নয়াদিল্লি: পড়াশোনা নাকি খেলাধূলা? ছোটবেলা থেকেই এই দ্বিধার মধ্যে দিয়ে যান অনেকে। এ যেন মন ও মস্তিষ্কের চিরন্তন লড়াই। পড়াশোনাকে ছেড়ে কেউ কেউ খেলাধূলাকে বেছে নেন। সফলও হন। আবার কেউ হারিয়ে যান ব্যর্থতার অন্ধকারে। অনেকে আবার দুই নৌকাতেই খুঁজে পান ভারসাম্য। পঞ্জাবের মেয়ে সিফ্ট কৌর সামরা (Sift Kaur Samra) ডাক্তারি পরীক্ষা (MBBS) ছেড়ে শুটিং বিশ্বকাপে (Shooting World Cup) অংশ নিলেন। শুধু অংশই নিলেন না, দেশের হয়ে ব্রোঞ্জও জিতলেন। মেয়েকে সমর্থন করতে গ্যালারিতে হাজির পরিবারও। এমন ঘটনা কিছুটা হলেও বিরল। কলেজের অনুমতি ছাড়াই শুটিং বিশ্বকাপে অংশ নেন সিফ্ট। এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ছাত্রী পরীক্ষা আর শুটিং বিশ্বকাপের মাঝে রাইফেল হাতে তুলে নেন। সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে সফল সিফ্ট। দেশের জন্য পদক পেয়ে স্বভাবতই গর্বিত ২২ বছরের শুটার। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla-র এই প্রতিবেদনে।
শুটিং বিশ্বকাপের মাঝেই এমবিবিএস প্রথম বর্ষের পরীক্ষা পড়ে যায়। দেশের হয়ে অংশ নিতে কলেজের কাছে আলাদা ভাবে পরীক্ষার ব্যবস্থা করার অনুরোধও জানান সিফ্ট। তাতে আমল দেয়নি কলেজ। উল্টে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাঁর আবেদন মানা হবে না। পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল শুটিং নয়, সিফ্টের উচিত ডাক্তারিতেই মন দেওয়া। শেষ পর্যন্ত শুটিং বিশ্বকাপের মঞ্চকেই বেছে নেন বাইশ বছরের তরুণী। আর সেই মঞ্চে নেমেই সফল। মেয়েদের ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশন ইভেন্টে ব্রোঞ্জ পেলেন সিফ্ট। ব্রোঞ্জ জেতার পর তিনি বলেন, ‘২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকই এখন আমার পাখির চোখ। দেশের হয়ে অলিম্পিকে পদক জিততে চাই। সেই লক্ষ্যেই আমি এখন স্থির।’
পঞ্জাবের ফরিদকোটে জিজিএস মেডিক্যাল কলেজ পড়াশোনা করেন সিফ্ট। আলাদা ভাবে পরীক্ষার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানালে, পরের বছর পুনরায় প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ার পরামর্শ দেয় কলেজ। রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রী কিংবা প্রতিপত্তিশীল ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হয়েও লাভের লাভ হয়নি। পড়াশোনার কারণে গত বছর খেলাধূলা একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু ভোপালে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে রেকর্ড করার পর সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলেন। ডাক্তারি আর শুটিং একই সঙ্গে করার সিদ্ধান্ত নেন সিফ্ট। পড়াশোনা আর খেলাধূলার মাঝে এখন কোনটাকে বেছে নেবেন, তা ঠিক করতে পারছেন না। তবে অলিম্পিকের পরই এমবিবিএস নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে চান সিফ্ট। ডাক্তার হবেন, তার আগে দেশকে পদক দিতে চান পঞ্জাবের মেয়ে।