লন্ডন: প্রথম রাউন্ডে তাঁকে স্ট্রেট সেটে জিততে দেখে কি টেনিস দুনিয়া চমকে গিয়েছে? উত্তর হবে, না! তা হলে রায়ান পেনিস্টনকে (Ryan Peniston) নিয়ে এত হইচই কেন? বিরল ক্যান্সারকে হারিয়ে উইম্বলডনের (Wimbledon) মতো গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টে নামার মতো আশ্চর্য কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন তিনি। একটা সময় মনে হয়েছিল, হেরেই যাবেন ক্যান্সারের কাছে। হয়তো হারিয়েই যাবে তাঁর স্বপ্ন। কে জানত, স্রেফ মনের জোর দিয়েই তিনি জিতে যাবেন! ইতিহাস তৈরি করে ফেলবেন। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়াই করছেন অদম্য, তাঁদের প্রেরণা হয়ে উঠবেন পেনিস্টন। উইম্বলডনে এই প্রথম অভিষেক হল তাঁর। আর প্রথম রাউন্ডেই বিশ্বের ৯৫তম টেনিস প্লেয়ার হেনরি লাকসোনেনকে হারিয়ে উঠে পড়েছেন দ্বিতীয় রাউন্ডে।
ব়্যাবডোমায়োসারকোমা কী? সোজা কথায় বিরল ক্যান্সার। এই রোগ যাঁদের হয়, তাঁদের শারীরিক বিকাশ হয় না। কিশোর অবস্থা থেকেই বোঝা যায় এই রোগ। এতে শরীরের মাপজোকের কোনও বদল হয় না। পেনিস্টন এই রকম বিরল রোগের শিকার হয়েছিলেন। ব়্যাবডোমায়োসারকোমার কবলে পড়ে নিজেক ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছিলেন গ্রেট ব্রিটেনের টেনিস প্লেয়ার। সেখান থেকে শুধু আশ্চর্য ফিরেই আসেননি, নিজেকে সাফল্যের শিখরেও নিয়ে যাচ্ছেন।
নিজের কিশোরবেলা এখনও ভুলতে পারেননি পেনিস্টন। প্রথম রাউন্ডে জেতার পর বলেছেন, ‘১৫, ১৬ বছরের আগে পর্যন্ত আমার শারীরিক বিকাশই ছিল না। আমার বন্ধুদের থেকে এক ফুট কম উচ্চতা ছিল। বন্ধুরা সবাই ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছিল। স্বাভাবিক জীবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। ওই সময় ওদের যা করা উচিত, তাই করত। কিন্তু আমি রয়ে গিয়েছিল একই রকম। কোনও উন্নতিই ছিল না। ওই সময়টা আমার কাছে খুব কঠিন ছিল। নেটের উল্টো দিকে বল ফেরত পাঠানোর জন্য লড়াই করতে হত। প্রচুর দৌড়তে হত। প্লেয়ার হিসেবে যেমন কঠিন ছিল আমার কাছে, তেমনই মানুষ হিসেবে আরও কঠিন ছিল ওই সময়টা।’
Pure joy! ?
On his Grand Slam debut, Ryan Peniston reaches the second round with a 6-4, 6-3, 6-2 win against Henri Laaksonen#Wimbledon pic.twitter.com/ovykjhcS5H
— Wimbledon (@Wimbledon) June 28, 2022
পেনিস্টনের কথা ধরলে তাঁর জীবনটাই শুরু হয়েছিল ১৬ বছর বয়স থেকে। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে এগিয়ে উইম্বলডনের বৃত্তে ঢুকে পড়েছেন পেনিস্টন। ২৭ বছর বয়স এখন তাঁর। ১১ বছর সময় লেগেছে স্বপ্নপূরণের জন্য। কিছু দিন আগে কুইন্সের ওপেনিং রাউন্ডে ক্যাসপার রুডকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিলেন পেনিস্টন। তার পরই উইম্বলডনে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন তিনি।
ছেলেবেলায় ফিরে গিয়ে পেনিস্টন বলেছেন, ‘আমার যখন এক বছর বয়স, তখন এই ব়্যাবডোমায়োসারকোমা রোগটা ধরা পড়ে। নিয়মিত হাসপাতালে যাওয়া শুরু হয়। কেমোথেরাপি চলে বেশ কিছুদিন। তারপর একটা বড়সড় অস্ত্রোপচারও হয়। প্রায় ১৮ মাসের ধকল ছিল ওটা। জীবনের শুরুটা যে অসম্ভব কঠিন ছিল, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ওই সময়কার অনেক কিছুই আমার মনে নেই। কিন্তু আমার বাবা-মা, দাদাদের সব মনে আছে।’