নিউ ইয়র্ক: এ বারের যুক্তরাষ্ট্র ওপেন শেষ হল টেনিস বিশ্বকে দুই নতুন চ্যাম্পিয়ন দিয়ে। বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্লামে মহিলাদের সিঙ্গলসের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন পোলিশ সুপারস্টার ইগা স্বোয়াতেক। আর পুরুষদের সিঙ্গলসের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন স্প্যানিশ তরুণ তুর্কি কার্লোস আলকারাজ (Carlos Alcaraz)। প্রথম বার গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে উঠে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতিটাই যে আলাদা, তা বেশ টের পাচ্ছেন কার্লোস। শুধু তাই নয়, এ বারের ইউএস ওপেন (US Open) জিতে রেকর্ডও গড়ে ফেলেছেন কার্লোস। এই গ্র্যান্ড স্লাম জেতার ফলে কার্লোস হয়েছেন কণিষ্ঠতম নতুন এক নম্বর। আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে কার্লোস নরওয়ের ক্যাসপার রুডকে (Casper Ruud) হারিয়েছেন ৬-৪, ২-৬, ৭-৬ (৭-১), ৬-৩। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে এবং কেরিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম হাতে তুলে নিয়ে একটাই কথা বললেন কার্লোস, ‘ক্লান্ত হওয়ার সময় নেই’।
ঠিক কতটা কড়া পরিশ্রম করলে, কতটা পথ পেরিয়ে এলে সাফল্য ধরা দেয়? কার্লোস তা আজ টের পাচ্ছেন। দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করাটা আজ তাঁর কাছে সার্থক বলে মনে হচ্ছে। বছর ১৯ এর কার্লোসের এনার্জি যে ভরপুর, তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। আলকারাজ তাঁর প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনালে পৌঁছানোর পথে টানা তিনটি পাঁচ সেটের ম্যাচে জিতেছিলেন। ফাইনালে যাওয়ার পথে ছয়টি ম্যাচ জুড়ে কোর্টে ২০ ঘণ্টা এবং ১৯ মিনিট সময় কাটিয়েছিলেন। তারপর রুডকে হারানোর পথে ক্লান্তি শব্দটাকে স্রেফ ছুড়ে ফেলে দিলেন কার্লোস। যার প্রমাণটা পাওয়া গেল কোর্টে।
ম্যাচ শেষ হতেই আলকারাজ ছুট্টে যান স্ট্যান্ডে নিজের টিমের কাছে। তাঁর চোখে মুখে ঠিকরে পড়ছিল আবেগের ছাপ। ম্যাচের শেষে তিনি বলেন, “আমি আজকের বিষয়ে বলতে চাই। আজ যেমন আমেরিকার কাছে হতাশার একটা দিন, তেমনই আমার জন্যও দিনটা মনে রাখার মতো। বিশ্বের এক নম্বর হওয়া, গ্র্যান্ড স্লাম জেতা। সবটাই ছেলেবেলা থেকে আমার স্বপ্ন ছিল। কথা বলতে একটু সমস্য়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে আবেগ ধরে রাখা কঠিন আমার পক্ষে। আমার পরিবার, টিম সকলে যে পরিশ্রম করেছে, ওরা অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার ফল আজ আমি পেলাম।”
হাসি-কান্না আর লুকোছাপা করতে পারেননি উনিশের তরুণ তুর্কি কার্লোস। আবেগে ভেসে তিনি বলেন, “মা এখানে নেই। গ্র্যান্ড ফাদারও। ওদের কথা ভাবছিলাম। ওরা আমার ফাইনাল দেখতে পারল না এখানে থেকে। তাই একটু খারাপ লাগছে।” উল্লেখ্য, কার্লোসের ফাইনাল দেখতে আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে হাজির ছিলেন তাঁর বাবা।
ঘুরে ফিরে কার্লোসকে ফের প্রশ্ন করা হয়, “আপনি কি এখন ক্লান্ত?” তখন মুখে চ্যাম্পিয়নের হাসি নিয়ে কার্লোস বললেন, “ম্যাচের আগে যেমন বলেছিলাম, এখনও তাই। ক্লান্ত হওয়ার সময় নেই। অনেক পরিশ্রম করতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে।”