কলকাতা : তিলোত্তমায় পা পড়ল দাবার জগতের বিস্ময় রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দর (Rameshbabu Praggnanandhaa)। সদ্য দাবা বিশ্বকাপের (FIDE World Cup 2023) ফাইনাল খেলে ফিরেছেন। কিংবদন্তি ম্যাগনাস কার্লসেনের বিরুদ্ধে লড়াই শেষে ১৮ বছরের প্রজ্ঞানন্দের হাতে উঠেছে রুপোর পদক। এ বার খেতাবের খুব কাছ থেকে ফিরতে হলেও নিজের উপর বিশ্বাস অটুট। তিনি মনে করেন, দাবা বিশ্বকাপ জেতার ক্ষমতা তাঁর রয়েছে। কলকাতায় এসে সে কথাই জানালেন রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ থেকে ভিসি স্যার, ক্রিকেট থেকে ডায়েট, ডি গুকেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং সর্বোপরী মা নাগলক্ষ্মী— নানা কথা ভাগ করে নিলেন চেন্নাইয়ের গ্র্যান্ডমাস্টার। কলকাতায় আয়োজিত ২০২৩ টাটা স্টিল চেস ইন্ডিয়াতে অংশ নেবেন। হানঝাউ এশিয়ান গেমসের আগে এই শহরেই সারবেন প্রস্তুতি। যার ফাঁকে কলকাতার দাবাপ্রেমীরা প্রজ্ঞানন্দের খেলা দেখতে পারবেন। বিস্তারিত রইল TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
১৮ বছরেই দাবা বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা মুখের কথা নয়। বিশ্বনাথন আনন্দ পেরেছিলেন। দাবার বিস্ময় প্রজ্ঞানন্দও পৌঁছেছেন ফাইনাল পর্যন্ত। প্রতিপক্ষ পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলেও খেলা টেনে নিয়ে যান টাইব্রেকার পর্যন্ত। ফাইনালে ওঠার পথে হারিয়েছেন বিশ্ব ব়্যাঙ্কিংয়ে দুই এবং তিন নম্বরে থাকা দাবাড়ুদের। কম বয়সে এমন সাফল্যের রহস্য কী? প্রজ্ঞানন্দ জানিয়েছেন, বিশ্বনাথন আনন্দের থেকে অনুপ্রেরণা পান। আর মানসিক দৃঢ়তার জন্য শারীরিক সুস্থতার প্রয়োজন। যার জন্য যোগা, মেডিটেশনের উপর ভরসা রাখেন প্রজ্ঞা। তবে সাফল্যে সবচেয়ে বড় কারণ হল মায়ের হাতের তৈরি খাবার। যে কোনও প্রতিযোগিতায় নামার আগে ভারতীয় খাবার পছন্দ তাঁর। বিশেষ করে মায়ের হাতের তৈরি। প্রতিটি টুর্নামেন্টেই ইন্ডাকশন কুকার নিয়ে যান প্রজ্ঞানন্দের মা নাগলক্ষ্মী। মা-ই যে তাঁর প্রধান স্তম্ভ, জানাতে ভোলেননি চ্যাম্পিয়ন দাবাড়ু। রিল্যাক্স থাকার জন্য সিনেমাও দেখেন। তবে ভিডিয়ো গেম একেবারেই না পসন্দ।
বাবা-মাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে দেখা করে এসেছেন। কী কথা হল তাঁর সঙ্গে? প্রজ্ঞানন্দ বলেন, “আমার ট্রেনিংয়ে ব্যাপারে উনি জানতে চেয়েছিলেন। আমার পরিবার ও বাবার কাজের বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন।” তবে বিশ্বনাথন আনন্দের সঙ্গে দাবার চেয়ে অন্যান্য বিষয়েই বেশি কথা হয় তাঁর।
দাবার বাইরে অন্য কোন খেলা পছন্দ? আর পাঁচজন ভারতীয় মতোই ক্রিকেট ভালোবাসেন প্রজ্ঞানন্দ। সব ক্রিকেটাররাই কমবেশি পছন্দে তাঁর। তবে বিশেষ একজনের কথা জিজ্ঞেস করলে, নিজের শহরের রবিচন্দ্রন অশ্বিনের নাম নিলেন দাবাড়ু। টুর্নামেন্টের আগে মনে কোনওরকম প্রত্যাশা রাখেন না। চাপ নেওয়ার অভ্যেস নেই। নিজের প্রতি অটুট বিশ্বাস। এগুলোই অন্যদের থেকে আলাদা করে প্রজ্ঞানন্দকে।