AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Electric Car: নিজের হাতে ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরি করলেন কেরালার ৬৭ বছরের অ্যান্টনি, ৫ টাকায় দৌড়বে ৬০ কিলোমিটার

Kerala Man Made EV At Home: একটা ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরি করে ফেললেন কেরালার ৬৭ বছরের এক ব্যক্তি। সেই বৈদ্যুতিক গাড়িটি একবার চার্জ দিলে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারবে এবং সর্বোচ্চ ২৫ কিলোমিটার স্পিডও দিতে পারবে গাড়ি।

Electric Car: নিজের হাতে ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরি করলেন কেরালার ৬৭ বছরের অ্যান্টনি, ৫ টাকায় দৌড়বে ৬০ কিলোমিটার
অ্যান্টনি জন ও তার হাতে তৈরি ইলেকট্রিক গাড়ি।
| Edited By: | Updated on: Apr 12, 2022 | 5:56 AM
Share

দেশে ইলেকট্রিক গাড়ির (Electric Vehicle) জনপ্রিয়তা ঊর্ধ্বগগনে। প্রায় প্রতিদিনই এক প্রকার নিয়ম করে ভারতে লঞ্চ হচ্ছে ইলেকট্রিক স্কুটার বা বাইক। বিদ্যুচ্চালিত চারচাকা গাড়ি একটু কম লঞ্চ হলেও এই ই-স্কুটারের দৌড়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই। আর এই সব মিলিয়েই দেশের ইলেকট্রিক গতিশীলতার ভবিষ্যৎ একটা আশাব্যঞ্জক দিকেই এগিয়ে চলেছে। একাধিক স্টার্টআপ সংস্থা ভারতে তৈরি হয়েছে, যারা নিজেদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে ইলেকট্রিক দু’চাকা গাড়ি প্রস্তুত করছে, রিমুভেবল বা সোয়্যাপেবল ব্যাটারির স্কুটার নিয়ে এসেছে এবং সেই সঙ্গেই লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির বিকল্প খোঁজারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সর্বক্ষণ। আবার চার চাকা ইলেকট্রিক গাড়ির ক্ষেত্রে টাটা, এমজি মোটরের মতো সংস্থাও এই স্পেসে নিজেদের নাম লিখিয়েছে। এবার কেরালার (Kerala) এক ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি দৈনন্দিন প্রয়োজনার্থে নিজের হাতেই বানিয়ে ফেললেন একটা ইলেকট্রিক গাড়ি। একবার চার্জ দিলে গাড়িটি ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত দৌড়তে পারবে। আর তাতে খরচ হবে মাত্র ৫ টাকা। বিশ্বাস হচ্ছে না তাই তো, তাহলে পুরো ঘটনাটা একবার জেনে নিন।

কী ভাবে এল এই ভাবনা

ভিলেজ বার্তা তাদের ইউটিউব চ্যানেলে এই ভিডিয়োটি শেয়ার করেছে। ভিডিয়োতে তুলে ধরা হয়েছে কেরালার কোল্লাম জেলার ৬৭ বছরের অ্যান্টটি জনের কাহিনি, যিনি নিজের জন্যই এই অবাক করা ইলেকট্রিক গাড়িটি তৈরি করেছেন। অ্যান্টনি জন একজন কেরিয়ার কনসালটেন্ট। তাঁর বাড়ি থেকে অফিসের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। রোজ যাতায়াতের জন্য এতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করে আসছিলেন একটি ইলেকট্রিক স্কুটার। কিন্তু বয়স যে বাড়ছে, আর ৭০-এর দোরগোড়ায় এসে রোজ স্কুটার নিয়ে যাতায়াত করাটা যথেষ্ট ঝক্কির, সে কথাটা ভালই উপলব্ধি করেছিলেন অ্যান্টনি। নিজের জন্য এমন একটা গাড়ি চেয়েছিলেন, যা রোদ, জল, ঝড় থেকে বাঁচাতে পারে আবার বিন্দুমাত্র পরিবেশ দূষণও যেন না করতে পারে। একটা ইলেকট্রিক চার চাকা গাড়িই কিনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাদের যে এই মুহূর্তে আকাশছোঁয়া দাম। সেখান থেকেই অ্যান্টনি জনের মাথায় নতুন কিছু তৈরি করার ভাবনা জাগে।

যেমন ভাবনা, তেমন কাজ

২০১৮ সালেই অ্যান্টনি জন ভেবেছিলেন একটা ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরি করবেন। শুরু হয় গবেষণার কাজ। কী ভাবে ডিজ়াইন করা যায় এবং তার থেকেও বড় কথা হল, গাড়িটির ইলেকট্রিক পার্টের বাস্তবায়ন কী ভাবে সম্ভবপর করা যায়। গাড়ির বডি তৈরির জন্য যোগাযোগ করেন একটি গ্যারাজের সঙ্গে, যারা নিয়মিত বাসের বডি তৈরি করে থাকে। অনলাইনে খুঁজে পাওয়ার পর অ্যান্টনি তার ইলেকট্রিক গাড়ির বডির ডিজ়াইনটি তুলে দেন গ্যারাজ কর্তৃপক্ষের কাছে। সেই মোতাবেক গাড়িটির বডিও তৈরি করে ফেলে ওই গ্যারাজের কর্মীরা। খুব ছোট্ট একটা গাড়ি তৈরি হয়, যেখানে দুজন প্রাপ্তবয়স্কই বসতে পারেন। গাড়িটির পিছনেও একটি সিট রয়েছে, তবে তাতে কেবল মাত্র একটি বাচ্চাই বসতে পারে বা কোনও জিনিসপত্র রাখা যেতে পারে। অ্যান্টনি জানিয়েছেন যে, এই গাড়ির বডি গ্যারাজ তৈরি করলেও গাড়িটির ইলেকট্রিক পার্ট সম্পূর্ণ ভাবে তাঁরই হাতে তৈরি।

