লন্ডন: বিদায়ের মঞ্চ ছিল প্রস্তুত। আগে থেকেই সবকিছু নির্ধারিত ছিল। তারপরও রজার ফেডেরারের (Roger Federer) বিদায়বেলায় ভারাক্রান্ত সকলের হৃদয়। আর এটাই তো স্বাভাবিক। কিংবদন্তিরা যখনই অবসর নেন, এমনটা হয়। শেষটা আরও উজ্জ্বল হত, যদি তিনি কেরিয়ারের শেষ ম্যাচটা জিততে পারতেন। সেটা হল না। সাফল্যে মোড়া সুদীর্ঘ কেরিয়ারের শেষ ম্যাচটা জিতে কোর্ট ছাড়তে পারলেন না ফেডেরার। শেষবারের মতো ফেডেক্স কোর্টে নেমেছিলেন তাঁর চির প্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালের (Rafael Nadal) সঙ্গে। চোখের জল আর বাঁধ মানল না। অঝোরে কাঁদলেন ফেডেক্স, কাঁদিয়ে গেলেন বড় শত্রু, পরম বন্ধু নাদালকেও। লেভার কাপে (Laver Cup) শুক্রবার গভীর রাতে পুরুষদের ডাবলসে নাদালের সঙ্গে জুটিতে নেমেছিলেন ফেডেরার। প্রতিপক্ষ ছিল আমেরিকার জ্যাক সক ও ফ্রান্সেস তিয়াফো। ম্যাচের ফল ৪-৬, ৭-৬ (৭/২), ১১-৯ জ্যাক-তিয়াফো জুটির পক্ষে।
An unforgettable night.#LaverCup pic.twitter.com/VDbRdCOsOs
— Laver Cup (@LaverCup) September 24, 2022
কোন ক্রীড়াবিদ কেরিয়ারের শেষ ম্যাচে হেরে যেতে চায় বলুন তো? কেউ চান না। কিংবদন্তি ডন ব্র্যাডম্যান কেরিয়ারের শেষ ম্যাচে কি চেয়েছিলেন শূন্যে আউট হতে? নিশ্চিতভাবেই না। বিদায়ী টেস্টে মাত্র ৪ রান করলেই লাল বলের ফর্ম্যাটে গড় ১০০তে পৌঁছে যেতে পারতেন অজি কিংবদন্তি। কিন্তু তা হয়নি। ৯৯.৯৪ গড়ে থেমে যায় ব্র্যাডম্যানের ব্যাট। কেরিয়ারের শেষ টেস্টে ২ বল খেলে এরিক হলিসের বলে আউট হয়ে যান। তাঁর নামের পাশে ছিল শূন্য। সাফল্যে মোড়া কেরিয়ার হলেও, শেষ অবধি শূন্য নিয়েই বিদায়ী ম্যাচ থেকে ফিরেছিলেন তিনি।
এ বার যদি বিশ্বের দ্রুততম মানব উসেইন বোল্টকে দেখেন, সেখানেও চোখে পড়বে অঝোরে কেঁদে ট্র্যাককে বিদায় জানিয়েছিলেন বোল্ট। জীবনের শেষ দৌড়টা তিনি নিশ্চই চেয়েছিলেন চিরস্মরণীয় করে রাখতে। পারেননি। ট্র্যাকে শুয়েই যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন। আর ট্র্যাক ছাড়েন সতীর্থদের কাঁধে ভর করে। হঠাৎ করে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছিলেন বোল্ট। যার ফলে ২০১৭ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ৪x১০০ মিটার রিলের শেষ ল্যাপটা বোল্ট শেষই করতে পারেননি। চোখের জলে ট্র্যাককে বিদায় জানিয়েছিলেন। আজ ফেডেরারও শেষ ম্যাচে কেঁদে কোর্ট ছাড়লেন। আর এভাবেই ডন ব্র্যাডম্যান, উসেইন বোল্ট ও রজার ফেডেরার বসলেন একাসনে।