নিউইয়র্ক: কোভিড ভ্যাকসিনে তাঁর প্রবল অনীহা। এতদিনে গোটা বিশ্ব তা জেনে গিয়েছে। সাধারণ মানুষ যখন করোনা ভ্যাকসিনের ডবল ডোজের পথ পেরিয়ে বুস্টার ডোজের লাইনে, তখনও বিশ্বের প্রাক্তন ১ নম্বর টেনিস তারকা নোভাক জকোভিচ ‘আনভ্যাকসিনেটেড’। বছরের প্রথম থেকে এই সিদ্ধান্তের জেরে ভুগছেন। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে না দেওয়ায় অজি সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পথে নেমেছিলেন। ঝামেলা গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত মুখ চুন করে সার্বিয়া ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। একই কারণের জন্য বছর শেষের গ্র্যান্ড স্ল্যাম যুক্তরাষ্ট্র ওপেনেও (US Open) খেলা হচ্ছে না জকোভিচের (Novak Djokovic)। তাঁকে খেলতে দেওয়ার আবেদন নিয়ে সই সংগ্রহে নেমেছিলেন সমর্থকরা। মার্কিন টেনিস সংস্থার কাছে তাঁদের আবেদন ছিল, বাইডেন সরকারের কাছে বিশেষ অনুমতি নিয়ে খেলতে দেওয়া হোক জকোভিচকে। কিন্তু সেই আবেদনে মিলল না সাড়া। আমেরিকার ট্রাভেল নীতি অনুযায়ী, ভ্যাকসিন না নেওয়া সার্বিয়ান টেনিস তারকার সেদেশে ঢোকার অনুমতি পাবেন না।
গতমাসে লন্ডনে কেরিয়ারের সপ্তম উইম্বলডন জিতেছেন জকোভিচ। গ্র্যান্ড স্লামের নিরিখে পিছনে ফেলে দিয়েছেন কিংবদন্তি রজার ফেডেরারকে। তাঁর সামনে এখন শুধু রাফায়েল নাদাল। ২১টি গ্র্যান্ড স্লামের মালিকের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে খেলা প্রথম থেকেই সংশয়ে ছিল। টিকা না নেওয়া খেলোয়াড়দের ইউ এস ওপেনে খেলার অনুমতি পাবেন না তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল গ্র্যান্ড স্লাম কর্তৃপক্ষ। একদিন আগেই জকোভিচকে বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্লামে খেলতে দেওয়ার দাবি জানিয়ে অনলাইনে সই সংগ্রহে নেমেছিলেন সমর্থকরা। ১২ হাজার মানুষ সেই পিটিশনে সই করেন। অর্থাৎ এত সংখ্যক মানুষ চাইছিলেন ভ্যাকসিন না নিলেও যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে খেলা উচিত নোভাকের। বুধবার একটি বিবৃতি জারি করে নোভাক জকোভিচের নাম উল্লেখ না করেও তার উত্তর দিয়েছে ইউ এস ওপেন কর্তৃপক্ষ। এরই সঙ্গে পুরুষ ও মহিলা সিঙ্গলসের মূল পর্বের খেলোয়াড়দের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে জকোভিচের নাম রাখা হয়েছে নেহাতই লৌকিকতার খাতিরে।
বিবৃতিতে লেখা রয়েছে, “প্রতিযোগিতার প্রথম সোমবারের ৪২ দিন আগে আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশনের গ্র্যান্ড স্লাম রুলবুক অনুযায়ী সমস্ত এলিজেবল খেলোয়াড়রা স্বাভাবিকভাবেই পুরুষ ও মহিলা সিঙ্গলসের মূল পর্বে খেলতে পারবেন।” একই সঙ্গে তারা স্পষ্ট করে দিয়েছে, “ইউ এস ওপেনে খেলার জন্য কোভিড ভ্যাকসিন নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে ভ্যাকসিন না নেওয়া বাইরের নাগরিকদের এদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবস্থানকে সম্মান করে আমাদের সংস্থা।” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া সরকারের এই কড়া নীতির কারণে জকোভিচকে এবার ২০২৩ সালের ফরাসি ওপেনের আগে গ্র্যান্ড স্লামের মঞ্চে দেখতে পাবেন না অনুরাগীরা।