কলকাতা : ছোট থেকেই রোগাসোগা চেহারা। শারীরিকভাবে বেশি দৌড়ঝাঁপ করতে হয় এমন খেলা পছন্দ ছিল না অদিতি স্বামীর (Aditi Swami)। অথচ বাবা গোপীচাঁদ অঙ্কের শিক্ষক হওয়ার পাশাপাশি খেলাধুলো ভীষণ ভালোবাসেন। মেয়েকে খেলোয়াড় তৈরি করবেন বলে মনস্থির করে ফেলেছিলেন অনেক আগেই। গ্রাম থেকে শহরে চলে যান অদিতিকে খেলোয়াড় তৈরি করবেন বলে। কিন্তু কোন খেলা? বাড়ির কাছেই ফুটবল স্টেডিয়ামে মেয়েকে নিয়ে যান গোপীচাঁদ স্বামী। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা হুড়োহুড়ি করে ফুটবল খেলছে। কিন্তু অদিতির সেদিকে মন নেই। তার চোখ চলে যায় স্টেডিয়ামের এক কোণে। কয়েকটি ছেলে মেয়ের হাতে তির ধনুক। অদিতি গোপীচাঁদ স্বামী সেদিনই ঠিক নেয় সে তিরন্দাজ হবে। লক্ষ্যস্থির হওয়ার পর সেই লক্ষ্য ভেদের জন্য শুরু হয় বাবা মেয়ের সংগ্রাম। তিরন্দাজিতে বিশ্বের সবচেয়ে কনিষ্ঠ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে মহারাষ্ট্রের অদিতি স্বামী পরিশ্রমের সাফল্য পেয়েছে। বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
অদিতির বাবা সরকারি স্কুলে গণিতের শিক্ষক এবং মেয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তাও মাত্র ১৭ বছর বয়সে। জার্মানির বার্লিনে ওয়ার্ল্ড আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক জিতেছে অদিতি। দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্চার আন্দ্রেয়া বেকেরাকে হারিয়ে এই অবস্থান অর্জন করে সে। মাত্র দুই মাস আগে জুনিয়র বিভাগে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের খেতাব জেতে অদিতি। ১৯৩১ সালে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে ভারত প্রথম বারের মতো এই চ্যাম্পিয়নশিপের সোনার পদক জিতেছে। এ পর্যন্ত যাত্রাটা অদিতির জন্য সহজ ছিল না। আখ ক্ষেতে নির্মিত অ্যাকাডেমি থেকে বেরিয়ে সোনা জিতে সফল হয়েছেন মহারাষ্ট্রের সাতারার মেয়ে।
অদিতির তীরন্দাজ হয়ে ওঠার গল্পে অক্লান্ত পরিশ্রম রয়েছে। হাল না ছাড়া মনোভাব রয়েছে। মেয়ে বড় তিরন্দাজ হতে পারে। এই ভাবনা মাথায় নিয়ে অদিতির পরিবার গ্রাম ছেড়ে সাতারা শহরে এসে থাকতে শুরু করে। সেখানে তার বাবা গোপীচাঁদ গণিতের শিক্ষকের চাকরি পান। গোপীচাঁদ খেলাধুলার প্রতি খুবই অনুরক্ত। মেয়ে যেন অন্তত একটি খেলায় সফল হয় তারই চেষ্টা করেছিলেন গোপীচাঁদ। মাত্র ১৭ বছরেই মেয়ে তাঁর স্বপ্ন পূরণ করেছে। সামনে অনেকটা পথ বাকি। বিশ্ব মঞ্চে অদিতি আরও অনেকবার দেশবাসীর মাথা উঁচু করবে, এটাই প্রার্থনা তাঁর।