নিজের হাতেই গাড়িটি ইলেকট্রিক করে তুললেন

দিল্লির একটি ভেন্ডরের কাছ থেকে ব্যাটারি, মোটর এবং ওয়্যারিংয়ের জিনিসপত্র জোগাড় করেছিলেন অ্যান্টনি জন। আর তা দিয়েই ২০১৮ সালেই গাড়িটির কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু কোভিড অতিমারির কারণে তা পিছিয়ে যায়। যেহেতু অ্যান্টনি আগে কখনও ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরি করেননি, তাই একাধিক ভুলচুকও হয়েছিল, ত্রুটি দেখা গিয়েছিল তাঁর তৈরি গাড়িতে। ব্যাটারির ক্ষমতা সম্পর্কে ভুল হিসেব করেছিলেন তিনি, যে কারণে গাড়িটি তাঁর প্রত্যাশা মতো ড্রাইভিং রেঞ্জ দিচ্ছিল না। যেই একবার কোভিড লকডাউন উঠে যায় এবং সমস্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়, তিনি চলে যান দিল্লিতে। সেখান থেকে ওই ভেন্ডরের কাছে আরও বড় ক্যাপাসিটির ব্যাটারি নিয়ে আসেন।

মাত্র ৫ টাকায় ৬০ কিলোমিটার

লকডাউনের পরে গাড়িতে নতুন ব্যাটারি লাগানোর পরে অ্যান্টনি লক্ষ্য করেন যে, তাঁর হাতে তৈরি ইলেকট্রিক গাড়িটি সর্বাধিক ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত রেঞ্জ দিতে পারছে। অর্থাৎ একবার চার্জ দিলে তা ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারছে। আর তাতে তাঁর কাজও হয়ে যাচ্ছিল। কারণ, বাড়ি থেকে অফিস এবং অফিস থেকে বাড়ি আসতে তাঁকে ৬০ কিলোমিটার যাতায়াত করতে হত। আর একবার বাড়িতে সম্পূর্ণ রূপে গাড়িটি চার্জ করতে তাঁকে মাত্র ৫ টাকা খরচ হয়।

গাড়িতে কী কী রয়েছে

রোজ অফিসে যাওয়ার কাজটি মাত্র ৫ টাকার ইলেকট্রিক বিল খরচ করেই হয়ে যাচ্ছিল অ্যান্টনি জনের। নিজের এই আবিষ্কার নিয়ে খুব গর্বিতও তিনি। অ্যান্টনির কথায়, “এই ইলেকট্রিক গাড়িটি কেবল আমিই ব্যবহার করি। পরিবারের সঙ্গে অন্য কোথাও বেড়াতে গেলে আমার একটা অল্টো গাড়ি রয়েছে, সেটা নিয়ে যাই।” গাড়িটির এক্সটিরিয়র ডিজ়াইন খুব সাধারণ, সাদামাটা। ইন্টিরিয়রে রয়েছে, বেঞ্চ সিট, স্টিয়ারিং, অ্যাক্সিলারেটর, এবং একটি ব্রেক প্যাডেল। গাড়িটি খুবই ছোট, যে কোনও রাস্তায় যেতে পারে। এমন রাস্তাতেও এই গাড়ি যেতে পারে, যেখানে সাধারণ গাড়ি ঢুকতেও পারবে না।

এই ধরনের গাড়ি কি দেশে আইনি

অ্যান্টনি জনের দ্বারা তৈরি এই ইলেকট্রিক গাড়িটির পাওয়ার রেটিং খুবই কম। গাড়িটির সর্বাধিক স্পিড ২৫ কিলোমিটারেরও কম। আর এই ধরনের গাড়ির ক্ষেত্রে কোনও রেজিস্ট্রেশন প্লেট লাগে না। তবে হ্যাঁ, ড্রাইভারের অতি অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। অ্যান্টনি জানিয়েছেন যে, সমগ্র প্রজেক্টটি তৈরি করতে তাঁর খরচ হয়েছে ৪.৫ লাখ টাকা। এই মুহূর্তে তিনি আরও একটি ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছেন।

আরও পড়ুন: কুইড, ডাস্টার-সহ রেনোর একাধিক গাড়িতে ১.১১ লাখ টাকা ছাড়, দেরি করলেই বড় সুযোগ হাতছাড়া!

আরও পড়ুন: ইলেকট্রিক সাইকেল কিনলেই ১৫,০০০ টাকা ছাড়, বড় ঘোষণা এই রাজ্য সরকারের

আরও পড়ুন: অনেক হল ওয়ার্ক ফ্রম হোম, কর্মীদের অফিসে ফেরাতে বিনামূল্যে ইলেকট্রিক স্কুটার দিচ্ছে গুগল