প্রতিটা বছরেই এ দেশে গাড়ির দাম বেড়ে চলেছে। 2022 সালের মাঝামাঝি সময়। এর মধ্যেই টাটা মোটরস থেকে শুরু করে মারুতি সুজ়ুকি, হুন্ডাই, কিয়া, টয়োটা এবং এমজি মোটর তাদের গাড়ির দাম বাড়িয়েছে। এদিকে গাড়ি দাম যেখানে মাত্রা বেড়েই চলেছে, সেখানে ক্রেতাদের আজও যুঝতে হচ্ছে ইন্টারেস্ট বাড়ার হার, জ্বালানির দর বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। এমনই একটা সংকটজনক অবস্থায় শোরুমে নতুন গাড়ি কিনতে গিয়েও ফিরে আসছে অনেকে। যাই বলুন আর তাই বলুন, পকেটে টাকা থাকলেই যে গাড়ি কিনতে পারবেন, এমনটা নয়। পকেটে বিরাট টাকা না থাকলেও আপনি গাড়ি কিনতে পারেন। তবে তার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন প্ল্যানিং। একটা গাড়ি ক্রয় করার ক্ষেত্রে একাধিক বিষয় কাজ করে। প্রস্তুতিটা যদি ভাল ভাবে সেরে ফেলতে পারেন, তাহলে আর নতুন গাড়ি (New Car) কিনতে গিয়ে আপনার পকেট পুড়ে যাওয়ার কথা নয়। তাই গাড়ির কেনার আগে অত্যন্ত জরুরি এই বিষয়গুলি (Buying Guide) একবার দেখে নিন।
গাড়ির ঋণ নেওয়ার বিষয়টি ভাল করে গণনা এবং সুরক্ষিত করুন
গাড়ি কেনার আগে যে কাজটা সেরে ফেলতে হবে তা হল, ঋণের সামগ্রিক পরিমাণটা ভাল করে ক্যালকুলেট করে নেওয়া। আর সেই মোতাবেক ঠিক করে নিতে হবে, আপনার সামর্থ্যে তা কুলিয়ে উঠছে কি না। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন, গাড়ির EMI-এর পরিমাণ যেন ক্রেতার টেক-হোম স্যালারির 10% হয়। আর সেই ঋণ পরিশোধের সময়সীমা যেন 60 মাস বা 5 বছর। এখন যদি একটা ব্যবহৃত গাড়ি বা সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি ক্রয় করেন, তাহলে তার ঋণ পরিশোধের সময়সীমা 36 মাস হলেই ভাল। তবে প্রি-অ্যাপ্রুভড লোন আপনাকে গাড়ির ডিলারের সঙ্গে ভাল করে নেগোশিয়েট করার সুযোগ দেবে।
গাড়ির মালিকানার খরচ ক্যালকুলেট করা
একটা গাড়ি কিনে নিলেন, তাহলেই হল না। কারণ, তার বাইরেও থাকে অনেক খরচ। তার মধ্যে সবথেকে বড় হল, সেই গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ। তার উপরে আবার রয়েছে জ্বালানি, বীমা, রেজিস্ট্রেশন , করের বোঝা এবং তারপরে স্টিকারের খরচ। গাড়ি ক্রয় করার বাজেট সেটিংয়ের ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এগুলিই। এছাড়াও আর কয়েকটি জরুরি বিষয়ের মধ্যে রয়েছে গাড়ির পিছনে তার মালিকের প্রতি মাসে খরচ, ঋণ পরিশোধ, যা কখনই মাসের শেষে ক্রেতার হাতে পাওয়া বেতনের 20%-এর থেকে বেশি না হয়।
সঠিক গাড়ি বাছতে হবে
ভাবের জগতে ভেসে বা এ কিনছে, সে কিনছে এসব দেখে গাড়ির কেনার কোনও মানে হয় না। ব্যবহারযোগ্যতা এবং সর্বোপরি কার্যকারিতা দেখে একটা গাড়ি কেনা উচিৎ। বাস্তবের কথা না ভেবে অনেকে কেবল লুক ও অ্যাপিলের কথা মাথায় রেখে হুট করে একটা লাগজ়ারি গাড়ি কিনে বসেন। গাড়ি কিনলে আপনাকে আগে ভাবতে হবে আপনার দৈনন্দিন চাহিদা সম্পর্কে। ট্রান্সমিশন, ফুয়েল অপশন – এসব বিষয় ভাল ভাবে যাচাই করে নিতে হবে। সবার পছন্দ আলাদা থাকে। তাই এর-তার দেখে সেরকমই একটা গাড়ি কিনতে যাবেন না।
একবার অবশ্যই টেস্ট ড্রাইভ
যে গাড়িটা ভাল বুঝছেন, তার টেস্ট ড্রাইভও করে নিন। যদিও একবার টেস্ট ড্রাইভ সেই গাড়ির খুঁটিনাটি বুঝতে আপনাকে খুব একটা সাহায্য করবে না। তাই, একাধিক বার টেস্ট ড্রাইভ নিন। আর সেই টেস্ট ড্রাইভে সন্তুষ্ট হলেই তবে গাড়িটা কিনুন।