চেন্নাই : ভারতের দাবার রাজধানী বলা হয় চেন্নাইকে (Chennai)। এই শহরটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দাবার রঙিন ইতিহাস। দেশের ৮৩ জন গ্র্যান্ডমাস্টারের মধ্যে ২৯ জনই তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। ১৮ বছরেই বিশ্বকে চমকে দেওয়া দাবাড়ু আর প্রজ্ঞানন্দের উত্থান এই দাবার আঁতুড়ঘরে। আর সেই ২৯ জনের মধ্যে ১৫ জন দাবাড়ুর (Chess) চৌষট্টি খোপের জগতে পথচলা শুরু মোগাপ্পেয়ারের স্কুল ভেলাম্মাল বিদ্যালয় থেকে। ভারতের দাবাড়ু তৈরির ফ্যাক্টরি বলা হয় ভেলাম্মাল বিদ্যালয়কে। যে স্কুল এখন তাঁদের দুই ছাত্র, ভারতীয় দাবার দুই প্রডিজি রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ এবং ডি গুকেশকে স্বাগত জানাতে তৈরি। সম্প্রতি শেষ হওয়া FIDE দাবা বিশ্বকাপের ফাইনালে রানার্স হয়েছেন প্রজ্ঞানন্দ (R Praggnanandhaa)। ফাইনালে বিশ্বের এক নম্বর দাবাড়ু ম্যাগনাস কার্লসেনের সঙ্গে লড়াই চলেছে তাঁর। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও দেশবাসীর হৃদয় জিতেছেন প্রজ্ঞানন্দ। বিশ্বনাথন আনন্দের পর দাবা বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা দ্বিতীয় ভারতীয় হলেন প্রজ্ঞা। সতীর্থ ডি গুকেশ দাবা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন। বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
চেন্নাইয়ের অভিভাবকরা যদি দেখেন ছেলেমেয়েদের মধ্যে দাবার প্রতি উৎসাহ রয়েছে তাহলে সন্তানকে নিয়ে তাঁরা পৌঁছে যান মোগাপ্পেয়ারের স্কুল ভেলাম্মাল বিদ্যালয়ের গেটে। এটাই যেন অলিখিত নিয়ম হয়ে গিয়েছে। এমনিতে চেন্নাইয়ের বেশিরভাগ স্কুলেই এখন দাবা একস্ট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটির মধ্যে পড়ে। স্কুলগুলিকে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। ২০১৩ সালে চেন্নাইয়ে আয়োজিত হয়েছিল বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ। যেখানে বিশ্বনাথন আনন্দ, ম্যাগনাস কার্লসেনরা অংশ নিয়েছিলেন। তার পরপরই ‘সেভেন টু সেভেন্টিন’ প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রতিটি স্টুডেন্টকে দাবায় কোচিং করানো হত। সেই সময় অল ইন্ডিয়া চেস ফেডারেশনের সেক্রেটারি এবং FIDE-র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডিভি সুন্দর।
ভেলাম্মাল স্কুলে প্রতিবছর কম করে এক হাজার জন ছাত্রছাত্রী দাবার কোচিংয়ের জন্য ভর্তি হন। যে স্কুলের ফিস নামমাত্র। বছরে ২ হাজার টাকা। গত পাঁচ বছর ধরে ভেলাম্মাল ওয়ার্ল্ড স্কুল চেস চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে আসছে। এই স্কুল সারা ভারতকে দেখিয়ে দিয়েছে যে দাবা ও পড়াশোনা দুটোই হত ধরাধরি করে সমানভাবে যেতে পারে। প্রজ্ঞানন্দ এবং ডি গুকেশ ছাড়া ভেলাম্মাল স্কুলের অন্যান্য গ্র্যান্ডমাস্টাররা হলেন বি আধিবান, এসপি সেথুরামান, কে প্রিয়দর্শন, শ্যাম সুন্দর, এনআর বিশাখ, কার্তিকেয়ন মুরলি, অর্জুন কল্যাণ এবং আরও অনেকে।