Peng Shuai: ‘যৌন নিগৃহীত কখনও বলিনি’, পেং সুয়াই বিতর্কে নয়া মোড়
পেং সুয়াই (Peng Shuai) নাকি কখনও বলেননি, তিনি যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন। এই প্রথম কোনও খবরের কাগজে মুখ খুললেন চিনা টেনিস (Tennis) প্লেয়ার। আর তাতে বিতর্ক নিয়েছে অন্য মোড়। জন্ম নিয়েছে একাধিক প্রশ্ন।
বেজিং: পেং সুয়াই (Peng Shuai) নাকি কখনও বলেননি, তিনি যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন। এই প্রথম কোনও খবরের কাগজে মুখ খুললেন চিনা টেনিস (Tennis) প্লেয়ার। আর তাতে বিতর্ক নিয়েছে অন্য মোড়। জন্ম নিয়েছে একাধিক প্রশ্ন। সিঙ্গাপুর থেকে প্রকাশিত চিনা ভাষার কাগজ লিয়ানহে জাওবাও-কে কি চাপের মুখে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন পেং? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে এখন বিশ্ব টেনিস।
পেং বলেছেন, ‘একটা জিনিস পরিষ্কার করে দেওয়া দরকার। আমি কখনও বলিনি যে, আমি লিখেছি আমাকে কেউ যৌন নিগ্রহ করেছে। এটা আমি সবার কাছে খোলসা করে দিতে চাই।’
পেং যা দাবি করেছেন, সত্যিই কি তাই? নাকি কোনও চাপের মুখে পড়ে তাঁকে এখন উল্টো দাবি করতে হচ্ছে? ঘটনা হল, ২ নভেম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে পেং লিখেছিলেন, চিনের এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক তাঁর উপর যৌন নিগ্রহ চালাচ্ছে। তারপরই তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে যান। এই ঘটনা টেনিস দুনিয়া তো বটেই, সারা বিশ্বে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিল। আমেরিকা ও চিনের কূটনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল পেং-বিতর্ক। চিনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নতুন নয়। পেং-কাণ্ডের জেরেই শীতকালীন অলিম্পিক থেকে নাম তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আমেরিকা। পশ্চিমি বেশ কিছু দেশ চিনের উপর পাল্টা চাপ তৈরি করার চেষ্টা করে। সরকারি এবং প্রচারমাধ্যমে তরফ তখন থেকেই চিন দাবি করে, পেং ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। তাতেও প্রশ্নের শেষ হয়নি। উমেন্স টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের তরফ দাবি করা হয়, পেংয়ের বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। অবিলম্বে বহির্বিশ্বের সামনে দাঁড় করানো হোক টেনিস প্লেয়ারকে। সত্যি ঘটনাটা তাঁর মুখ থেকেই শুনতে চায় টেনিস দুনিয়া। চিন সে দাবিতে সাড়া দেয়নি। তবে অলিম্পিক সংস্থার প্রেসিডেন্ট টমাস বাখের সঙ্গে বার দুয়েক ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছেন টেনিস তারকা। পেং ভালো আছেন কিনা, সে সন্দেহ অবশ্য ওই আলাপচারিতায় পরিষ্কার হয়নি। পাল্টা চাপ তৈরি করতে ডব্লিউটিএ সমস্ত ধরনের টেনিস বন্ধ করে দেয় চিনে। ওই দেশ যে তীব্র চাপে পড়েছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সেই কারণেই কি পেংয়ের এই সাক্ষাৎকার?
সিঙ্গাপুরের কাগজের যে সাংবাদিক এই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, তিনি একবারও প্রশ্ন করেননি, ২ নভেম্বর পেংয়ের সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই পোস্ট কি ভাবে এল? অ্যাকাউন্ট কি হ্যাক করা হয়েছিল? ৪ ফেব্রুয়ারি বেজিংয়ে শুরু হচ্ছে উইন্টার অলিম্পিক। তারই প্রসার এবং প্রচারের জন্য পেংয়ের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, পেংকে নিয়ে কোনও বিতর্ক তৈরি হয়নি, এই প্রচার চালানোর জন্যই কি এই সাক্ষাৎকার দেওয়া হয়েছে? না, হলে শুধু এই ক’টা শব্দই বা তিনি বলবেন কেন? কেনই বা ওই সাংবাদিক পাল্টা প্রশ্ন করবেন না?
ডাব্লিউটিএ (WTA) তো বটেই, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিও (IOC), পেং কেমন আছেন, তা বিশদে জানে না। তাই পেংয়ের এই সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার পাল্টা বিতর্ক তৈরি করছে। ডাব্লিউটিএ এক বিবৃতিতে কিন্তু তাদের মনোভাব পরিষ্কার করে দিয়েছে। তারা বলেছে, ‘আমরা যে দাবি তুলেছি, সেখানেই দাঁড়িয়ে আছি এখনও। পেংকে নিয়ে স্বচ্ছ এবং সম্পূর্ণ তদন্ত করতে হবে। সেই তদন্তের কোনও কাটছাট যাবে না। পেং যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছিল কিনা, সেটা ও নিজে সারা বিশ্বের সামনে দাঁড়িয়ে বলবে।’