে খেলোয়াড়েরা নিজেদের আচরণে ‘সংযত’ না হলে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কারাবাস এবং অত্যাচারের হুমকি দেওয়া হয়েছিল দেশের সরকারের তরফে। এই মানসিক অশান্তির রেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচেও দেখা গিয়েছে। বেশ ক্লান্ত দেখাচ্ছিল ফুটবলারদের। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে এই মানসিক চাপ সামলেও যে ভাবে লড়াই করেছে ইরান, তার জন্য কোচ কার্লোস স্কুইরোজ দলের প্রশংসা করেছেন। বিশ্বমঞ্চে এই ধরনের সরকার বিরোধী কাজের জন্য দেশে ফিরে ফুটবলারদের স্থান কারাগারে হতে পারে, এমনটা আশঙ্কা করা হচ্ছে।